আল্লাহ যদি সর্বশক্তিমান হয়ে থাকেন, তাহলে তিনি কি আত্মহত্যা, চুরি ও যাবতীয় অনৈতিক কাজ করতে সক্ষম? সক্ষম হলে তিনি কেন এগুলো করে তার সর্বক্ষমতার প্রকাশ ঘটান না? মুসলিমরা বিশ্বাস করে, শয়তান মানুষকে পথভ্রষ্ট করে এবং মন্দ কাজের জন্য উত্তেজিত করে। তাহলে শয়তানকে কে পথভ্রষ্ট করেছে? মুসলিমরা হিন্দুদের মূর্তিপূজাকে সঠিক বলে না, কিন্তু তারা নিজেরাও তো এমন একটি গৃহের সেজদা করে, যা পাথর দিয়ে তৈরি। তবে তো মূর্তিপূজক আর মুসলিমদের মাঝে কোনো পার্থক্য থাকল না। ইসলামি বিশ্বাস ও বিধান নিয়ে এমনই কিছু প্রশ্ন তুলেছিলেন হিন্দু পণ্ডিত দয়ানন্দ স্বরস্বতী। এভাবে ইসলাম ধর্ম ও মুসলিমদের আকিদা-বিশ্বাস নিয়ে বিভিন্ন আপত্তি উত্থাপন করে লোকদেরকে বিভ্রান্ত করে বেড়াচ্ছিল সে। পণ্ডিত দয়ানন্দের এলাকায় দ্বীনের গভীর জ্ঞানসম্পন্ন কোনো আলিম ছিলেন না। তাই ফাঁকা মাঠ পেয়ে এই পণ্ডিত ও তার হিন্দু অনুসারীরা বলতে থাকে অনেক আপত্তিকর কথা। স্থানীয় কোনো আলিম তাদের সঙ্গে আলাপে বসতে চাইলে তারা বলত আপনারা নিজ ধর্মের বড়ো কোনো আলিমকে নিয়ে আসুন। ছোটখাটো লোকদের সঙ্গে আমরা আলাপে বসতে চাই না। তাই সেই এলাকার মুসলিমরা এসব জানিয়ে কাসিম নানুতুবি রাহিমাহুল্লাহুর কাছে চিঠি পাঠায়। তিনি তার ছাত্রকে পাঠাতে চাইলে পণ্ডিত এতেও বাঁধ সাধে। অবশেষে কাসিম নানুতুবি রাহিমাহুল্লাহু তার তিন শাগরিদকে নিয়ে সেখানে যান। কিন্তু নানা তালবাহানায় পণ্ডিত বাহাস এড়িয়ে যায়। সবশেষে তারা সিদ্ধান্ত নেন সেখানে প্রকাশ্যে ওয়াজ-মাহফিল করে তার এইসব আপত্তির জবাব দিবেন। টানা তিনদিন এই বিষয়ে তিনি ওয়াজ করেন। সেখানে মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান সকল ধর্মের লোকই উপস্থিত ছিল। এই আলোচনাগুলোই পরবর্তী সময়ে তার শাগরিদদের হাত ধরে ‘আযমতে ইসলাম’ নামে সংকলিত হয়। এই বইটি তারই অনুবাদ। ইসলামি জ্ঞানের পাশাপাশি যুক্তিতর্ক এবং দর্শন শাস্ত্রেও যে কাসিম নানুতুবি রাহিমাহুল্লাহুর বেশ পাণ্ডিত্য ছিল, তা জানা যাবে এই গ্রন্থে।