ইংরেজি নতুন বছরের শুভেচ্ছা। বছরের শুরুতেই লেখক-পাঠকের দুয়ারে হাজির হলো গল্প বিষয়ক পত্রিকা ‘গল্পকার’। এতে শুধু গল্প এবং গল্প বিষয়ক লেখালেখি ছাড়াও থাকছে বাংলা সাহিত্য ও বিশ্বসাহিত্যের নানান বিষয়। বাংলা সাহিত্যের গর্ব ছোটগল্প। আমরা ভিনদেশি সাহিত্যের সঙ্গে পরিচিত হয়ে আসছি ইংরেজি ভাষার মাধ্যমে। তাই ইংরেজি সহিত্যকেই আমরা বিশ্বসাহিত্যের মর্যাদা দিয়ে থাকি। সামগ্রিক বিবেচনায় আমাদের বাংলা ছোটগল্পের সমৃদ্ধি ও বিকাশ বিশ্বের অনেক ভাষার সাহিত্যের চেয়েও উন্নত। আমাদের বিখ্যাত লেখকদের প্রায় সকলেই পাঠকদের সাথে পরিচিত হয়েছেন ছোটগল্পের মাধ্যমে। আর বাংলা ছোটগল্পের এই ধারাটির যাত্রা শুরু হয়েছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হাত ধরেই। একই সাথে ছ্টোগল্পে আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের অবদান অনস্বীকার্য। আধুনিক বাংলা ছোটগল্পের সৃষ্টি হয় মূলত তিরিশের দশকে। আর তা পরিপূর্ণতা পায় চল্লিশের দশকে এসে। সেই অভিযাত্রা এখনও অব্যাহত রয়েছে এবং যতদিন পর্যন্ত বাংলা ভাষা বেঁচে থাকবে ততদিন চলবে। তিরিশ ও চল্লিশের দশকের উল্লেখযোগ্য গল্পকার হলেন প্রেমেন্দ্র মিত্র, জগদীশ গুপ্ত, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, বনফুল, সমরেশ বসু, বিমল কর, নরেন্দ্র নাথ মিত্র, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্, শওকত ওসমান, শাহেদ আলী, আবু রুশদ প্রমুখ। ১৯৪৭ এ দেশ বিভাগের পর ঢাকা বাংলা সাহিত্যের দ্বিতীয় রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়। সেই সময় থেকে নতুন উদ্দীপনায় গল্প লিখতে থাকেন আলাউদ্দীন আল আহমদ, হাসান হাফিজুর রহমান, জহির রায়হান, মর্তুজা বশীর, সৈয়দ শামসুল হক, রাজিয়া খান, আল-মাহমুদ, রাবেয়া খাতুন, শওকত আলী, মকবুলা মঞ্জুর, হাসান আজিজুল হক, আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী, হাসনাত আব্দুল হাই, আহমদ ছফা, সেলিনা হোসেন, হুমায়ূন আহমেদ, রফিক আনোয়ার, ইমদাদুল হক মিলন, আনিসুল হক, ফরিদা হোসেন, নাসরিন জাহান প্রমুখ। আজ যারা অক্লান্তভাবে ছোটগল্প রচনায় স্বাক্ষর রেখে যাচ্ছেন ভবিষ্যতে তাঁদের ভিতর থেকে উঠে আসবেন আগামী দিনের বিখ্যাত বহু লেখক। সাহিত্যে সাফল্যই একমাত্র লক্ষবস্তু নয় বরং সাহিত্য চর্চার ধারাবাহিকতা রক্ষাও লেখকদের দায়িত্ব। সমাজে পরিচিত লেখকদের পাশাপাশি নতুন লেখক যারা সম্পূর্ণ নিজস্বতা নিয়ে উপস্থিত হন তাদের জন্যই আমাদের এই আয়োজন। লেখক-পাঠকের মেলবন্ধন তৈরিতে ‘গল্পকার’ যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে আমাদের বিশ্বাস।
মুহাম্মদ মহিউদ্দিন বাংলাদেশের একজন ঔপন্যাসিক, গল্পকার ও নাট্যকার । তিনি ইংরেজি সাহিত্যে এমএ এবং নরওয়ের বৃত্তি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে জার্নালিজম, মিডিয়া এবং কমিউনিকেশনে এমএসএস ডিগ্রি অর্জন করেন। তার প্রথম উপন্যাস নিশাচর আবেদ আলী' ২০০১ সালে অনুর্ধ্ব ৩০ বর্ষসেরা লেখক হিসেবে জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার পায়। রাষ্ট্রপতি বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন। বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম কেন্দ্রে বিভিন্ন অনুষ্ঠান পরিচালনা ও উপস্থাপনার মাধ্যমে মুহাম্মদ মহিউদ্দিনের লেখালেখি জগতে প্রবেশ । বাংলাদেশের কিংবদন্তি নাট্যব্যক্তিত্ব আব্দুলাহ আল-মামুন ও মুহাম্মদ মহিউদ্দিনের যৌথ রচনায় বাংলাদেশের বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে ধারাবাহিক ও খণ্ডনাটক প্রচারিত হয়েছে। দেশের জাতীয় ও আঞ্চলিক দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হচ্ছে তার লেখা গল্প ও উপন্যাস ।। তিনি আন্তর্জাতিক লেখক সংগঠন 'পেন'-এর বাংলাদেশ শাখার বর্তমান সাধারণ সম্পাদক। তিনি বাংলা ভাষার একমাত্র গল্পবিষয়ক মাসিক পত্রিকা ‘গল্পকার'-এর সম্পাদক ।। মুহাম্মদ মহিউদ্দিনের অন্যান্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও প্রকাশক নিশাচর আবেদ আলী (জ্ঞানকোষ প্রকাশনী)। নিশাচরের দিবাযাত্রা (জ্ঞানকোষ প্রকাশনী) মরীচিকা (অনন্যা) ছারপােকা (অ্যাডর্ন)। লাশকাটা ঘর (অ্যাডর্ন) 'দশচক্রে ভগবান ভূত (ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ) জেলকন্যার ডায়েরি (অনন্যা) মেইল ট্রেনে আবেদ আলী (দি ইউনিভার্সেল একাডেমী)। বরেণ্য লেখকদের প্রথম বই প্রকাশের গল্প (গল্পকার)। বাবা আছে বাবা নেই (বেহুলা বাংলা)