‘বিচ্ছেদী রাতগুলো ক্রমশ দীর্ঘ হয়, দীর্ঘ হতে থাকে। বিশাল শহরের দুইপ্রান্তে থাকা দু’টি ফুল ঘুম হারিয়ে বিলাপ করে শূন্যতার।’ রাহাত রাব্বানী’র এই যে স্যাড্নেস, এই যে পরাক্রমশালী আর্তনাদ, এই যে বেদনামথিত অশ্রæ ও রক্ত, এই যে হাহাকার, এসবের, এইসবের ছবিটা সরল নয়, সহজ নয়, সস্তাও নয়, এমনকি লৌকিক ও দৈবও নয়। রাহাতের ধ্রæপদী উচ্চারণ, শব্দ, চিত্রলতা, উপমার শক্তি ও খেলা ছবিটাকে নিয়ে গেছে দার্শনিক উচ্চতায়। তার কবিতার বোধ ও নিরীক্ষা তার কবি ও প্রেমিকসত্তাকে দিয়েছে বিশেষ মহিমা। ফলে তিনি কবিতার শরীরজুড়ে যে ছবিটাই আঁকতে চেয়েছেন তার দার্শনিক প্রতীতির মূল্যও কম নয়, সস্তা নয়, বরং তা ঢের মূল্যবান। ওমর খৈয়াম, ভিনসেন্ট ভ্যান গঘ, মোপাসাঁ, বিটোফেন কিংবা রুদ্র অথবা মহাদেব সাহার দুঃখবোধ, নির্লিপ্ত অভিমান, বিরহ, ক্রোধ ও ঘৃণার আগুনের মতোই তা মূল্যবান। রাহাত জন্মেছেন গাজীপুরে। ০৪ অক্টোবর, ১৯৯৮। কতোইবা বয়স? অথচ তার সৃষ্টি, সৃজনের ফুল ও আগুন বলছে ভিন্ন কথা। পরিণত কবি তিনি। তার ‘শূন্যতার বিলাপ’ আমার অকপট প্রকাশের পক্ষে কথা বলবে। প্রতিভার সূর্যের সম্ভবত সুর্নিদিষ্ট কোনো বয়স নেই। গাণিতিক সূত্রও নেই। তবে কী রাহাত বিশ^ শিল্পপ্রতিভা কীট্স, শেলী, নজরুল, মায়াকোভস্কি ও মিকেলাঞ্জেলো কিংবা আমাদের সুকান্ত অথবা আবুল হাসানের উজ্জ্বল উত্তরসূরী? ব্যর্থ অথবা পলায়নপর প্রেমিক রাহাতের মনন ও মনস্তত্বের আগুন, বোধ ও জিজ্ঞাসার আকাক্সক্ষা, তার দিনরাত্রির সুখ-অসুখ, শরীরী ও অশরীরী ক্ষুধার বিনাশী যন্ত্রণা তাকে ঠেলে দিয়েছে মরবিড-ব্যাধির দুয়ারে। এ ব্যাধিটি রাহাত ধারণ করেছেন বলেই তার বিলাপ হয়ে ওঠেছে অর্থময়, ধ্রæপদী মুগ্ধতা অথবা কবিতা। রাহাতের পরিণত হওয়া তা যে জাদুবাস্তবতা নয় তার পক্ষে কথা বলছে এর আগে প্রকাশিত রাহাতের অসামান্য ফসল কবিতা ও প্রবন্ধগ্রন্থ। রাহাত রাব্বানী’র ‘শূন্যতার বিলাপ’ পাঠক ও বোদ্ধাদের থেকে সফল শিল্পের স্বীকৃতি পাবে, দ্বিধাহীন বিশ্বাস। শাহান সাহাবুদ্দিন কবি ও গল্পকার