লাতিন সাহিত্য নিয়ে বাঙালি পাঠকের আগ্রহ ও সচেতনতার ইতিহাস ষাট বছর পেরিয়ে গিয়েছে। পাবলো নেরুদার কবিতা সংকলন প্রকাশ করলেন সুভাষ মুখোপাধ্যায় এবং গেভারা নিহত হবার পরে চে গেভারার ডায়েরি গত শতকের সাতের দশকে। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত লাতিন সাহিত্যিকদের বেশ কয়েকজন বিরাট মাপের লেখকের লেখা নিয়ে পাঠক পরিচিত হলেন। এঁদের মধ্যে লোরকা, পাস, নেরুদা, মার্কেস বিশেষ গুরুত্ব পেলেও মহিলাদের মধ্যে প্রায় কোনো নামই শোনা যায়নি। ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর নাম যতখানি রবীন্দ্রনাথের বিজয়া হিসেবে বিখ্যাত তাঁর সাহিত্য সম্বন্ধে পাঠক একেবারেই অনবহিত, কেননা অনুবাদ তাঁকে করাই হয়নি। যদিও তিনি মূলত প্রাবন্ধিক ছিলেন কিন্তু তাঁর বোনেদের মধ্যে একমাত্র সাহিত্যিক সিলভিনা ওকাম্পোর কথা বাঙালি জানতেই পারেনি। অথচ বোরখেস, সিলভিনা ও বিয়ই কাসারেস ছিলেন এক মহান ত্রয়ী কলম। যাঁরা আর্জেন্টিনার বিংশ শতকের সাহিত্যে একেবারে শ্রেষ্ঠ সারিতে পড়েন। ঠিক এভাবেই চিলের ইসাবেল আইয়েন্দেকে ইংরেজি অনুবাদে খুব সামান্য পড়া হলেও স্প্যানিশ থেকে বাংলায় প্রায় করাই হয়নি। আচ্ছা হন্ডুরাসের মারিয়া এউখেনিয়া রামোসকে চিনতে হবে না! সেন্ট্রাল আমেরিকার সাহিত্য একমাত্র মিগেল আস্তুরিয়াস বা আলেখো কারপেন্তিয়র ছাড়া কাউকেই তো বাঙালি চেনেনি আজ পর্যন্ত। দেশে দেশে নারীর কলমের মাধ্যমে লাতিন ও স্পেনীয় সংস্কৃতিতে চেনার প্রয়াস বাংলা ভাষায় এর আগে সম্ভবত হয়নি।