পৃথিবীর বিখ্যাত সাহিত্য ও শিল্পকর্মের পেছনে কোনো কোনো ঘটনা অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ইউরোপীয় রেনেসাঁর ফলে মানুষের চিন্তাজগতে যে অভূতপূর্ব জাগরণের সৃষ্টি হয় তারই উপজাত ও সৃষ্টি "মোনালিসা”, রাজতন্ত্র তথা ক্ষমতাসীনদের বিরোধিতায় ফরাসি দার্শনিক ভলতেয়ারের বিদ্রুপাত্মক রচনা তার অমর উপন্যাস "কাঁদিদ", পরাধীন ভারতে স্বাধীনতার মন্ত্র কবি নজরুল ইসলামের "বিদ্রোহী" এরকম আরো অনেক নজির আছে, তবে সেগুলো অসংখ্য নয়! তেমনি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের ধ্বংস, মৃত্যু, বিভীষিকা, মুক্তিযুদ্ধোত্তর আশার দীপ্তি, আশাভঙ্গের হতাশা, মুক্তিযোদ্ধাদের হতাশা, অপরাধ প্রবণতা, পুনরায় আশায় বুক বাঁধা, চারপাশে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত সব ঘটনা- এগুলো একজন কিশোরীর দৃষ্টি দিয়ে দেখা, লেখিকা যেন একজন কিশোরীর স্বপ্নের সাথে কিশোরী বাংলাদেশের বেড়ে ওঠার স্বপ্নকে সমান্তরালভাবে দেখতে চেয়েছেন এই ব্যতিক্রমধর্মী পত্র "প্রণয়োপন্যাস" "চিঠি"তে। প্রণয়োপন্যাস "চিঠি" একটি পরিপূর্ণ উপন্যাসের চাইতে অনেক বেশি। কারণ এই একটি চিঠিতে একটি দেশের মহৎ সংগ্রাম, যুগসন্ধিক্ষণ এবং যুগ-যন্ত্রণার ছবি আঁকা হয়েছে। প্রণয়োপন্যাসটি মানোত্তীর্ণ ও কালোত্তীর্ণ হবে কিনা-সেটা সময়ই বলে দেবে। তবে এটুকু বলতে পারি যারা উপন্যাসটি পড়বেন আমার মনে হয় তাদের সময়টা শ্রেষ্ঠ কাজেই ব্যয় করবেন।