প্রযুক্তিনির্ভর আজকের বিশ্বব্যবস্থায় প্রতিনিয়ত পরিবর্তন আসছে। জীবনের সকল অঙ্গনে এ পরিবর্তনের বহুমাত্রিক প্রভাব পরিদৃষ্ট হচ্ছে। মানুষ ক্রমশ প্রযুক্তির সাথে শৃঙ্খলিত হয়ে ভার্চুয়াল জগতের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে যাচ্ছে। ইন্টারনেটের কল্যাণে পৃথিবীর দূরত্ব সংকুচিত হয়ে পরিণত হয়েছে বিশ্বগ্রামে। বিশ্বের একপ্রান্তে থাকা মানুষ অপর প্রান্তের মানুষের সাথে ন্যূনতম সময় ও খরচে যোগাযোগ স্থাপন করে অভিন্ন মানবগোষ্ঠীতে রূপ নিচ্ছে। এতে করে তাদের পারস্পরিক আদান-প্রদান ও সম্পর্কে বহু বৈচিত্র্য ও ব্যাপকতা এসেছে। ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে মানুষ বৈবাহিক ও সামাজিক সম্পর্ক সম্পাদন করছে। এসব ক্ষেত্রে চুক্তিরত উভয় পক্ষের স্থানগত ঐক্য না থাকলেও ইন্টারনেটের মাধ্যমে তারা পরস্পরকে শুনার ও প্রত্যক্ষ করার সুযোগ পাচ্ছে। অনুরূপভাবে তালাক ও অন্যান্য বিচ্ছেদ এ মাধ্যমে হচ্ছে। এই চুক্তিসমূহের বৈধতা আর এ সম্পর্কে ইসলামী শরী‘য়াহর বক্তব্য নিয়ে অনেকের কাছে অস্পষ্টতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে এসব চুক্তির ধরন, বৈচিত্র্য ও ব্যাপক বিস্তার বিষয়টিকে যেমন জটিল করেছে; তেমনিভাবে এ ব্যাপারে ইসলামী শরী‘য়াহর দৃষ্টিভঙ্গি, ক্লাসিক্যাল ফিকহে এর নজির সন্ধান ও সমসাময়িক শরী‘য়াহ স্কলারদের সুচিন্তিত মতামত উপস্থাপন করার প্রয়োজনীয়তা তীব্রভাবে অনুভূত হচ্ছে। তাই এ গবেষণাকর্মটিতে উক্ত বিষয়সমূহ ইন্টারনেটের মাধ্যমে সম্পাদনের সম্ভাবনা, স্বরূপ, শর‘য়ী গ্রহণযোগ্যতা ও এতদসংক্রান্ত বিধি-বিধান সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আশা করছি, বিষয়সমূহ দালিলিক প্রমাণসহ আলোচনা, পর্যালোচনা, বিশ্লেষণ, মূল্যায়ন ও নিরীক্ষা, ইসলামী ফিকহ শাস্ত্রের মৌলিক এবং গ্রহণযোগ্য আধুনিক গ্রন্থাবলির সাহায্যে স্বীকৃত গবেষণা রীতি-নীতির আলোকে তুলনামূলক ফিকহ পদ্ধতিতে ইসলামী সমাধান পাওয়া যাবে ইন শা আল্লাহ। তাছাড়া ইন্টারনেটের প্রকৃতি পরিচিতি, সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে ধারণার পাশাপাশি এ বিষয়ক ঝুঁকি ও নিরাপত্তা সম্পর্কে জানতে পারবে।