বিদেশী জটিল ভাষায় লিখিত নির্দিষ্ট অর্থবোধক ডাক্তারী শব্দ পরিভাষাসমূহ আমাদের ছাত্র ও পাঠকদের সাহায্য করে না। কখনও শব্দসমূহের সঠিক অর্থের স্থলে অন্য অর্থ গ্রহণ করা হয় এবং বিভিন্ন অর্থবোধক শব্দসমূহকে মিশিয়ে ফেলা হয়। না বুঝে পাঠককে তখন অনেক বিষয় মুখস্থ করতে হয়। ফলে ইহাদের সঠিক তাৎপর্য উপলব্ধি করা সহজ হয় না। রোগীর এক বা একাধিক লক্ষণের মধ্যে প্রধান লক্ষণটিকে বেঁছে নিয়ে তা যতগুলো রোগ থেকে দেখা দিতে পারে- এমন সকল রোগগুলি একত্রে বর্ণনা করা হয়েছে। এই ক্লিনিক্যাল পদ্ধতি এই পুস্তকসমূহের একটি বিশিষ্ট দিক যা দিয়ে নির্দিষ্ট রোগটি নির্ণয় করা সহজ হয়েছে। যে সকল ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয় করার জন্য রক্ত, মল-মূত্র ইত্যাদি পরীক্ষা করা অপরিহার্য ঐ সকল ক্ষেত্রে ইহাদের বিস্তারিত বিবরণ ও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি রোগের জন্য অদ্যাবধি আবিষ্কৃত ঔষধপত্র সমন্বিত বিস্তারিত চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র দেওয়া হয়েছে। তিন খন্ডের এই পুস্তক সমূহে ব্যবহৃত ঔষধগুলি এক স্থানে শ্রেণীবদ্ধ করে ইহাদের প্রয়োগক্ষেত্র সমূহের বর্ণনা, কি ঔষধ কোন মাত্রায় কিভাবে ব্যাবহার করবেন তার বর্ণনাও দেওয়া হয়েছে। পাঠককে জানতে হবে কোন ব্যাধিতে কোথায় গেলে কি সাহায্য পাওয়া যাবে, চিকিৎসা শাস্ত্রে মডার্ণ মেডিসিন-এর তিন খন্ড বইয়ে এ সম্বন্ধে কিছু তথ্য সন্নিবেশিত হয়েছে। এই তিন খন্ড বই পাঠ শেষে মেডিকেল কলেজের ছাত্রছাত্রী এবং উপজেলা ও ইউনিয়ন সাব-সেন্টার পর্যায়ে তথা গ্রামে গ্রামে যে সকল সাধারণ চিকিৎসা সেবক রয়েছেন তারা সযতেœ রোগের অভিযোগ ও লক্ষণ পর্যবেক্ষণ করার পর রোগী পরীক্ষা করে সম্ভাব্য রোগটি কি তা স্পষ্ট বুঝতে সমর্থ হবেন এবং চিকিৎসা ব্যাবস্থাপনা করতে সক্ষম হবেন।
ডা. মাহমুদ হাসান ঢাকা মেডিকেল কলেজের স্নাতক (১৯৮৪) এবং সরকারী (বিসিএস) পদে নানা হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার হিসেবে তিনি দ্বায়িত্ব পালন করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজে এসিষ্টান্ট রেজিষ্ট্রার (সিএ) পদে কর্তব্যরত থাকাকালে ১৯৯২ সালে জাপান সরকার তাকে উচ্চতর শিক্ষার জন্য মনোনয়ন দিলে ডা. হাসান জাপানের কানাযাওয়া ইউনিভার্সিটিতে গবেষণা ফেলো হিসেবে যোগ দেন। ১৯৯৩-এ পিএইচডি কোর্সে অংশ নেবার যোগ্যতা অর্জন করে ১৯৯৭-এ নিউরসার্জারীতে উচ্চতর প্রশিক্ষণসহ পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন। একই বছর আমারিকার বষ্টনের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালে ফেলো পদে নিয়োগ দেন। ১৯৯৮-এ কংগ্রেস অব নিউরোলজিকাল সার্জন্স (CNS) ডা. হাসানকে ইন্টারন্যাশনাল ফেলোশীপ এওয়ার্ড প্রদান করে এবং তিনি ফিনিক্সের ব্যারো নিউরলজিক্যাল ইন্সটিটিউটে (BNI) ফেলো পদে যোগ দেন। ১৯৯৯ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্বল্পকালীন চিকিৎসা সেবা দেবার পর আমেরিকার অ্যারিজোনা ইউনিভার্সিটি হাসপাতাল ডা. হাসানকে ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টারে পূর্ণ আবাসিক সার্জনের দ্বায়িত্ব দিতে আগ্রহ প্রকাশ করায় ২০০০ সালে তিনি পুনরায় আমেরিকায় ফিরে যান। ২০০৫ সালে ডা. হাসান জরুরী ভিত্তিতে সৌদি আরবে কিং খালেদ সামরিক হাসপাতালে নিউরোসার্জনের প্রয়োজনে সাড়া দিয়ে দ্বায়িত্ব গ্রহণ করেন। অতঃপর ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রায় এক যুগ কাল রয়্যাল কমিশন হাসপাতাল ও ডাঃ সোলায়মান আল-হাবিব হাসপাতাল সহ সৌদি আরবের শীর্ষ স্থানীয় হাসপাতালে এবং কাতারের হামাদ জেনারেল হাসপাতালে কন্সাল্ট্যান্ট নিউরোসার্জনের দ্বায়িত্ব পালন শেষে বাংলাদেশে ইম্পালস হাসপাতালে সিনিয়র কন্সাল্ট্যান্ট নিউরোসার্জনের পদে যোগ দেবার আমন্ত্রণ গ্রহণ করে দেশে ফেরেন। বর্তমানে ডা. হাসান অধ্যাপনার দ্বায়িত্ব সহ চিকিতসাশাস্ত্র বিষয়ে পুস্তক রচনা সহ নানা প্রকাশনার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করার জন্য অ্যারিজোনার ATSU হেলথ সায়েন্স ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।