বাংলাদেশের স্বাধীনতা দীর্ঘ ২৪ বছরের নিরন্তর রাজনৈতিক সংগ্রামের ফসল, আর এই সংগ্রামের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আমরা আজ যে স্বাধীন দেশের মাটিতে মুক্ত নিঃশ্বাস ফেলছি তা অর্জনে কত শত তরুণ অকাতরে প্রাণ দিয়েছেন, কত মা তাদের সন্তান হারিয়েছেন, কত বাবা তাদের পুত্র হারিয়েছেন, কত স্ত্রী তাদের স্বামী হারিয়েছেন, কত শত মুক্তিযোদ্ধা পঙ্গু হয়ে দুঃসহ জীবনযাপন করছেন, তাদের একটাই প্রত্যাশা ছিল- এ দেশের মানুষ স্বাধীনভাবে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারবে; সকল মৌলিক অধিকার ভোগ করবে। আজকে আমরা তাদের সেই প্রত্যাশা কিছুটা হলেও পূরণ করতে পেরেছি। বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ এক গৌরবময় অর্জনের মাইলফলক। জাতিসংঘের এই স্বীকৃতি এমন একটি সময়ে এসেছে, যখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছে বাংলাদেশ। মাত্র সাড়ে তিন বছরে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নত দেশের কাতারে উন্নীত হলো বাংলাদেশ। এই কৃতিত্ব এ দেশের সর্বস্তরের জনসাধারণের, যাদের প্রত্যেকের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অবদানে আজ আমরা বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়াতে পেরেছি। আজ কৃষি, শিল্প, শিক্ষা, অবকাঠামো উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়নসহ সর্বক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতি দৃশ্যমান হয়েছে। বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ আজ তথাকথিত ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ থেকে’ উন্নয়নের রোল মডেল’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। কোভিড-১৯ নামক মরণ ভাইরাসে সারা বিশ্ব যখন সংকটে, সেই সংকট মোকাবিলা করে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় দেশগুলোর একটি। ‘ইমার্জিং টাইগার’ হিসেবে বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের অর্থনীতি ফিনিক্স পাখির মতোই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আজ বাংলাদেশ সম্পর্কে সকল নেতিবাচক এবং নিরাশাবাচক ভবিষ্যদ্বাণী অসার প্রমাণিত করে বাংলাদেশ আজ গর্বিত দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। এক দশক আগেও বাংলাদেশকে যেখানে দারিদ্র্য আর অনুন্নয়নের উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করা হতো, আজ উন্নয়ন বিশেষজ্ঞগণ সেই বাংলাদেশকেই দারিদ্র্য-জয় এবং উন্নয়নের আদর্শ মডেল হিসেবে তুলে ধরছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করাই আমাদের অন্যতম লক্ষ্য। সালভিত্তিক ভাষণসমূহের সংকলন ‘শেখ হাসিনা ভাষণসমগ্র’তে প্রতি বছরে প্রদত্ত ভাষণসমূহে মানুষের কল্যাণ, উন্নয়নচিন্তা, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দর্শন এবং জনকল্যাণকামী পরিকল্পনার পরিচয় পাওয়া যাবে। ‘শেখ হাসিনা ভাষণসমগ্র’ সংকলন ও সম্পাদনার ক্ষেত্রে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মোঃ এনামুর রহমান এমপি এবং বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ এনায়েত করিম-সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ধন্যবাদ জানাচ্ছি ‘অন্বেষা প্রকাশন’’কে সংকলনটি প্রকাশের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ চিরজীবী হউক গণভবন ২২ জুন ২০২১ শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীগণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার