বর্তমান সিরাজগঞ্জ জেলা শহর থেকে কয়েক মাইল দক্ষিণে কামারখন্দ উপজেলার তেতুলিয়া গ্রামে ১৮৫৫ সালে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন যাদব চন্দ্র। পিতা কৃষ্ণচন্দ্র চক্রবর্তী ছিলেন একজন পুরোহিত এবং মাতার নাম দুর্গারাণী চক্রবর্তী। ১৮৭৬ সালে ২১ বছর বয়সে মাসিক ১৫ টাকা বৃত্তি সহ প্রথম বিভাগে এন্ট্রান্স পাশ করেন। এরপর চলে যান কলকাতায় এবং ভর্তি হন জেনারেল এসেম্বলিজ ইন্সটিটিউশনে (বর্তমানে স্কটিশ চার্চ কলেজ)। কলেজ জীবনে টিউশনি করে পড়াশোনার খরচ চালাতেন। স্কটিশ চার্চ কলেজ হতেই যাদব চন্দ্র ১৮৭৮ সালে এফ.এ. এবং ১৮৮০ সালে বি.এ. পাশ করেন। তারপর কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে এম.এ. ভর্তি হন এবং সেখান থেকেই ১৮৮২ সালে এম.এ. পাশ করেন। বিদ্যানুরাগী যাদব চন্দ্র চক্রবর্তী কর্মক্ষেত্র হিসেবে শিক্ষকতাকেই বেছে নিয়েছিলেন। প্রেসিডেন্সি কলেজের ছাত্র থাকাকালীন তিনি ক্যাথিড্রাল মিশন কলেজে বি.এ. ক্লাসে পদার্থবিদ্যা ও রসায়ন পড়াতেন। পড়াশোনা শেষ করে কলকাতা সিটি কলেজে গণিতের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। প্রায় ছয় বছর শিক্ষকতা করেন সেখানে। এরপর ১৮৮৮ সালের জানুয়ারি মাসে আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা শুরু করেন। কর্মজীবনের সবচেয়ে বড় সময় এখানেই কাটান তিনি। এই সময়েই তার গণিত বিষয়ক বইগুলো প্রকাশিত হয়। দীর্ঘ ২৮ বছর আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করে ১৯১৬ সালে অবসর নেন। গণিতে শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি অনেকগুলো বই রচনা করেন। সেসবের মধ্যে সেরা গ্রন্থ হলো 'পাটিগণিত' যেটা তিনি মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের জন্য লিখেন। কলকাতা সিটি কলেজে অধ্যাপনার সময় তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষার্থীদের জন্য পাটিগণিতের বই লেখায় ব্রতী হন। ১৮৯০ সালে ইংরেজি ভাষায় 'Arithmetic' নামে বইটি প্রকাশিত হয়। পরে এই বই বাংলা, হিন্দি, উর্দু, অসমীয়া, মারাঠি, তামিল ও নেপালি ভাষায় অনূদিত হয়। সে সময় বইটি দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্য ছিল। তিনি সপ্তম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যসূচি সেখানে অনুসরণ করেছিলেন।