যেসব বাতিল ফিরকা ঈমান-ইসলামের নাম নিয়ে, আদল-ইনসাফের দাবী নিয়ে, কুরআন-হাদীসের বুলি আওড়িয়ে, ইসলামী রাজনীতির লেবাসে সুসজ্জিত হয়ে, রাজ্য দখলের লোভ নিয়ে সাহাবীগণের যুগে আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাআতের মধ্যে প্রবেশ করে ইয়াহুদী চক্রান্তে প্রতারণামূলক চাল এঁটেছিল এবং যিনদীকদের কায়দায় মুসলিম উম্মাহর মধ্যে বদদীনী ও বিরোধ সৃষ্টি করেছিল তারা ছিল মূলত শীআ ফিরকা। পরবর্তীতে এরই উত্তরসূরী বহু ফিরকা ধারাবাহিকভাবে জন্ম নিয়েছে, যাদের অনেক নিয়ম-নীতিই ছিল এই শীআ ফিরকা থেকে ধার করে নেয়া। বর্তমান যুগে শীআ সম্প্রদায়ের শেষ ব্যক্তি হলেন ইসনা আশারিয়া শীআ আয়াতুল্লাহ রূহুল্লাহ খোমেনী যিনি ইরানে শীআ হুকুমাত প্রতিষ্ঠা করেন। এই ইসনা আশারিয়া শীআ সম্প্রদায় নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পরবর্তী ১২ জন ব্যক্তিকে ইমাম বলে বিশ্বাস করে, আর এ বিশ্বাস তাদের ঈমানের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তারা ইমামগণকে রাসূল ও নিষ্পাপ বিশ্বাস করে। এমনকি আলী রাযিআল্লাহু আনহুর উপর ঈমান আনা আমাদের নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপরও ওয়াজিব ছিল নাঊযুবিল্লাহ। ১২ ইমাম সম্পর্কে খোমেনী স্বীয় প্রণীত ‘আল-হুকুমাতুল ইসলামিয়া' গ্রন্থে লিখেছেন: ومن ضروريات مذهبنا أن لأئمتنا مقاما لا يبلغه ملك مقرب ولا نبي مرسل অর্থাৎ আমাদের মাযহাবী আকাঈদ এই যে, আমাদের বার ইমামের উচ্চ মর্যাদার স্তরে আল্লাহর নিকটবর্তী কোন ফিরিশতা ও তাঁর প্রেরিত কোন রাসূল পৌঁছতে পারবেন না। খোমেনী স্বীয় রচিত তাহরীরুল ওয়াসীলা গ্রন্থের প্রথম খণ্ডের ৬৫ পৃষ্ঠায় লিখেছেন: يستحب تلقينه الشهادتين وإقرار الأئمة الاثني عشر অর্থাৎ মুমূর্ষু ব্যক্তিকে শাহাদাতাইন ও বার ইমামের স্বীকারোক্তির তালকীন দেয়া মুস্তাহাব। শুধু তাই নয়, কুরআন সম্পর্কে শীআ বিশ্বাস হল, 'আমাদের বর্তমান কুরআন আসল কুরআন নয়, বরং তা বিকৃত ও ভুল। সাহাবায়ে কিরাম বিশেষত আবূ বকর, উমার ও উসমান রাযিয়াল্লাহু আনহু তাদের স্বার্থে তা বিকৃত করেছেন نعوذ بالله। আসল কুরআন সতের হাজার আয়াতবিশিষ্ট যা আহলে বায়তের কাছে সংরক্ষিত ছিল। দ্বাদশ ইমাম এটা নিয়ে একটা গুহায় আত্মগোপন করে আছেন। কিয়ামতের পূর্বে তিনি তা নিয়ে আত্মপ্রকাশ করবেন। এছাড়া তারা তাদের ভ্রান্ত আকীদার পক্ষে দলিলস্বরূপ কুরআনের বেশ কয়েকটি আয়াতের অপব্যাখ্যা করেছে।' (উসূলে কাফী দ্রষ্টব্য) শীআ মতবাদের আরেকটি মৌলিক বিশ্বাস যে, "নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাতের পর চার জন সাহাবী ব্যতীত বাকি সবাই মুরতাদ হয়ে গিয়েছিলেন। এমনকি প্রথম তিন খলীফা আবূ বকর, উমার, উসমান এবং আম্মাজান আয়িশা ও হাফসা রাযিআল্লাহু আনহুম নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবদ্দশায়ই মুনাফিক ছিলেন نعوذ بالله। তাদের কিতাবে আছে, 'জাহান্নামে আগুনের একটা কূপ আছে। এর মধ্যে আগুনের একটা বাক্স আছে। জাহান্নামীগণ এর তাপ থেকে পানাহ চায়। ঐ বাক্সে বার ব্যক্তি বন্দী আছে। ছয়জন পূর্ববর্তী উম্মাতের, আর বাকি ছয়জন এ উম্মাতের। পূর্ববর্তী উম্মাতের ছয়জন হলো কাবিল, নমরূদ, ফিরআউন, সালেহ আ.-এর উষ্ট্রীর ঘাতক ও বনী ইসরাঈলের দুজন এবং এ উম্মাতের ছয়জন হলেন نعوذ بالله আবূ বকর, উমার, উসমান, মুআ'বিয়া, নাহরাওয়ান ও ইবনে মুলজিম'।"[মুহাম্মদ বাকির মাজলিসী, হাক্কুল ইয়াকীন (আরবী), তেহরান: ইনতেশারাতে কায়িম, পৃষ্ঠা ৫০৩] এখানে ইসনা আশারিয়া শীআ মতবাদ সম্পর্কে সামান্য ধারণা দেয়া হল। এ সংক্রান্ত বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য এই কিতাবটি পড়ুন। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সমস্ত ফিতনা বিশেষ করে শীয়া ফিতনা থেকে হিফাযাত করুন। আমীন।