সম্পর্কের অনেক নাম। মানুষ সম্পর্ক গড়ে নিজেকে প্রকাশ করবে বলে। অনুভবকে ভাষা দেবে বলে। লাবণ্যময়ী ও নক্ষত্রের মানুষও একটি সম্পর্কে বাঁধা পড়েছে। রূপ-অরূপের ভেলায় প্রেমশ্রী ভাসিয়ে, তাদের মনকথাকে মনোরম গদ্যে সাজিয়েছেন নূর সালমা জুলি তাঁর ‘যে জীবন ফড়িঙের, দোয়েলের' বইতে। পত্রে পত্রে কথা বলেছে দুজন মানুষ। অজস্র কথা। যে কথায় জীবন হেসেছে, কেঁদেছে। গড়পড়তা জীবনের বাইরে গিয়ে তারা অতীন্দ্রিয় অনুভবে জারিত হয়েছে প্রগাঢ়ভাবে। ফড়িঙ ও দোয়েলের জীবন যাপন করার মানসে তাদের পরিভ্রমণ আমাদেরও এক অনিন্দ্যসুন্দর জগতে নিয়ে যায়। তাদের কথার রনরনিতে আবেশিত হয় চারপাশ। ধূলি-মাটির পৃথিবী থেকে আমরা ক্ষণকালের জন্য আপাত মুক্তির আস্বাদ পাই। এ গ্রন্থে প্রেম-বিরহ প্রতিমায় অধিষ্ঠিত হয়েছে আশ্চর্যপ্রাণ; ভিন্ন রূপে উঠে এসেছে জীবনের ট্র্যাজিক ওড়াল! জীবন যেন শতধারায় কথা বলেছে এখানে। ভালোলাগাগুলো হারিয়ে দিয়েছে বিষাদের গল্পকে। চাওয়া-পাওয়ার হিসাব মিলাতে গিয়ে নাভিশ্বাস ওঠে মানুষের। একটা আকাঙ্ক্ষিত সুন্দরের অপেক্ষায় পুরো জীবন ব্যয় করে। যদিও জীবনের শেষ পরিণতি বিষাদ। জীবনরসে সিক্ত লাবণ্যময়ীও এমন বিষণ্ণতার মধ্যেই শেষপর্যন্ত রয়ে যায়। শেষ হয়েও যেন শেষ হয় না এ আলাপন! বইটি পড়তে পড়তে পাঠক মিলিয়ে যাবে মরমের পরম সম্মিলনে; নিদারুণ এক পুলকে নিঃশেষে বিভাজ্য হবে নিশ্চিত