ঐতিহাসিকগণের মতে সরাইল এলাকাটি একসময় কালীদহ সাগরের জলরাশিতে নিমজ্জিত ছিল। প্রাকৃতিক কারণে সেই সাগরবক্ষে বেশ কয়েকটি চর ভেসে ওঠে এবং কালক্রমে জনপদের সৃষ্টি করে। সেই প্রাচীন জনপদের একটি সরাইল পরগনা নামে পরিচিতি পায়। কৈলাস সিংহের মতে এই পরগনাটি নদীরস্রোতে প্রবাহিত কর্দমরাশি দ্বারা গঠিত এবং একসময় তরুগুল্মে আচ্ছাদিত ছিল। এর যথার্থতা খুঁজে পাওয়া যায় চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙ (৬০২-৬৬৪) এর বক্তব্য থেকে। তিনি শ্রীহট্ট জেলার দক্ষিণ-পশ্চিমাংশ, ময়মনসিংহের পূর্বাংশ এবং ত্রিপুরা রাজ্যের উত্তর-পশ্চিমাংশ দর্শন করে বলেছেন- এই স্থানে পূর্বে বৃহৎ হ্রদ (সমুদ্র) ছিল। প্রাকৃতিক কারণে তা কর্দমরাশি দ্বারা ক্রমে শুষ্ক হয়ে অসংখ্য বিলের সৃষ্টি করেছে। এই সকল বিলের কান্দি বা উচ্চস্থানস্থিত গ্রামগুলি বর্ষাকালে সমুদ্রমধ্যস্থিত দ্বীপের মতো দেখা যেতোঐতিহাসিকগণের মতে সরাইল এলাকাটি একসময় কালীদহ সাগরের জলরাশিতে নিমজ্জিত ছিল। প্রাকৃতিক কারণে সেই সাগরবক্ষে বেশ কয়েকটি চর ভেসে ওঠে এবং কালক্রমে জনপদের সৃষ্টি করে। সেই প্রাচীন জনপদের একটি সরাইল পরগনা নামে পরিচিতি পায়। কৈলাস সিংহের মতে এই পরগনাটি নদী¯্রােতে প্রবাহিত কর্দমরাশি দ্বারা গঠিত এবং একসময় তরুগুল্মে আচ্ছাদিত ছিল১। এর যথার্থতা খুঁজে পাওয়া যায় চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙ (৬০২-৬৬৪) এর বক্তব্য থেকে। তিনি ¤্রীহট্ট জেলার দক্ষিণ-পশ্চিমাংশ, ময়মনসিংহের পূর্বাংশ এবং ত্রিপুরা রাজ্যের উত্তর-পশ্চিমাংশ দর্শন করে বলেছেন- এই স্থানে পূর্বে বৃহৎ হ্রদ (সমুদ্র) ছিল। প্রাকৃতিক কারণে তা কর্দমরাশি দ্বারা ক্রমে শুষ্ক হয়ে অসংখ্য বিলের সৃষ্টি করেছে। এই সকল বিলের কান্দি বা উচ্চস্থানস্থিত গ্রামগুলি বর্ষাকালে সমুদ্রমধ্যস্থিত দ্বীপের মতো দেখা যেতো২। হিউয়েন সাঙ বর্ণিত সমুদ্রের চৌহদ্দি পর্যালোচনায এই সমুদ্রই কালীদহ সাগর বলে প্রতীয়মান হয়। সরাইলের নামকরণ নিয়ে নানা মুনির নানা মত রয়েছে। তবে গবেষকগণ কর্তৃক প্রদত্ত দু’টি মতবাদ বর্তমানে প্রচলিত রয়েছে। একটি হলো, সরাইল = সর আইল। ‘সর’ অর্থ সরোবর কিংবা জলাশয়, ‘আইল’ অর্থ বাঁধ কিংবা উঁচু স্থান। কালীদহ সাগরে ভাসমান চরগুলোকে দূর থেকে জলরাশির (সর) ওপর বাঁধের (আইল) মতো দেখা যেতো বলে বিশাল জলরাশির ওপর জেগে ওঠা এই ভূখÐকে সরাইল নামে অভিহিত করা হয়। অপরটি হলো, সরাইল = সরাই ঈল। ‘সরাই’ থেকে সরাইখানা, মানে ক্ষণস্থায়ী বাসস্থান। ফার্সি ‘ঈল’ শব্দ মানে বিদ্রোহী বন্ধু। সুতরাং সরাইল নামের অর্থ দাঁড়ায় বিদ্রোহী বন্ধুর বাসস্থান। সুলতান বহরম খানের বর্মরক্ষক থাকাকালীন ফখরুদ্দিন মোবারক শাহ বিদ্রোহ করে এই এলাকায় তার ক্ষণস্থায়ী রাজধানী স্থাপন করেন। দিল্লির স¤্রাট শেরশাহ(১৪৪৬-১৫৪৫)-এর শাসনামলে (১৫৪০-১৫৪৫) সরাইল একটি অন্যতম পরগনা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।। হিউয়েন সাঙ বর্ণিত সমুদ্রের চৌহদ্দি পর্যালোচনায এই সমুদ্রই কালীদহ সাগর বলে প্রতীয়মান হয়।