হিটলারের যুদ্ধ বা রণনীতি সম্পর্কিত আলোচনায় আগাথা ক্রিস্টির 'ফিলোমেল কটেজ' নামে গল্পটি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। ফিলোমেল কটেজের হত্যাকারী শুধুমাত্র কথা বলে তার শিকারের মনে এমন বিষয় আতঙ্কের সৃষ্টি করে যে তার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। হত্যাকারী কোনো অস্ত্র ব্যবহার করেনি, নিহত ব্যক্তির শরীর স্পর্শ করেনি। খুনির বিরুদ্ধে পুলিশের কিছু করণীয় নেই। কেননা খুনের কোনো প্রমাণ নেই, থাকতে পারে না। এরই নাম পরোৎকৃষ্ট হত্যা বা Perfect murder বা সব 'স্বভাব' ঘাতকের স্বপ্ন। হিটলারও এই পরোৎকৃষ্ট হত্যা বা যুদ্ধের স্বপ্ন দেখেছিলেন। বিনা যুদ্ধে একটিও সৈন্যক্ষয় না করে তিনি শত্রুদের জয় করে নিতে চেয়েছিলেন। তিনি রাউসনিঙকে বলেছেন, “শত্রুর মানসিক বিভ্রান্তি, অনুভূতির স্ববিরোধিতা, অনিশ্চয়তা, আতঙ্ক, এই হলো আমাদের অস্ত্র।” এই অস্ত্র ব্যবহার করে শত্রুর মনোবল ভেঙে দিয়ে তাকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করাই হিটলারের লক্ষ্য ছিল। হিটলারের রণনীতিতে সামরিক অভিযান বা যুদ্ধের স্থান প্রাথমিক নয় । বিজয়ের অন্য সব অস্ত্র নিঃশেষিত হয়ে যাওয়ার পর যুদ্ধ এড়াবার আর যখন কোনো উপায় থাকত না, একমাত্র তখনই হিটলার সৈন্যবাহিনীকে পাদপ্রদীপের সামনে নিয়ে আসতেন। মিউনিখ পর্যন্ত বিনা রক্তপাতে পরপর রাজ্যগ্রাস হিটলারের পরোৎকৃষ্ট যুদ্ধের আদর্শ দৃষ্টান্ত। অস্ট্রিয়ার সঙ্গে জার্মানির সংযুক্তির আগে শুসনিগের সঙ্গে হিটলারের সাক্ষাৎকারের যে বিবরণ পাওয়া যায় তা অবিকল ফিলোমেল কটেজের সাক্ষাৎকারের মতো। কিন্তু পোল্যান্ডে যখন যুদ্ধ শুরু হলো তখনো হিটলার প্রথম বিশ্বযুদ্ধের দীর্ঘস্থায়ী পরিখা যুদ্ধের কথা ভাবেননি। হিটলার জানতেন, দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধে জার্মানির বিজয়ের সম্ভাবনা বিশেষ নেই। তাই তিনি পুরোপুরি আক্রমণাত্মক ব্রিৎসক্রীপ রণনীতি বেছে নিয়েছিলেন। নাৎসি বাহিনী কোনো কোনো বিন্দুতে শত্রুর রক্ষাব্যূহ ছিন্ন করে শত্রুর সঙ্গে সম্মুখ সমর এড়িয়ে বিদ্যুৎগতিতে দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করবে। শত্রুর যোগাযোগব্যবস্থার শৃঙ্খল সম্পূর্ণ ছিন্ন করে দেবে এবং তারপর ঝাঁপিয়ে পড়বে শত্রুর কমান্ড হেড কোয়ার্টার্সে। এতে শত্রুর মস্তিষ্ক পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যাবে। শত্রুসেনা অক্ষত থাকলেও তাদের অবস্থা হবে অন্ধকারে। দিশেহারা একদল মুষিকের মতো। অতএব, শত্রু বাহিনী অক্ষত থাকা সত্ত্বেও শত্রুদেশ পরাজিত হবে। এই রণনীতিই রিৎসক্রীগ। মেজর জেনারেল ফুলার এই রণনীতিতে বলেছেন attack by paralyzation (পক্ষাঘাতের দ্বারা আক্রমণ)। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে শত্রুর রক্ষাব্যূহ ছিন্ন করার অসামর্থ্যই পরিখা যুদ্ধকে দীর্ঘস্থায়ী করেছিল। যুদ্ধের শেষ দিকে শত্রুর রক্ষাব্যূহ ছিন্ন করার জন্য মিত্রপক্ষট্যাঙ্কের সার্থক ব্যবহার করেছিল। দুই যুদ্ধের অন্তর্বর্তী যুগে ব্রিটিশ ও ফরাসি সমরতাত্ত্বিকেরা বারবার বলেছিলেন যে ট্যাঙ্ক এক মহাসম্ভাবনাময় আক্রমণাত্মক রণনীতির পথ খুলে দিয়েছে। ব্রিটিশ ও ফরাসি সমর দপ্তর এদের কথায় কান দেয়নি। কিন্তু জার্মানিতে জেনারেল গুডেরিয়ান ও হিটলার এদের কথার অর্থ তৎক্ষণাৎ বুঝতে পেরেছিলেন। তাঁরা বুঝতে পেরেছিলেন, যে, শত্রুর রক্ষাব্যূহ ছিন্ন করার জন্য জার্মানি যে শক্তিশেল খুঁজছিল, ট্যাঙ্কের এক বিশেষ ধরনের ব্যবহারের মধ্যে তা পাওয়া যাবে। শত্রুর রক্ষাব্যূহ ছিন্ন করার সমস্যার Deux ex machina হয়ে এলো ট্যাঙ্ক ও গোত্তা খাওয়া বোমারু বিমানের ভয়ংকর যোগসাজস। কিন্তু মনে রাখতে হবে যে ট্যাঙ্ক ও বোমরু বিমান নয়-ট্যাঙ্ক ও বোমারু বিমান ফ্রান্স এবং ইংল্যান্ডের কম ছিল না-এই দুটি অস্ত্রের বিশিষ্ট ব্যবহারই আসল কথা। আকস্মিকতা, দ্রুতি, সবচেয়ে কম প্রত্যাশিত রেখায় আক্রমণ, অস্ত্রশস্ত্রের অভিনব ব্যবহার, শত্রুসেনার সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধ এড়িয়ে পশ্চাতে অবস্থিত শত্রুর কমান্ড মস্তিষ্ককে অবশ করে দেওয়া-এই হলো রিৎসক্রীগের মূল কথা ।
William Lawrence Shirer (February 23, 1904 – December 28, 1993) was an American journalist and war correspondent. He wrote The Rise and Fall of the Third Reich, a history of Nazi Germany that has been read by many and cited in scholarly works for more than 50 years. Originally a foreign correspondent for the Chicago Tribune and the International News Service, Shirer was the first reporter hired by Edward R. Murrow for what would become a CBS radio team of journalists known as "Murrow's Boys". He became known for his broadcasts from Berlin, from the rise of the Nazi dictatorship through the first year of World War II (1940). With Murrow, he organized the first broadcast world news roundup, a format still followed by news broadcasts. Shirer wrote more than a dozen books besides The Rise and Fall of the Third Reich, including Berlin Diary (published in 1941); The Collapse of the Third Republic (1969), which drew on his experience living and working in France from 1925 to 1933; and a three-volume autobiography, Twentieth Century Journey (1976 to 1990).