পূর্ব পাকিস্তানে মুক্তিযুদ্ধের মতো একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি হবার কারণ, মুক্তিযুদ্ধের পরিণতিতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর অস্ত্রসমর্পণ এবং পশ্চিম ফ্রন্টে একতরফা যুদ্ধ বিরতি কার্যকর হবার পরিস্থিতি ও নেপথ্য কারণগুলি অনুসন্ধানের জন্য ১৯৭১ সালের ২৬ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট ভুট্টোর নির্দেশে একটি যুদ্ধ-তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়। তিন সদস্যের এই উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের সভাপতি মনোনীত হন পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারক বিচারপতি হামুদুর রহমান। তার নামে পরবর্তী সময়ে এই কমিশন হামুদুর রহমান তদন্ত কমিশন নামে পরিচিতি লাভ করে। সামরিক বাহিনী এবং রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে তদন্ত কমিশন যখন কাজ শুরু করে তখন বাংলাদেশ-রণাঙ্গনে আত্মসমর্পণকারী বিপুল সংখ্যক পাকিস্তানি সেনা- কর্মকর্তা ও সাধারণ সৈনিক এবং অন্যান্য স্তরের ব্যক্তিবর্গ যুদ্ধবন্দি হিসাবে ভারতে অবস্থান করছিলো। তদন্ত যথাসম্ভব নির্ভুল ও সম্পূর্ণ করার জন্য এই যুদ্ধবন্দিদের সাক্ষ্যগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হয়। কিন্তু সেই সময় যোগাযোগ সমস্যার কারণে তাদের সাক্ষ্য নেওয়া যায়নি। এর ফলে, দীর্ঘ কার্যক্রমের একটা পর্যায়ে এসে তদন্ত কাজ থেমে যায় এবং ভারতে অবস্থানকারী যুদ্ধবন্দিদের স্বদেশে ফিরিয়ে না নেওয়া পর্যন্তও তদন্ত পুরাপুরি বন্ধ করে রাখতে হয়। ওই সময় কথা থাকে যে, যুদ্ধবন্দিরা স্বদেশে ফিরে যাবার পর তদন্ত কমিশন পুনরায় সক্রিয় হবে।