শ্রদ্ধেয় সুহৃদ সালাম তাসির মূলত কবি। বিস্ময়ের আনন্দে পাঠ করেছি তাঁর ‘কে প্রথম ভালোবেসেছি’ নামধেয় প্রথম গল্পগ্রন্থের পা-ুলিপি। প্রতিটি গল্পে লেখকের সত্যান্বেষণ, মানব চরিত্রে বৈচিত্রের অনুসন্ধিৎসা, অনুভূতিশীল প্রকৃতির প্রেক্ষাপট বিনির্মাণ ও প্রকাশের স্বভাবজাত সাবলিল ভঙ্গিমা আমাকে মুগ্ধ করেছে। গ্রামের বকুলতলা, শানবাঁধানো ঘাট, চৈত্রের দুপুর, মুক্তিযুদ্ধ, নর-নারীর ভালোবাসা, মানব প্রেম, ফসলের মাঠ, নির্জন বটবৃক্ষ, জেলে নৌকা, ডাকাত দল, মাতাল সুইপার, রিকশাচালক বজলা, গ্রামের মেঠোপথ, যতœবান শিক্ষকÑ এ সবই তাঁর কাহিনীর মৌলিক উপাদান। তবে বৃহত্তর প্রকৃতি তাঁর গল্পে কখনোবা স্বতন্ত্র চরিত্ররূপে আবির্ভূত হয়েছে। কাক নামক গল্পে আকাশের ঠিকানায় কাকের প্রতি চিঠি সমগ্র প্রকৃতির প্রতি সনির্বন্ধ আবাহনের একটি রূপরেখা বলা যায়। গল্পের কাহিনী উপস্থাপনে সালাম তাসির বিষয়ানুগ সংযোগী ভাষা ব্যবহার করেছেন। ফলে কাহিনীর সামাজিক সংবেদন ও চরিত্র চিত্রনের প্রেক্ষাপট বাস্তবতার অনুষঙ্গে ঋদ্ধ হয়েছে। তবে গল্পের বুননে প্রায়শই কাব্য ভাষার সংমিশ্রণ একটি স্বতন্ত্র আবহ সৃষ্টি করেছে। যেমন- বৃষ্টি না হোক জোছনায় ভিজবো দু’জন। ভালোবাসার পৃষ্ঠা উল্টানো মধুক্ষণ স্বপ্নের হাত ধরে হেঁটে যায় বহুদূর। সংজ্ঞাবান পুরুষ সালাম তাসিরের সংকল্পিত সন্ধ্যাকাশ বহু তারকায় বর্ণিল হোক। ভবিষ্যতে ভয়াবহ নাগরিক জীবনের যন্ত্রণাদগ্ধ চিত্তের ক্রন্দন তাঁর লেখায় আরও দৃশ্যমান হবে এই কামনা করি। মুহাম্মদ বাসেত ঠাকুর অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান বাংলা রাজবাড়ী সরকারি কলেজ, রাজবাড়ী।