নদীর নাম আরপাংশা। নদী তো নয় যেন মাতাল এক ডাইনি। জোয়ারে যখন ফুঁসতে ফুঁসতে সাগর থেকে উঠে আসে মনে হয় যেন লাখ লাখ অজগর সাপ এগিয়ে আসছে। সত্যি অজগর যে আসে না তাও নয়। এ নদীর প্রতি বাঁকে বাঁকে দুচারটা অজগরের দেখা জোয়ার ভাটায় মিলবেই। এ এলাকায় অবশ্য কেউ এদেরকে অজগর বলে না, বলে ময়াল। নদীর দুকূলে ছাগল, গরুর বাছুর মানুষের বাচ্চা যখন যা সুযোগ মতো পায়- টুপ করে গিলে ফেলে। এ ময়ালরা নাকি আবার ভারি রসিক। নদীর পানিতে ভেসে চলতে চলতে কখনো বোকা সোকা মোটা একটা কুমিরকে দেখলেই হলো। পানির ভেতর ডুব দিয়ে এগিয়ে যেয়ে সারা শরীর দিয়ে পেচিয়ে ধরবে কুমিরের শরীর। আর মুখটা রেখে দেবে ঠিক কুমিরের পিঠের উপর। কুমির লেজ দিয়ে পানি দাপিয়ে নদীর ঘোলা পানি আরো ঘোলা করবে। পানিতে বার বার ডুব দেবে আর ভাসবে। কিন্তু কোনো লাভ নেই। ময়াল যেন ততক্ষণে ফুলবিছানায় ঘুমিয়ে গেছে কুমিরের পিঠে। শেষ পর্যন্ত কুমির তার শরীরের অসুরের শক্তি দিয়ে বয়ে নিয়ে যেতে থাকে বিশ মন পঁচিশ মন ওজনের একটা ময়ালকে। তারপর ময়ালের যখন খেয়াল হবে বাঁধন আলগা করে টুপ করে নেমে যাবে নদীর পানিতে। আর বোকা কুমিরটা তখন হাফাতে হাফাতে এসে শুয়ে পড়ে নদীর চড়ায়।