বর্ণমালা চিনতে, পড়তে ও বর্ণমালা নিয়ে ছড়া কাটার মতো একটি চমৎকার বই ‘বর্ণের বর্ণালী’। বইটি লিখেছেন প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক ইসমাত মির্যা। বাংলা ভাষায় শুধু কথা বলতে পারলেই কিন্তু তাকে শিক্ষিত বলা হয় না। শিক্ষিত হতে গেলে বলার সাথে সাথে লিখতে পারা, পড়তে পারাও জানতে হবে। আর প্রথমেই তাই বর্ণমালা চিনতে হবে। শিশুদের বর্ণমালা শেখানো কিন্তু খুব একটা সহজ কাজ নয়। এ জন্য অনেক কৌশল অবলম্বন করতে হয়। স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ নিয়ে আলাদা আলাদা ছড়া রয়েছে এ বইটিতে। ১৬ পৃষ্ঠার রঙিন এ বইটির কাগজ এবং বাঁধাই খুবই মজবুত। স্বরবর্ণ নিয়ে লেখা কয়েটি ছড়া হলো―
অ―অশোক বনে ধরলো কুঁড়ি অমল আলোয় উড়লো ঘুড়ি। আ―আমড়া ফুলে ভোমড়া আসে আলতা পেলে আসমা হাসে। ই―ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি এলে পদ্মাতে খুব ইলিশ মেলে। ঈ―ঈগল একে নক্সা করা ঈদের জামার দামটি চড়া! এভাবে প্রতিটি বর্ণ নিয়ে রয়েছে ছড়া। এই ছড়াগুলো সহজেই পাঠ করা যায় এবং মনে রাখা যায়। শিশুশিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো আনন্দ। শিশুরা যদি আনন্দের সাথে পড়তে না পারে তাহলে কিন্তু সে শিক্ষা তাদের খুব বেশি উপকার করতে পারে না। কয়েক দিন পড়েই তারা তা ভুলে যায়। পড়তে ও চিনতে পারলে বর্ণমালাগুলো কিন্তু তারা সহজেই লিখতে পারে। বর্ণমালা যখন শেখা হয় তখন কিন্তু তারা একটা একটা শব্দ চিনতে পারে ও পড়তে পাড়ে। আর মজার বিষয় হলো, সবাই প্রথমে তার নামের বানান লিখতে ও পড়তে চায়। এ ছাড়া ব্যঞ্জনবর্ণ নিয়েও রয়েছে ছড়া। যেমন― ক―কলার কাঁদি কাটবে কাকা কাস্তে কাচির ফলক বাঁকা। খ―খোকন খাবে খৈ ও খেজুর খরগোশটার খয়েরী লেজুর। গ―গয়রা আসে গরুর কাছে গলাতে তার গামছা আছে। ঘ―ঘাটের পাশে সবুজ ঘাসে ঘোর দুপুরে ঘুঘু আসে। বইটির শেষ পৃষ্ঠায় সবগুলো বর্ণমালা ছক আকারে রয়েছে। এখান থেকেও বর্ণমালাগুলো পড়া যাবে। শিশুশিক্ষার স্কুলগুলোতে এ বইটি অবশ্যই রাখা উচিত। কেননা বইটি খুব বৈজ্ঞানিক ও সুচিন্তিতভাবে লিখিত। শিশু-কিশোরদের মনোজগতের কথা চিন্তা করেই ছড়াগুলো লেখা। উপহার হিসেবেও বইটি দেওয়া যেতে পারে সোনামণিদের।