সাইদুল ইসলাম। মাটি ও মানুষের কবি। প্রীতি আর স্মৃতির নানান রঙে চমকিত কবির নস্টালজিয়া। প্রকৃতির নিবিড় আলিঙ্গনে বেড়ে ওঠা কবির কবিতায় গভীর মমতায় চিরপ্রশান্তির ছায়াসুনিবিড় পল্লীগ্রামের জীবনচিত্র অঙ্কিত হয়েছে। প্রকৃতিপ্রেমিক কবি নিসর্গরূপের মোহনীয়তায় মানুষের ভালোবাসা অনুভব করেন। মানুষকে ভালোবাসার মধ্য দিয়েই তিনি তাই সৃষ্টিকর্তার নৈকট্য লাভে ব্রতী। গ্রামবাংলার সরল চিত্তকে প্রসারিত করেন তিনি জীবন সাধনায়। এমনিভাবেই জীবন সংগ্রামের মর্মমধুর বন্দনা অনুরণিত হয় সাইদুল ইসলামের কবিতায়। বস্তত, কবিতা এমন এক শিল্প, এতে বিরহ-যন্ত্রণা বা দুঃখের ভেতর থেকেও অনাবিল আনন্দ-সুখ আবিষ্কৃত হয়। এ সুখ কেবল উপভোগ করা যায়, কিন্তু স্পর্শ করা যায় না। তাই কবিতার সুখ বড়ই পবিত্র। এমন সুখের সন্ধান আর অন্য কিছুতেই মিলে না। কবির সঙ্গে পাঠকও কবিতার সুখের প্রস্রবণে সমবিভ্যহারে অবগাহন করে। 'কবির অকৃত্রিম লিরিক অনুভূতি' পবিত্র সুখের ঝিলিক ছড়িয়ে পাঠকহৃদয়কে দারুনভাবে উজ্জীবিত করে, উচ্ছ্বসিত করে। আমার বিশ্বাস, কবিদের বয়স ও জীবনাভিজ্ঞতার সঙ্গে সঙ্গে কবিতাও অনেক সম্মৃদ্ধ হয়ে ওঠে। গ্রন্থে আমরা যা কেবল আওরাই, সময়ের চলমানতায় প্রকৃতি তার পাতায় পাতায় তা আমাদেরকে নিখুঁতভাবে শেখায়। ফলে দিন যতই অতীত হয়, মানুষের 'শিখন' (শিক্ষণ নয়) আর কবিদের 'লিখন' ততই সম্মৃদ্ধ হয়। বইয়ের শিক্ষার চেয়ে বাইরের অভিজ্ঞতার উৎকর্ষ (শ্রেষ্ঠত্ব) এখানেই। সাইদুল ইসলাম একজন সম্মৃদ্ধ অভিজ্ঞতার কবি। সুশিক্ষিত এবং মার্জিত ব্যক্তিত্বের অধিকারী তিনি। তাঁর কাব্যগ্রন্থ 'কালজয়ী মহাপুরুষ' পাঠকসমাজে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হবে বলেই বিশ্বাস করি। কবির জন্য শুভকামনা। -- নঈম শামীম খান কবি ও কথাসাহিত্যিক।