"সুচিত্রার কথা" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: রহস্যের অন্য নাম সুচিত্রা সেন। রুপােলি পর্দার কিংবদন্তি নায়িকা, বাংলা চলচ্চিত্রের গ্ল্যামার-হিরােইন। তাকে নিয়ে প্রচারের শেষ নেই, অন্ত নেই অপপ্রচারের। বহু রঙিন কল্পনা তাঁকে কেন্দ্র করে, বহু জটিল জল্পনা। অথচ যাঁকে নিয়ে এত কিছু, সেই সুচিত্রা সেন নির্বিকার। তার নিজের ভাষায়, তিনি একা’, কিন্তু ‘একলা’নন। জনারণ্যে তাকে দেখাই যায় না, অথচ জনমানসে। সতত উপস্থিতি তার কল্পনায় তিনি কারও প্রেয়সী, কারও দুহিতা, কারও-বা জননী। কাছের মানুষ যারা, তারা জানেন, সুচিত্রা সেন আপন মনােবিহারিণী।সেই কবে মহানায়কের সঙ্গে জুটি বেঁধে তিনি নিজেও হয়ে উঠেছিলেন মােহময়ী মহানায়িকা। উত্তমকুমার জুটি থেকে ছুটি নিয়েছেন, তিনি নিজেও সরে এসেছেন রুপােলি পর্দা থেকে। তবু এখনও তার মােহিনী মায়ায় উদ্বেল আপামর জনসাধারণ। এখনও তাঁকে ঘিরে অদম্য কৌতূহল, অন্তহীন গুজব। এক ঝলক তাকে দেখার অচরিতার্থ কামনা। অথচ এই শহর কলকাতাতেই তার বাড়ি। কোলাহলমুখর সমুদ্রে যেন বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপ। সেই দ্বীপেরই নির্জন দ্বীপবাসিনী স্বেচ্ছা-নির্বাসিতা সুচিত্রা সেন। কেউ বলেন, তিনি সন্ন্যাসিনী। কারও ধারণা, তিনি শুধুই পূজার্চনা নিয়ে থাকেন। কিন্তু ঠিক কী ধরনের জীবন যাপন করেন এখন সুচিত্রা সেন? কেন করেন? কী হতে চেয়েছিলেন তিনি? কী হলেন, কী ভাবেই বা হলেন? এই প্রথম সুচিত্রা সেনের সেই সমূহ অজ্ঞাত কথা শােনালেন গােপালকৃষ্ণ রায়। তিনি শুধু কাছ থেকেই দেখেননি সুচিত্রা সেনকে, দেখেছেন একজন অতি বিশ্বস্ত আপনজনের দৃষ্টির আলােকে। সুচিত্রা সেনের ব্যক্তিজীবন ও নায়িকাজীবনের গভীর অন্তরাল থেকে শ্রীরায় উদ্ধার করে এনেছেন। কৌতুহলকর ও অন্তরঙ্গ বহু অজানা তথ্য, চমকপ্রদ বহু কাহিনী, বহু বিভ্রান্তিকর অপপ্রচারের প্রকৃত জবাব। সেই প্রথম দিন থেকে আজ পর্যন্ত ছড়ানাে। সুচিত্রা সেনের কথা এই বইতে। এক অপরূপ কন্যা থেকে বধূ, বধূ থেকে নায়িকা, নায়িকা থেকে কিংবদন্তি তারকা হয়ে-ওঠা এবং একইসঙ্গে। স্টুডিয়াের ব্যস্ত আলােকজ্জ্বল জীবন থেকে নিঃশব্দে সরে এসে এখনকার নিভৃত জীবনযাপনের, তার সংগােপন খেদ ও যন্ত্রণার, সংঘাত ও শান্তির এক অনবদ্য কথালেখ্য এই মহাগ্রন্থ। পাতায় পাতায় দুর্লভ ফোটো।