বাংলা তথা ভারতীয় থিয়েটারে নাট্য নির্দেশক ও নাট্যাভিনেতা হিসেবে হরিমাধব মুখোপাধ্যায় যতটা পরিচিত, নাটককার হিসেবে ততটা নন। অথচ ত্রিতীর্থ নাট্যদলের প্রয়োজনে এবং নিজের তাগিদে তিনি বাংলার পাঁচ-ছ'টি আঞ্চলিক ভাষায় এবং লোকায়ত সংস্কৃতির বিচিত্র উপাদান গ্রহণ করে এযাবৎ প্রায় পঞ্চাশটির ওপর নাটক রচনা করেছেন। নাট্য সমগ্রের তিনটি খন্ডে তাঁর এই নাটকগুলি প্রযোজনার অনুপুঙ্খ তথ্যসহযোগে সুবিন্যস্ত। হরিমাধব মুখোপাধ্যায়ের নাটকগুলি তাঁর নিজস্ব নাট্যবোধ, নাট্যদর্শন, আঞ্চলিক ভাষা বৈচিত্র্য এবং নাট্য প্রযোজনার সম্মেলনে বাংলা থিয়েটার তথা নাটকে স্বতন্ত্র স্থান করে নেওয়ার দাবি রাখে। হরিমাধব মুখোপাধ্যায়ের নাটক প্রসঙ্গে শমীক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন- 'হরিমাধব যখন জল, বিছন, দেবাংশী লিখতে বসেন, তখন নাটককারের দর্শন, নাট্য নির্দেশকের প্রয়োগ ভাবনা ও অভিনয়ের ভাবনা আলাদা স্থান করে নেয়। ... গ্রাম বাংলার সামাজিক ইতিহাসের বিচার বিস্তারে ভাষা নিহিত আঞ্চলিক সংস্কৃতির বহুমাত্রিক আবহ ও তারই শক্ত জমিতে নাটক, দশ্যমঞ্চনে ও অভিনয়ের জৈব শুদ্ধতায় পরিপূর্ণ করে তোলার সেই বৈভব হরিমাধব, একমাত্র হরিমাধবই শুধু বাংলা নয়, ভারতীয় থিয়েটারে ধারণ করে আছেন। ' নাট্য সমগ্রের তিনটি খন্ডেই প্রায় প্রত্যেকটি নাটকের নাট্যাভিনয় এবং নাট্য প্রযোজনার যাবতীয় তথ্য ও অনুপুঙ্খ ইতিহাস 'নাট্য পরিচিতি' অংশে বর্ণিত।