ফ্ল্যাপে লিখা কথা প্রগতি ও আধুনিকতার পথ ধরে রক্তস্নাত বাংলাদেশ যেভাবে যাত্রা শুরু করেছিল, তা যদি বাধাহীনভাবে অব্যাহত থাকতো, তাহলে আমাদের উন্নয়নের ইতিহাস আজ হতে পারতো এতদঞ্চলের আধুনিক মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড বা ইন্দোনেশিয়ার মত। কারণ আধুনিক বিশ্বায়নের যুগে অগ্রগতির ধারাকে বেগবান ও চলমান রাখার জন্য যে ধরনের রাষ্ট্রীয় দর্শন ও আদর্শের প্রয়োজন ছিল তা সমগ্র জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল একাত্তরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে। কিন্তু পঁচাত্তরের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের পর স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের সকল অর্জন ও গৌরব হয় ভুলণ্ঠিত। একের পর এক সামরিক স্বৈরশাসক, আবার কখনও গণতন্ত্রের মুখোশ স্বাধীনতা বিরোধী রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে আধুনিক ও প্রগতির যাত্রাকে করেছে ব্যহত ও বাধাপ্রাপ্ত। তারই কুফল হিসাবে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি থেকে পুরো দু’বছর দেশ শাসন করেছিল একটা সেনা কর্তৃত্বাধীন তত্ত্ববধায়ক সরকার। প্রায় পুরো সময়টা জুড়েই ছিল জরুরি আইন, যার উদাহারণ বিরল। অন্ধকারচ্ছন্ন ও শ্বাসরুদ্ধকর একটি পরিস্থিতিতে সমগ্র জাতির মধ্যে বিরাজ করছিলো এক প্রকার বিভ্রান্তি ও অনিশ্চয়তা। জনগণের প্রত্যাশা, হতাশা, ক্ষোভ ও তৎকালীন সরকারের ব্যর্থতা ও অর্জনের বিবরণ পাওয়া যাবে এই গ্রন্থে। জাতীয় ঐক্য কিভাবে বিনষ্ট হয়েছে, আমাদের শ্রেষ্ঠ অর্জনগুলি ও ২০০৭-২০০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে রচিত মোট ৩৮ টি নিবন্ধ সংযোজিত হয়েছে এখানে। সমসমায়িক বিষয় নিয়ে যেমন লেখা আছে, তেমনি আছে জাতীয় মৌলিক বিষয় নিয়ে কিছু রচনা।