‘বাংলাদেশের শিক্ষানীতি, শিক্ষাব্যবস্থা এবং জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (১৯৪৭-১৯৭১)’ শিরোনামে রচিত গ্রন্থে ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বাংলাদেশের শিক্ষানীতি ও শিক্ষাব্যবস্থা এবং জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের তাৎক্ষণিক ও সুদূর প্রসারী প্রভাব সম্বন্ধে আলোচনা করা হয়েছে। মূলত এই গ্রন্থে ১৯৪৭ খ্রি. ১৪ আগস্ট থেকে ১৯৭১ খ্রি. ২৫ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশের শিক্ষানীতি ও শিক্ষাব্যবস্থার পটভূমিকায় গড়ে উঠা বিভিন্ন ছাত্র ও শিক্ষা আন্দোলন এবং জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের স্বরূপ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের ভাষা-সাহিত্য, কৃষ্টি-সভ্যতা, শিক্ষা-সংস্কৃতির উপর পাকিস্তানিদের ক্রমাগত নিপীড়ন-নির্যাতন এবং বিভিন্ন বৈষম্যমূলক আচরণের ফলে এদেশের মানুষ কীভাবে জাতীয়তাবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ ও স্বাধীন সত্তা বিকাশে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হতে পারে, এই গ্রন্থ তার ধারাবাহিক বর্ণনা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। পাকিস্তান সরকারের বৈষম্যমূলক আচরণে বাংলাদেশের ছাত্রসমাজের নিকট পরিস্ফুট হয়ে উঠে যে, গণমুখী, সার্বজনীন ও বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন কখনো পরাধীন দেশে সম্ভব নয়, তার জন্য রাজনৈতিক স্বাধীনতা প্রয়োজন। এ বিবেচনা বোধে অনুপ্রাণিত হয়েই এদেশের ছাত্রসমাজ ৬-দফা ও ১১-দফা আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে এবং ঊনসত্তর-এর গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং স্বাধীন দেশে গণমুখী, সার্বজনীন, বিজ্ঞানভিত্তিক আধুনিক ধাঁচের শিক্ষানীতি প্রণয়ন করতে বদ্ধ পরিকর হয়ে উঠে। এ প্রত্যাশা নিয়েই তারা বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ সৃষ্টির সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে চূড়ান্তভাবে সফলতাও অর্জন করে। প্রকৃতপক্ষে, এই গ্রন্থখানি হলো উন্নত শিক্ষানীতি বঞ্চিত একটি শিক্ষাবুভুক্ষ জাতির জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনের সামগ্রিক আলেখ্য।
Title
বাংলাদেশের শিক্ষানীতি, শিক্ষাব্যবস্থা এবং জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ১৯৪৭-১৯৭১