যুগে যুগে মুসলিম উম্মাহকে বিভ্রান্তিতে ফেলতে বিভিন্ন আকর্ষণীয় নামের বাতিল ফিরকার উদ্ভব ঘটেছে। সাধারণ মুসলমানদেরকে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলার জন্য এমন নামের মোড়ক ব্যবহার করা হয় যেগুলো শুনে সাধারণ মুসলমানগণ দ্বিধার মধ্যে পড়ে যান। যেমন, মুতাযিলারা নিজেদেরকে ‘আসহাবুল আদলি ওয়াত তাওহীদ’ বলে পরিচয় দিতো। অথচ তারা তাওহীদ পরিপন্থি আকীদা লালন করতো। বর্তমান যুগে আহলে হাদীস নাম দিয়ে সুন্নাহ বিরোধী প্রচারণার মাধ্যমে কিছু লোক ফিতনা ছড়াচ্ছেন। আমরা ঐ সকল বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা থেকে মুসলিম উম্মাহকে সচেতন করার জন্য তাদের মুখোশ উন্মোচনের প্রয়োজন অনুভব করছি। লা মাযহাবীগণ সুন্নাহ প্রতিষ্ঠার নামে আইম্মায়ে কিরাম, সালফে সালিহীন ও তাদের অনুসারীদেরকে কাফির,মুশরিক ও বিদআতী আখ্যা দিয়ে এবং সর্বক্ষেত্রে আল্লাহর সিফাতের ব্যাখ্যা না করে আল্লাহর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সাব্যস্ত করে মানুষদেরকে গুমরাহ বানানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত। আমরা যদি আল্লাহর সিফাতের ব্যাপারে লা মাযহাবীদের মূলনীতি অনুসরণ করি তাহলে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের প্রায় সকল তাফসীরের কিতাব ও হাদীসের ব্যাখ্যাগ্রন্থকে ভ্রান্ত আকীদায় ভরপুর বলতে হবে। কেননা যারাই অপব্যাখ্যাকারীদের অপব্যাখ্যা থেকে বাঁচার উদ্দেশ্যে আল্লাহর সিফাতের ব্যাখ্যা করেছেন অথবা তাফওয়ীদ (সিফাতের জ্ঞান আল্লাহর দিকে সোপর্দ) এর পথ অবলম্বন করেছেন লা মাযহাবীদের মতে তারাই আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের আকীদা বিরোধী। হাজার বছরের অধিককাল থেকে ইমাম আবুল হাসান আশআরী ও ইমাম আবু মানসুর মাতুরিদী (র.) আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের আকীদার ইমাম হিসেবে স্বীকৃত। লা মাযহাবীগণ দুইজন ইমামকেই আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের বিরোধী সাব্যস্ত করেছেন। তাদের অপপ্রচারে অনেকেই নির্ভরযোগ্য তাফসীর ও হাদীসের ব্যাখ্যার কিতাবগুলোর উপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন। এ পরিস্থিতিতে অপপ্রচারকারীদের স্বরূপ উন্মোচন একান্ত জরুরী মনে করছি। আলোচ্য বইটিতে আমরা তাদের মুখোশ উন্মোচনের যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। আশা করি পাঠকবৃন্দ বইটি পাঠ করে আল্লাহর সিফাতসমূহের তাফওয়ীদ ও তা’ওয়ীল সম্পর্কে সঠিক আকীদার পথনির্দেশ পাবেন। -লেখক