কথায় বলে, একে রামানন্দ তায় ধুনোর গন্ধ। আত্মজীবনী, তাও আবার সিনেমা নায়কের। বিশ বছর আগে হলে কল্পনা করাও মহাপাপ ছিল। আজ পৃথিবীর রং- হাওয়া বদলে গেছে। ঢিলে হয়ে গেছে তথাকথিত সামাজিক ও নৈতিক বাঁধনের শক্ত গেরোগুলো। আজ দর্শক শুধু পর্দার ছায়ার মায়ায় ভুলতে রাজি নয়। আজ তারা পর্দার অন্তরালের মানুষগুলোর দৈনন্দিন জীবনের খুঁটিনাটি ঘটনা, সুখ-দুঃখ বিরহ- মিলনের বার্তা জানবার জন্যে উদগ্রীব, আগ্রহশীল। সে আগ্রহ মেটাবার সাহস থাকলেও সামর্থ্য নেই। দেশটা ভারতবর্ষ না হয়ে পৃথিবীর আর যে কোনও সভ্য দেশ হলে এত ভাবনা-চিন্তার কারণ থাকত না। ও দেশের নায়ক-নায়িকারা তাদের ব্যক্তিগত জীবনের সব কিছুই খেলোয়াড়সুলভ মনোবৃত্তি দিয়ে বিচার করে বলেই বুক ফুলিয়ে জীবনটাকে খোলা চিঠির মতো দর্শক-সাধারণের চোখের সামনে মেলে ধরে। উৎফুল্ল দর্শক হাসাহাসি করে, মাতামাতি করে, আবার দিনকতক বাদে সব ভুলেও যায়। কিন্তু এদেশের ভবি অত সহজে ভোলে না। ধরুন, বিশ বছর আগে রোমান্টিক আবহাওয়ায় কোনও এক দুর্বল মুহূর্তে একটি সুন্দরী নায়িকাকে প্রেম নিবেদন করেছিলাম, সাড়াও হয়তো কিছু পেয়েছিলাম। বর্তমানে সিনেমা জগৎ ছেড়ে স্বামীপুত্র নিয়ে তিনি হয়তো সুখের নীড়ে নিশ্চিন্ত আরামে দিন কাটাচ্ছেন। আজ খুঁচিয়ে ঘা করার মতো একযুগ আগের বিস্মৃতপ্রায় সেই ঘটনা যদি আমার নায়ক জীবনে উল্লেখ করে বসি, পরিণামটা একবার চিন্তা করে দেখুন।