ভূমিকা بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ اَلْحَمْدُ لِهِْٰ الَّذِى اَنْزَلَ قُرْأٰنًا عَرَبِيًّا وَهَدَانَا صِرَاطًا سَوِيًّا وَالصَّلَاةُ وَالسَّلَاُم عَلىٰ سَيِّدِنَا وَمَوْلَانَا مُحَمَّدِ الَّذِىْ بَعَثَ رَسُوْلًا نَبِيًّا وَعَلٰى اٰلِه وَصَحْبِه الَّذِيْنَ سَلَكُوْا طَرِيْقًا مَرْضِيًّا ـ اَمَّا بَعْدُ সকল ধর্মপ্রাণ ও মুসলিম মনীষীদের নিকট একথা স্বীকৃত যে, মুসলমানরা যতদিন পর্যন্ত ধর্মীয় শিক্ষা সম্পর্কে অজ্ঞ থাকবে, কোনো চেষ্টাই তাদের জন্য সুফলদায়ক হতে পারে না। কিন্তু দুঃখের বিষয়, মুসলমানরা এদিকে ভ্রক্ষেপ করছে না, বরং না বুঝে ও হীনমন্যতার কারণে আরবি ভাষার প্রতি (যা ধর্মীয় শিক্ষা লাভের একমাত্র উপায়) জটিল হওয়ার অভিযোগ উত্থাপন করছে। পরিতাপের বিষয় হলো, যেসব ভাষা পার্থিব কাজকর্মের সহায়ক হয় তা শিখতে যত কঠিনই হয়, তাতে তারা কখনই পিছু হটে না। বরং সফলতার উচ্চ শিখরে পৌঁছা পর্যন্ত আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যায়। কিন্তু যে আরবি একটি ধর্মীয় ভাষা এবং যা ব্যতীত কুরআন মাজিদের বিধি-বিধান সম্পর্কে অবগত হওয়া সম্ভব নয়, তা অর্জন করার জন্য তারা জীবনের সমান্য সময়ও ব্যয় করতে চায় না। বড়ই আফসোসের বিষয় যে, সারাজীবন নামায আদায়কারীরাও নামাজের মধ্যে যা পাঠ করছে তার অর্থ কি? বুঝে না, অথচ পার্থিব কাজ-কারবার পরিচালনার জন্য ইংরেজি, হিন্দী, মারাঠী, গুজরাটী ভাষা প্রয়োজন হলে তা অবশ্যই আয়ত্ত করে। কিন্তু আরবি ভাষা থেকে এমনভাবে তারা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে যে, সারা জীবনে একটি কুরআনের আয়াতেরও শুদ্ধ অনুবাদ শিখে না। এ অলসতা ও অমনোযোগিতার কারণে ধীরে ধীরে মূর্খতা ও অজ্ঞতা বেড়েই চলছে, যা বলার অপেক্ষা রাখে না। এমন দুঃখজনক অবস্থা দেখে আমি অধম এ পুস্তিকা رَوْضَةُ الْاَدَبِ فِىْ تَسْهِيْلِ كَلَامِ الْعَرَبِ অত্যন্ত পরিশ্রম করে প্রণয়ন করেছি এবং এর পাঠসমূহ এমন সহজ পদ্ধতিতে বিন্যাস করেছি যে, যিনি সরফ ও নাহু আয়ত্ত না করেও এ পুস্তিকা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ভালোভাবে বুঝে পড়ে নেয়, তাহলেও আরবি ভাষা আয়ত্ত এসে যাবে, এব্ং কুরআন মাজিদের অনুবাদ সহজ হয়ে যাবে। যদি এর সাথে সরফ ও নাহুর দু’একটি পুস্তিকা পড়ে নেয়, তাহলে তো সোনায় সোহাগা। ওলামায়ে কেরাম যদি কিতাবখানা মাদরাসাসমূহে সিলেবাসভূক্ত করে নেন, তাহলে ছাত্রদের খুব ফায়দা হবে বলে আশা করছি। কেননা, আমি পাঠদানের অভিজ্ঞতার পর এটি প্রকাশের সাহস করেছি। ইতঃপূর্বে কয়েকখানা কিতাব এতদুদ্দেশ্যে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু তা থেকে মাদরাসার ছাত্ররা উপকৃত হতে পারেনি, বরং তা পাঠে ছাত্রদের মেধা বিনষ্ট হওয়ার প্রবল আশঙ্কা করছি। মহান আল্লাহর মেহেরবানীতে আমি এ কিতাবে এমন সব বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য করেছি, যা মাদরাসার ছাত্রদের জন্য অত্যন্ত উপকারী এবং যা তাদের মনোবল ও সাহস সঞ্চার করবে। এটাই অন্যতম বিষয় যার ফলে এ কিতাবটি সাধারণ- বিশেষ সকলের পাঠের উপযোগী হয়েছে। দোয়া করি আল্লাহ পাক এই নগণ্যের রচনাটিকে ব্যাপক সমাদৃত করে এটিকে আরবি ভাষার উন্নয়ন ও ধর্মীয় শিক্ষা প্রসারের পাথেয় হিসেবে গ্রহণ করুন। আমীন। মুশতাক আহমদ চরথালভী মুজাফফর নগর ২২ যিলহজ¦ ১৩৮০ হিজরী