জার্মানি বলতে জার্মান জাতির আবাসভূমিকে বোঝানো হয়। তবে জার্মান জাতি বলতে যা বোঝায় তা অতীতে অনেক ব্যাপক ছিল। খ্রিষ্টপূর্বের রোমান ঐতিহাসিকদের রচনায় জার্মান জাতি ছিল বর্বর, মদ্যসিক্ত ও যুদ্ধপ্রিয়। তাদের ছিল উপজাতিই প্রথমে রোমান ভাষা, ধর্ম, রীতিনীতি আয়ত্ত করে রোমান সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে। অটো ফন বিসমার্ক ১৮ জানুয়ারি ১৮৭১ সালে নতুন রাষ্ট্র জার্মানির জন্ম দেন। ইউরোপীয় রাজনীতিতে ফ্রান্সের শক্তি ও মর্যাদা ক্ষুণ্ন করে জার্মানির প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়। অতঃপর দানবের মতো বিশাল পদক্ষেপে শিল্পজগতে প্রবেশ করে। রাজনৈতিক সাম্রাজ্যবাদ, অর্থনৈতিক সাম্রাজ্যবাদ, সাংস্কৃতিক সাম্রাজ্যবাদ, কৃষি সাম্রাজ্যবাদ ও সমরন্ত্রের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। নেমে আসে প্রথম ও দ্বিতীয় দুইভাগে বিভক্ত হয়- পূর্ব ও পশ্চিম জার্মানি। নির্মিত হয় বার্লিন প্রাচীর। ১৯৯০-এ বার্লিন প্রাচীর ভেঙে দুই জার্মানি এক হয়। জার্মান জনগোষ্ঠী ইউরোপীয় সংস্কৃতিতে অনেক অবদান রেখেছে ও রাখছে। জার্মানিতে অনেক লেখক, শিল্পী, স্থপতি, সংগীতজ্ঞ এবং দার্শনিক জন্মগ্রহণ করেছেন। জার্মানি ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি। জার্মানির সুদীর্ঘ ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সাহিত্য, দর্শন, রাজনীতি, কূটনীতি, আর্থসামাজিক, গণতান্ত্রিক ও মানবিক দিকগুলো এই গ্রন্থে বিশদভাবে আলোচনা করা হয়েছে। বাংলা ভাষায় জার্মানির বিবর্তনের ইতিহাস সংক্রান্ত প্রথম পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ হিসেবে এটি একটি উল্লেখযোগ্য ও চমকপ্রদ দলিল।