আল আযকার--পরিমার্জিত তৃতীয় সংস্করণ (প্রতিটি দুআর আরবি ইবারত হরকতসহ, বাংলা উচ্চারণ ও অনুবাদ দেওয়া আছে। এবং প্রতিটি দুআ ও হাদিসের একাধিক রেফারেন্স ও তাহকিক উল্লেখ করা আছে) লেখক: ইমাম নববি রাহিমাহুল্লাহ তাহকিক: শাইখ ইউসুফ বাদিবি আল আযকার বইটি কী বিষয়ে লেখা কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত দৈনন্দিন সুন্নাত, দুআ,যিকির,রুকইয়াহ ও আমল বিশ্বকোষ। #আল_আযকার বইটি আপনি কেন সংগ্রহ করবেন? বইটি জন্ম থেকে মৃত্যু-মানবজীবনের প্রতিটি ধাপে রাসূল ﷺ বর্ণিত দৈনন্দিন সুন্নত, দুআ,যিকির,রুকইয়াহ ও আমলসমূহ সহজ-সরলভাবে রেফারেন্সের আলোকে সাজানো হয়েছে। . #লেখক: ইমাম মুহিউদ্দীন ইয়াহইয়া আন-নববী রাহিমাহুল্লাহ ( মৃত্যু ৬৩১- ৬৭৬ ) . #ইমাম নববী রাহিমাহুল্লাহ তাঁর পুরো জীবনে যতগুলো কালজয়ী গ্রন্থ রচনা করেছেন তার মাঝে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য একটি গ্রন্থ হল আল আযকার। বইটি কুরআন-হাদিসে বর্ণিত দৈনন্দিন দুআ,যিকির,সুন্নাত,রুকইয়াহ ও আমলসমূহের বিশ্বকোষও বলা হয়ে থাকে। হাদিস চয়নের ক্ষেত্রে ইমাম নববি রাহিমাহুল্লাহ সবচেয়ে প্রশিদ্ধ ও নির্ভরযোগ্য কিতাব সহিহ বুখারি, মুসলিম , তিরমিযি ,নাসাঈ ও আবূ দাউদকে প্রাধান্য দিয়েছে।এবং হাদিসের অন্যান্য প্রশিদ্ধ কিতাব থেকেও দুআ-যিকির ও আমল বিষয়ে সহিহ হাদিসগুলো নিয়ে এসেছেন।এবং প্রতিটি হাদিসের একাধিক রেফারেন্স রয়েছে। #বইটিতে ইমাম নববি রাহিমাহুল্লাহ সহিহ হাদিসগুলো উল্লেখ করেছেন।হাদিস বর্ণনার ফাঁকে ফাঁকে দুআ,যিকির,সুন্নত ও আমল সংশ্লিষ্ট প্রয়োজনীয় মাসআলা-মাসাইলেরও আলোচনা করেছেন। #যেসব বৈশিষ্ট্যসমূহের কারণে "আল আযকার" বইটি অনন্য ও কালজয়ী। ১-বইটির লেখক নিজে হাদিসের অনেক বড় একজন ইমাম-রিয়াযুস সালেহীন এর লেখক, ইমাম মুহিউদ্দীন ইয়াহইয়া আন-নববী রাহিমাহুল্লাহ ( মৃত্যু ৬৩১- ৬৭৬ ) ২-বইটিতে জন্ম থেকে মৃত্যু-মানব জীবনের প্রতিটি ধাপে রাসূল ﷺ বর্ণিত দৈনন্দিন সুন্নাত,দুআ,যিকির, রুকইয়াহ ও আমলসমূহ উল্লেখ করা হয়েছে। ৩-বইটির প্রতিটি দুআ,যিকির ও আমল কুরআনুল করিম ও সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। ৪-প্রতিটি হাদিসের তাহকিক ও বুখারী,মুসলিম,তিরমিজি,আবু দাউদ ও নাসাইসহ হাদিসের একাধিক বড় বড় কিতাবের রেফারেন্স রয়েছে। ৫-প্রতিটি দুআ,যিকির ও আমলের সরল অনুবাদ এবং হরকত ও উচ্চারণ রয়েছে। ৬-দুআ,যিকির ও আমল সংশ্লিষ্ট ফজিলত ও মাসআলা-মাসায়েল উল্লেখ করা হয়েছে। ৭-বইয়ের কোয়ালিটি বইটি মজবুত বক্স,১৫০ গ্রামের জেল কভার,তার উপর ৩৫০ গ্রামের দৃষ্টিনন্দন গ্যাকেট কভার, উন্নতমানের হার্ডকভার বাইন্ডিং,৮০গ্রাম পার্টেক্স কালার কাগজ ও পরিষ্কার ছাপা।এককথায় বইটি খুবই কোয়ালিটিপূর্ণ। লেখক: ইমাম মুহিউদ্দীন ইয়াহইয়া আন-নববী রাহিমাহুল্লাহ ( মৃত্যু ৬৩১- ৬৭৬ ) অনুবাদক মণ্ডলী: মুফতি উবায়দুল্লাহ আসআদ কাসেমি মুফতি মাহবুবুর রহমান খান মুফতি মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম
Title
আল আযকার-প্রিমিয়াম দুই ভলিউমে বক্সসহ পরিমার্জিত তৃতীয় সংস্করণ
তাঁর পূর্ণনাম মুহিউদ্দ্বীন আবু যাকারিয়া ইয়াহইয়া ইবনুশ শায়েখ আবু ইয়াহইয়া মুররি ইবনে হাসান ইবনে হুসাইন ইবনে মুহাম্মদ ইবনে জুম‘আ ইবনে হেযাম আল-হেযামী আন-নববী। ‘মুহিউদ্দ্বীন’ তাঁর উপাধি এবং ‘আবু যাকারিয়া’ হলো কুনিয়াত তথা উপনাম। তাঁর জীবদ্দশায় তিনি এতোটাই প্রসিদ্ধ ছিলেন এবং ইলম ও তাক্বওয়ার মানদণ্ডে এমন সমুন্নত হতে পেরেছিলেন যে, তাঁকে ‘মুহিউদ্দ্বীন মতান্তরে ‘মুহিউস্ সুন্নাহ’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। ৬৩১ হিজরীর মুহাররম মাসে দামেশকের নিকটবর্তী ‘নাওয়া’ নামক স্থানে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। জন্মস্থানের দিকে সম্পর্কিত করেই তাঁর নামের শেষে ‘নাওয়ায়ী’ বা ‘নববী’ উল্লেখ করা হয়। এ ব্যাপারটা স্বতঃসিদ্ধ ও প্রমাণিত যে, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর যেসব বান্দাদের দিয়ে দীন ও মানুষের মহান খেদমত করান, ছোটবেলা থেকেই তাদেরকে সেভাবেই গড়ে তোলেন। ইমাম নববী রাহিমাহুল্লাহ’র ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। শৈশবে থেকেই তিনি ছিলেন আর সব শিশুদের চেয়ে আলাদা। অজপাড়া গ্রামে, নিম্নবিত্ত নিরক্ষর পরিবারে জন্ম নেওয়া সত্তে¡ও তাঁর সবটুকু ঝোঁক ছিলো ইলম অর্জনের দিকে। দোকানদার পিতা চাইতেন, ছেলে তার সাথে দোকানদারী করুক। কিন্তু তিনি পিতার কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে দামেশকের ‘আর-রাওয়াহিয়্যাহ’ নামক প্রতিষ্ঠানে চলে যান ইলমের-অšে¦ষণে এবং আলেমদের সংস্পর্শে থাকার তাড়নায়। এখানে থেকেই তিনি ইলমের সবগুলো শাখায় নিজের উত্তরোত্তর ব্যুৎপত্তি ঘটান। ইমাম যাহাবী রাহিমাহুল্লাহ বলেন, ‘তিনি (নববী) দিন-রাত্রির বেশির ভাগ সময় জ্ঞানার্জনে ব্যয় করতেন। মেধা ও পরিশ্রমের জন্য তাঁকে দিয়ে উদাহরণ পেশ করা হতো।’ সারাদিনে একবার খেতেন। এমনকি পথ চলার সময়টুকুতেও মনে মনে পড়া আওড়াতেন। ৬৫১ হিজরীতে একুশ বছর বয়সে তিনি পিতার সাথে হজ্জ পালন করার জন্য মক্কায় যান। এই সফরকালে তিনি মক্কা-মদীনার শ্রেষ্ঠ আলেমগণের সান্নিধ্যে আসেন এবং হাদীস শাস্ত্রে বিশেষ বুৎপত্তি অর্জন করেন। ইমাম নববী রাহিমাহুল্লাহ যেসব ওস্তাদদের নিকট থেকে জ্ঞানার্জন করেছেন, তাঁদের মধ্যে মুহাম্মদ ইবনে আহমাদ আল-মাকদাসী, ইসমাইল ইবনে ইবরাহীম, আহমদ ইবনে আবদুদ্দায়েম, আবদুর রহমান আল-আন্বারী, ইবরাহীম ইবনে আলী আল-ওয়াসেতী প্রমূখ অন্যতম। ফিকহের ক্ষেত্রে নববী ছিলেন শাফেয়ী মাযহাবের অনুসারী। শুধু অনুসারীই নয়, বরং তিনি ছিলেন মাযহাবের প্রধান বিশ্লেষক ও ইমামদের একজন। ইবনে কাসীর রাহিমাহুল্লাহ বলেন, ‘তিনি ছিলেন শায়খুল মাযহাব এবং তাঁর যমানার শ্রেষ্ঠতম ফকীহ’। যাহাবী বলেন, ‘তিনি ছিলেন মাযহাবের ব্যাখ্যাকারদের শিরোমনি’। তাঁর রচিত ‘রাওদাতুল ত্বালেবীন’কে শাফেয়ী মাযহাবের প্রধানতম ব্যাখ্যাগ্রন্থ ও তথ্যসূত্র হিসেবে গণ্য করা হয়। অধিকাংশ শাফেয়ী আলেমদের মতো ইমাম নববী রাহিমাহুল্লাহও আকীদার ক্ষেত্রে ‘আশ‘আরী’ মতবাদের অনুসারী ছিলেন। যাহাবী, তাজউদ্দীন সুবকী, ইয়াফেয়ী-সহ তাঁর অপরাপর জীবনীকাররা এমনটাই উল্লেখ করেছেন। সহীহ মুসলিমের ব্যাখ্যায় তাঁর রচিত ‘আল মিনহাজ’ গ্রন্থে তিনি আশ‘আরী মতবাদসমূহকে ব্যাপকভাবে স্থান দিয়েছেন। ক্ষণজন্মা এই মহাত্মা বেঁচে ছিলেন মাত্র পয়তাল্লিশ বছর। কিন্তু এই স্বল্প সময়েও আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁকে দিয়ে দীন ও ইলমের যে বিশাল খেদমত করিয়েছেন, তা সত্যিই বিরল। ইলমের প্রায় প্রতিটি শাখাতেই তাঁর রচিত গ্রন্থ রয়েছে, যেগুলো কেয়ামত পর্যন্ত মানুষকে উপকার দিয়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ! বিশেষ করে ‘আল-আরবাঈন আন-নববীয়্যাহ’, ‘রিয়াদুস সালেহীন’ এবং ‘আল-আযকার’ এই তিনটি গ্রন্থ তো সর্বস্তরের মুসলিমের কাছেই সমানভাবে সমাদৃত এবং পঠিত। এছাড়া তাঁর রচিত বিখ্যাত গ্রন্থাবলির মধ্যে অন্যতম হলো, (১) আল-মিনহাজ ফি শারহে মুসলিম ইবনুল হাজ্জাজ; (২) রাওদাতুল ত্বালেবীন ওয়া উমদাতুল মুফতীন; (৩) মিনহাজুল ত্বালেবীন ওয়া উমদাতুল মুফতীন; (৪) আদাবুল মুফতি ওয়াল মুসতাফতি; (৫) তুহফাতু তুল্লাবিল ফাদায়েল; (৬) আত-ত্বিবইয়ান ফি আদাবে হামালাতিল কুরআন। (৭) আত-তাহরীর ফি আলফাযিত তানবীহ; (৮) আল-উমদাহ ফি তাসহিহিত তানবীহ; (৯) আল ইদ্বাহ ফিল মানাসিক; (১০) আত তাইসীর ফি মুখতাসারিল ইরশাদ; (১১) ইরশাদু তুল্লাবিল হাক্বায়েক; (১২) আল-ফাতাওয়া; (১৩) আল মিনহাজ ফি মুখতাসারিল মুহাররার; (১৪) দাকায়েকুল মিনহাজ; (১৫) মুখতাসারু আসাদিল গাবাহ; (১৬) মানাকিবুশ শাফেয়ী; (১৭) মুহেম্মাতুল আহকাম; (১৮) রিসালাহ ফি ক্বিসমাতিল গানাঈম; (১৯) খুলাসাতুল আহকাম; (২০) বুসতানুল আরেফীন। এছাড়া তাঁর রচিত অসমাপ্ত গ্রন্থের সংখ্যাও কম নয়। তন্মধ্যে ‘আল মাজুমু শারহুল মুহায্যাব’ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তাঁর মৃত্যুর পর ইমাম সুবকী রাহিমাহুল্লাহ এবং তারপর শায়েখ মুহাম্মদ নজীব এই গ্রন্থের রচনা সমাপ্ত করেন। এছাড়া ‘জামেউস সুন্নাহ’, ‘শারহুত ত্বানবীহ’, ‘শারহুল ওয়াসিত’, ‘শারহুল বুখারী’, ‘শারহু সুনানি আবু দাউদ’, ‘আল-আহকাম’ প্রমুখ উল্লেখযোগ্য। ৬৭৬ হিজরীর রজব মাসের চব্বিশ তারিখে পয়তাল্লিশ বা ছেচল্লিশ বছর বয়সে এই মনীষী ইন্তেকাল করেন। তাজউদ্দীন সুবকী রাহেমাহুল্লাহ বলেন, ‘তাঁর মৃত্যুতে দামেশক ও তদ্সংলগ্ন শহরগুলো শোকে ডুবে গিয়েছিলো।’ জন্মস্থান ‘নাওয়া’তেই তাঁকে দাফন করা হয়। মহান আল্লাহ তাঁকে এবং তাঁর সকল খেদমতকে কবুল করুন।