ভূমিকা আমরা মুখে স্বীকার করি না করি— মূলতঃ আমরা কিন্তু গৃহপালিত পশুর ওপর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল। আমাদের মধ্যে যারা সরাসরি গৃহপালিত পশুর ওপর নির্ভর করে আছে— বা গৃহপালিত পশুর মাধ্যমে বা দ্বারা নিজের জীবিকা অর্জন করছেন- তাদেরকে সংক্ষেপে খামারকারী বলে সম্বোধন করছি। আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের আমিষ এবং প্রোটিনের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক জোগান আসে এই গৃহপালিত পশু থেকে।
আমাদের দেশে গৃহপালিত পশু বলতে গরু, ছাগল, ভেড়া এবং ক্ষেত্রবিশেষে মহিষও বোঝায়। এদেরকে লালন পালন করার জন্য আমরা কখনই খুব বেশি একটা যত্ন করি না বা উদ্যোগ গ্রহণ করি না। মূলতঃ অনেকটা প্রাকৃতিকভাবেই এরা বেড়ে ওঠে, বাচ্চা দেয়, দুধ দেয়, মাংসের জোগান দেয়। স্বাভাবিকভাবেই এইসব বেড়ে ওঠা বা এদের দ্বারা উৎপাদিত উপাদানের পরিমাণ অনেক কম থাকে। আমরা যদি বিদেশী কোন গরুকেও প্রয়োজনীয় যত্ন বা খেয়াল না দিই তাহলে সেটাও বিদেশের মতো দুধ দেবে না। গৃহপালিত পশুদের প্রতি এই যত্ন আবার অতি যত্ব না হয়ে যায়- সেটাও কিন্তু বিবেচ্য বিষয় ।
গৃহপালিত পশুদের জন্য যত্ন ও পরিচর্যর পরিমাণ বিজ্ঞানসম্মত হওয়া উচিত। এখন আর সেই দিন নেই যে, গরুর পেট ফুলেছে বা গরুর পেটে গ্যাস জমেছেসুতরাং এখনই গরুটি জবাই করে মাংস বিক্রি করে দিতে হবে। তখন ধারণা ছিল, এই গরু বাচাবে না। এই মতবাদ এখন হাস্যকর । কারণ, এর চেয়েও বড়ো বড়ো রোগাক্রান্ত গরুকে বাচিয়ে আগের মতো কর্মক্ষম করা যাচ্ছে। আর এই কাজগুলো করা হচ্ছে বিজ্ঞানসম্মত পরিচর্যার দ্বারা ।
আপনি গরু পুষিবেন- অথচ গরু পোষার নৃত্যুনতম পরিচর্যার দিকগুলো জানেন না। এইক্ষেত্রে আপনাকে আমি বলবো- আপনি এই কাজটি করতে যাবেন না । তাহলে আপনার অর্থ আর সময় দুটোরই অপচয় হবে। গরু পোষার এমনকি ছাগল পোষার আগেও তাদের যত্ন আর পরিচর্যা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় জ্ঞান থাকা অত্যন্ত জরুরী।
আমার এই বইতে আমি গৃহপালিত পশুদের প্রয়োজনীয় যত্ন আর পরিচর্যার পাশাপাশি তাদের প্রাত্যহিক রোগ-ব্যাধি এবং তাদের প্রতিকার ও প্রতিরোধের বিষয়গুলো তুলে ধরেছি। আপনি যদি বড় আকারের খামার গড়ে তুলতে চান— তাহলে এই বইতে বর্ণিত সকল কৌশলগুলো আপনার খুব কাজে লাগবে বলে আমার বিশ্বাস। এছাড়া সহজ পদ্ধতিতে গরু মহিষ, ছাগল ও ভেড়া পালনের প্রতি উৎসাহ যুগিয়ে পরিবারে অর্থনৈতিক সাশ্রয় আনয়ন করার উদ্দেশ্যও রয়েছে আমার । বাকিটুকু আমার পাঠকবর্গই বলতে পারবে। --মোঃ সাইদুর রহমান
সূচীপত্র প্রথম অধ্যায় * গৃহপালিত পশু ৭ * প্রাত্যহিক জীবনে গৃহপালিত পশুর অবদান ৮ * আত্মকর্মসংস্থান ও গৃহপালিত পশু ১০
দ্বিতীয় অধ্যায় * গৃহপালিত পশু নির্বাচন ১১ * গরু-মহিষের শারীরিক গঠন ১১ * গরু-মহিষের বংশগত যোগ্যতা ও গুণাবলী ১৩ * গরু-মহিষের উত্তম জাত ১৩ * গরু-মহিষের উন্নত উৎপাদন শক্তি ১৪ * গরু, মহিষ ও ছাগলের তুলনা ১৫
তৃতীয় অধ্যায় * গৃহপালিত পশুর দুধ এবং এর রক্ষণাবেক্ষণ ১৯ * দুধ নষ্ট হতে না দেওয়ার পদ্ধতি ১৯ * দুধ থেকে প্রস্তুত বিভিন্ন খাবার ২১ * গৃহপালিত পশুর উন্নয়নে ঘাস চাষ২৩ * হাইব্রিড নেপিয়ার ঘাস চাষের নিয়ম ২৩ * ঘাস সংরক্ষণ করা ২৪
চতুর্থ অধ্যায় * বিশ্বের বিভিন্ন জাতের গৃহপালিত পশু ২৫ * বিভিন্ন জাতের গরু ও তাদের বৈশিষ্ট্য ২৬ * সংকর জাতের গরুর সুবিধা ও অসুবিধা ৩০ * দেশী জাতের উন্নত গরু ৩১
পঞ্চম অধ্যায় * গরু পালনের প্রয়োজনীয় বিষয় ৪৩ * গরুর শারীরিক গঠন ৪৫ * গরুর জাত বা ধরণ ৪৭ * গরুর উৎপাদন বা প্ৰজনন শক্তি ৪৭ * গরুর পরিপাক প্রণালী ৪৭
সপ্তম অধ্যায় * গরুর গোয়াল ঘর বা থাকার জায়গা ৬৬ * গোয়াল ঘর বিষয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত ৬৬ * গোয়ালঘর কোথায় করবেন?৬৭ * গোয়ালঘরের দেওয়াল ৭০ * গোয়ালঘরের ছাদ বা ছাউনি ৭০ * গোয়ালঘরের মেঝে ৭০ * খাদ্যাদি ও পানীয় জল রাখার ব্যবস্থা ৭১ * প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা ৭২ * গরুর স্বাধীন ও মুক্ত থাকার ব্যবস্থা ৭৩ * বাতাস চলাচলের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ৭৫ * প্রয়োজনীয় আলোর ব্যবস্থা ৭৬ * নিরাপত্তার ব্যবস্থা ৭৭ * গরু-মহিষের ও মানুষের যাতায়াতের পথ ৭৮ * গরু-মহিষের গায়ে সূর্যকিরণ পড়ার ব্যবস্থা ৭৮ * বাছুরের থাকবার জায়গা ৭৯ * সদ্যজাত বাছুরদের জন্য ঘেষো জমি ৭৯
অষ্টম অধ্যায় * গরুর বিভিন্ন বংশবিস্তার ৮০ * নিম্নজাত থেকে উন্নত জাত তৈরি করা ৮১ * তির্যক পদ্ধতি ৮৪ * প্রচলিত পদ্ধতি ৮৫ * হাইব্ৰিড পদ্ধতি ৮৫ * পরীক্ষিত গাভী ও ষাঁড ৮৬ * পরিচয় সংরক্ষণ ৮৬
নবম অধ্যায় * গরুর সার্বিক পরিচর্যা ৮৭ * মাংসসর্বস্ব গরুর বিবেচ্য বিষয় ৮৮ * ইউরিয়া খড় তৈরির পদ্ধতি ৯১ * ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক তৈরির পদ্ধতি ৯১
সাইদুর রহমান বাংলা সাহিত্যের একজন নবীন লেখক। ছাত্র জীবনে থিয়েটারের সাথে জড়িত ছিলেন তাই লেখালেখির শুরু মঞ্চনাটক লেখার মাধ্যমে। নাটক লেখার পাশাপাশি একাধিক মঞ্চ নাটকে অভিনয় করেছেন, একাধিক নাটক নির্দেশনাও দিয়েছেন। এছাড়াও টিভি নাটকে অভিনয়ের পাশাপাশি ছিলেন জনপ্রিয় পরিচালক মনির হোসেন জীবনের সহকারী। চলচ্চিত্র পরিচালক হাবার সপ্ন নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন। ২০১২ সাল থেকে নিয়মিত লেখালেখি করছে। সাহিত্যদেশ পান্ডুলিপি পুরস্কার প্রাপ্ত ও ২০২২ সালের বইমেলায় প্রকাশিত "দুঃসহবাস" লেখকের প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস। মানুষ ও জীবন লেখকের লেখালেখির প্রধান উপজীব্য বিষয়। সহজ ও প্রাঞ্জল ভাষায় লেখালেখি তার অন্যতম শক্তি। আবার সবাই অবসরে বই পড়বে, বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পরবে তার লেখা, বিভিন্ন ভাষায় অনুদিত হবে তার বই, এই সপ্ন নিয়েই লিখে চলেছেন।