কবিতার সম্মোহনী শক্তিতে জেগে ওঠে কবিদের মন। যারা নিজেকে আপাদমস্তক কবি হিসেবে গড়ে তুলতে চান, তারা নিয়মিত কবিতা লেখেন, কবিতা নিয়ে গভীর ভাবনায় নিমগ্ন থাকেন। আমিও সেটির বাইরে নই। কবিতাকে নিয়ে ভাবি, তারপর তাকে লিখি আর যত্নে রেখে দিই। এভাবেই কীভাবে যেন একেকটা পাণ্ডুলিপি তৈরি হয়ে যায়, তা টেরই পাই না। ‘ভালোবেসে দুঃখ ছুঁয়েছি’তে যতগুলো কবিতা আছে, তা খুব বেশিদিন আগে লেখা হয়েছে, তেমনটা না। বইটিতে স্থান পাওয়া পঞ্চাশটি কবিতা ২০২১ ও ২০২২ সালে লেখা হয়েছে। তার মানে দু-বছরে খুব বেশি কবিতা লিখিনি। কিন্তু কবিতাকে চিন্তা করে যে ঘরবসতি গড়েছি, তা আজীবনের জন্য। ভাবছি, প্রতিবছর কমপক্ষে একটি করে হলেও কবিতার বই প্রকাশ করব। তবেই না হয় কবি-মনের খায়েশ কিছুটা লাঘব হবে। আমি সহজ শব্দে কবিতা লিখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। কঠিন শব্দে কিংবা অপূর্ণ বাক্যে লেখা কবিতা আমাকে টানে না। শুধু লেখক হিসেবে নয়, একজন পাঠক হিসেবেও আমার কাছে মনে হয়, কবিতায় প্রাঞ্জলতা, সহজবোধ্যতা ও সরলতা পাঠককে আকৃষ্ট করতে পারে বেশি। কঠিন বিষয় পাঠক পড়তে চায় না, মাথার ওপর দিয়ে যায়। যদিও কবিতা পাঠ করার চেয়ে আবৃত্তি করতে বা শুনতে ভালো লাগে, কিন্তু যে পাঠক কবিতাকে কবিতার ঢঙে পড়তে পারেন, তার কাছে কবিতার মতো উৎকৃষ্ট সাহিত্য আর কী-বা হতে পারে! শেষত্বক, ‘ভালোবেসে দুঃখ ছুঁয়েছি’তে প্রেম-ভালোবাসা, রাষ্ট্রভাবনাসহ নানান প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। এসবের কোনো কিছুই আমার ব্যক্তিজীবনের প্রতিফলন নয়। পারিপার্শ্বিক চিন্তাচেতনা, বোধ-বিবেক, উপলব্ধি ও গভীর চিন্তা থেকেই কবিতাগুলো লেখা হয়েছে। তাই কোনো কবিতা পড়ে আমাকে ব্যর্থ, কোনো কবিতা পড়ে আমাকে প্রেমিক, কিংবা অন্যকিছু ভাববার কোনো সুযোগ নেই। কথাটি বলার কারণ এজন্যই যে কিছু পাঠকের মনে এ জাতীয় কৌতুহলের সৃষ্টি হয় এবং এ জাতীয় প্রশ্নে বিব্রতও হতে হয়। যাহোক, ‘ভালোবেসে দুঃখ ছুঁয়েছি’র কবিতাগুলো পাঠক-মনে জায়গা করে নেবে, এ প্রত্যাশা রাখতেই পারি। মোহাম্মদ অংকন কবি
মোহাম্মদ অংকন, বর্তমান লেখকদের মধ্যে পরিচিত মুখ। শৈশব-কৈশোরে লেখালেখির হাতেখড়ি। নিয়মিত লিখছেন দেশ-বিদেশের পত্রপত্রিকা, ম্যাগাজিন ও সাময়িকীতে। সাহিত্যের সব শাখাতেই আছে সমান দক্ষতা। দক্ষতা, আত্মপ্রত্যয়ী মনোভাব ও প্রতিশ্রুতিশীলতা ক্রমশ এই লেখককে আগামীর পথ দেখাচ্ছে। বছরব্যাপী নতুন বই প্রকাশের মাধ্যমে পাঠকমহলে চমক সৃষ্টি করে চলেছেন। বাংলা সাহিত্যে এই প্রতিভাবান লেখকের অবাধ বিচরণে মুগ্ধ সবাই। তিনি ১৯৯৭ সালের ৭ নভেম্বর নাটোরের চলনবিল অধ্যুষিত সিংড়া উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে পড়াশোনা করছেন। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র হওয়ার পরও লেখালেখির সূত্রে ঝুঁকে পড়েন সাংবাদিকতায়। দৈনিক মানবকণ্ঠে সাব-এডিটর হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও সরকারি চাকরি পাওয়ায় তা আর করা সম্ভব হয় না। বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশের সর্ববৃহৎ ইউনিট ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)’র কম্পিউটার বিভাগে কর্মরত আছেন। পুরস্কার ও সম্মাননা: ‘পাপড়ি-করামত আলী পাণ্ডুলিপি পুরস্কার-২০১৯’, ‘রূপচাঁদা: অদেখা বাংলাদেশ সেরা গল্পকার-২০১৯’, ‘চয়েন বার্তা সম্মাননা-২০২০’, ‘লিখিয়ে পাণ্ডুলিপি পুরস্কার-২০২০’, ‘প্রিয় বাংলা পাণ্ডুলিপি পুরস্কার-২০২২’।