কবি ও সংগঠক নীলিমা আক্তারের জন্ম ১৯৭২ সালের ২২ জানুয়ারি সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার আঙ্গুরা গ্রামে। তার পিতা মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস শহিদ মটন মিয়া, মাতা মরহুমা ফাতেমা শহিদ। ২ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে তিনি ৩য়। শৈশব থেকেই তিনি লেখালেখি ও সাহিত্যচর্চার প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন, যদিও তার প্রকাশ ঘটে অনেক দেরিতে। নীলিমা আক্তার তার অসাধারণ মানবিক গুণাবলি নিয়ে সিলেটের সাহিত্যজগতে আবির্ভূত হন ২০০৯ সালের দিকে। প্রথম দিকে রান্নাবান্না বিষয়ক লেখালেখি দিয়ে শুরু করলেও পরবর্তীতে তিনি কবিতা—ছড়া ও ছোটগল্প লিখেছেন নিয়মিত। বলা যায়, খুবই কম সময়ে তিনি নিজের পরিচিতি সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হন। ২০১২ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম কবিতাগ্রন্থ নীলিমার নীলকণ্ঠ। লেখালেখি ও সাংগঠনিক দক্ষতায় নিজের একটা অবস্থান সহজেই করে নেন তিনি। ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে চলে যাওয়ার আগে নীলিমা আক্তার সম্ভাবনাময় একজন লেখক ও সংগঠক হিসেবে নিজেকে উদ্ভাসিত করে তুলেন। সেখানে গিয়েও তার লেখালেখি বন্ধ হয়ে যায় নি। প্রবাসের কঠিন জীবন সংগ্রামের মধ্যেও তার হৃদয় জুড়ে ছিল বাংলাদেশের টান। এদেশের সবুজ প্রকৃতি আর মাটির ভালোবাসা একত্রিত করেছেন তিনি তার বিভিন্ন কবিতায়। মন ছটফট করেছে দেশে আসার ব্যাকুলতায়। নীলিমা তার কবিতায় বলেনÑ‘আবার কবে যাব ফিরে আমার ছোট গাঁয়ে/ গ্রামটি যে মোর কুশিয়ারা নদীর তীরে।’ নিজের ভাষায় কথা বলার আকাঙ্ক্ষা তাকে যেন আকুল করে তোলে। তিনি লিখেনÑ‘হাজার মানুষের ভীড়ে খুঁজি আমি/ একজন বাঙালি/ না, এইতো দেখি সবাই রুপালি আর সোনালি/ হাহাকার হৃদয় খুঁজে একজন বাঙালি।’ এভাবেই তিনি তার মনের কথাগুলো একান্ত নিজের মতো করে বলেছেন এই গ্রন্থের প্রায় প্রতিটি কবিতায়। শব্দে শব্দে আছে মানুষের জয়গান, নারীর জেগে ওঠবার দৃঢ়তা, পাপ—পঙ্খিলতা থেকে মুক্তির প্রার্থনা এবং বিকেলে ভোরের ফুল দেখে আশ্রয় পাওয়ার শান্তি।