"ক্লাস সেভেন ১৯৭৮" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ ১৯৭৪ সালে যখন আমার ক্যাডেট জীবন শুরু হয়। তখন ধারনা করতে পারিনি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি আমার জীবন ও মননকে কতােখানি বদলে দেবে। এখনও যখন অবসর পাই, হারিয়ে যাই নিত্যদিনের নিয়মানুবর্তিতার শিক্ষা দেয়া আমাদের তখনকার বিভিন্ন কার্যাবলীর মধ্যে। অবশ্য ইদানিংকালে কর্মক্ষেত্রের নানা ব্যস্ততার কারনে ৩৪ বছর আগের স্মৃতি স্পষ্ট মনে রাখা সম্ভব হয়নি। ভ্রাতৃপ্রতিম সুহৃদ স্থপতি শাকুর মজিদের ক্লাস সেভেন ১৯৭৮ লেখাটি আমার ফেলে আসা সেসব দিনগুলাের মধুময় সব স্মৃতিই শুধু স্মরন করিয়ে দেয়নি, হৃদয়ের মনিকোঠা থেকে বের করে এনেছে সপ্তম শ্রেণীর মামুন রশীদের বিস্ময়, অভিমান আর ভালাে-খারাপ মুহূর্তগুলােকে। ধন্যবাদ শাকুরকে। ক্যাডেট কলেজের জীবনের প্রতিটি দিনই কিছু না কিছু শিখেছি। নিয়মানুবর্তীতার সাথে সাথে আমরা শিখেছি শত বিরাগের মাঝেও কিভাবে সিনিয়রদের শ্রদ্ধা করতে হয়, জেনেছিলাম শিক্ষকদের প্রেরণা, বন্ধুদের বিশ্বাস আর জুনিয়রদের ভালবাসা মানুষকে কতটা এগিয়ে নিতে পারে। ক্লাস সেভেন এ পড়া ১২-১৩ বছরের একটা শিশুর মনন বিকাশে এবং ভ্রাতৃত্ববােধ, দেশপ্রেম ও নিয়মানুবর্তীতা শিক্ষাদানে পরিবারের পাশাপাশি একটি বিদ্যাপীঠও যে কতাে গুরশুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, তা এই বইটি পড়লে পাঠক সহজেই ধারনা নিতে পারবেন।
শাকুর মজিদ পেশায় স্থপতি, নেশায় লেখক-নাট্যকার-আলোকচিত্রী-চলচ্চিত্র নির্মাতা। শৈশবে কবিতা দিয়ে লেখালেখি শুরু। পরে গল্প, নাটক, ভ্রমণ-কাহিনি লিখেছেন অনেক। নাটকের সকল শাখায় তার বিচরণ। কুড়ি বছর বয়সে সিলেট বেতারে তাঁর লেখা নাটক ‘যে যাহা করোরে বান্দা আপনার লাগিয়া’ প্রথম (১৯৮৫) প্রচার হয় । লন্ডনী কইন্যা, নাইওরী, বৈরাতী, করিমুন নেছা, চেরাগসহ বেশ কয়েকটি টেলিভিশন-নাটক ও টেলিফিল্মের রচয়িতা তিনি। দেশ-বিদেশের ভ্রমণচিত্র নিয়ে তিনশতাধিক প্রামাণ্যচিত্র বানিয়েছেন। দেশ ভ্রমণ তার একটি বড় নেশা। ত্রিশটি দেশ ভ্রমণ করেছেন।তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ৩২, বেশীরভাগই ভ্রমণকাহিনি, স্মৃতিচারণ ও আত্মজৈবনিক গ্রন্থ।