‘ইসলামের দর্শন ও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ক্রমোন্নতি' গ্রন্থটি প্রকাশিত হলো। এ গ্রন্থ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অনার্স ৪র্থ বর্ষের সিলেবাস অনুযায়ী রচিত হয়েছে। গ্রিসে যেভাবে দর্শনের জন্ম হয়েছে, প্রাচ্যে যেভাবে ভারতীয় দর্শনের উদ্ভব ঘটে ঠিক তেমনিভাবে মুসলিম দর্শন জন্ম লাভ করেনি। পাশ্চাত্যে দর্শনের জন্ম হয়েছে জগতভাবনা দিয়ে, ভারতে দর্শনের জন্ম হয়েছে জীবনভাবনা থেকে। অন্যদিকে, মুসলিম দর্শনের যাত্রা শুরু হয়েছে ধর্মভাবনা বা ‘কালাম’ (ধর্মতত্ত্ব) নিয়ে। গ্রিসের দর্শনের ধাঁচে বিশেষ করে প্লেটো, এরিস্টটল এবং প্লটাইনাসের দর্শনচিন্তার কাঠামোর উপর ভিত্তি করে মুসলিম দার্শনিকরা যে ইসলামি ধর্মতত্ত্বের ও সংস্কৃতির দার্শনিক অনুসন্ধানে জড়িয়ে পড়েন তা ছিল সত্যি বিস্ময়কর। কিন্তু ইসলামের জন্ম থেকেই পাশ্চাত্যে যেমন ইসলাম সম্পর্কে একটা ভুল ধারণা আছে, তেমনি ইসলামি বা মুসলিম দর্শনের সম্ভাবনা নিয়েও তাঁদের মধ্যে একসময় সন্দেহ ছিল। কারণ তাঁদের মতে, ইসলামে মুক্তচিন্তার কোনো স্থান নেই, কিংবা ইসলাম স্বাধীন চিন্তার সমর্থন করে না। অথচ ধর্ম হিসেবে ইসলাম গোঁড়ামিশূন্য এবং এ ধর্ম জ্ঞান অর্জনে যেমন মানুষকে উৎসাহিত করে বর্তমান গ্রন্থে ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে ধর্ম ও রাজনৈতিক মতাদর্শের অবির্ভূত বিভিন্ন গোষ্ঠির আলোচনা করা হয়েছে। এখানে শিয়া ও খারিজি সম্প্রদায়ের মতাদর্শ বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। এ গ্রন্থে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক গোষ্ঠির আবির্ভাব তাদের বিভিন্ন মতবাদ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠি যেমন- জাবারিয়া, কাদেরিয়া সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আবার রাজনৈতিক গোষ্ঠি যেমন- মুতাজিলা, আশারিয়া সম্প্রদায় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। বর্তমান গ্রন্থে সুফিবাদের উৎপত্তি বিকাশ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আবার যেসব দার্শনিক ইসলামের মননশীলতায় এক
মাহবুবুর রহমান ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, তেজগাঁও কলেজ, ঢাকায় অধ্যাপনা করছেন। তিনি ঢাকায়। এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পূর্ব-পুরুষ ১৮০০ শতাব্দীতে আরবের ইয়েমেন থেকে চাঁদপুর জেলায় ইসলাম ধর্ম প্রচার করতে আসেন। পিতা মরহুম মুহম্মদ আব্দুর রহমান, মাতা মরহুমা ফাতেমা খাতুন। ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে এমএ পাস করার পর ২০১০ সালে ঢাকার ওয়েস্টার্ন কলেজে (৫ প্রভাষক পদে যােগদান এবং পরবর্তীতে উক্ত কলেজে বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১২ সালে ঢাকার তেজগাঁও কলেজে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে যােগদান করেন। তিনি বাংলার ইতিহাস মধ্যযুগ ও বাংলাদেশে ইসলাম ধর্মের আগমন ও পীর। আওলিয়াদের জীবন ও কর্মের উপর একজন মৌলিক গবেষক। তাঁর প্রথম লেখা ১৯৯৬ সালে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, ঢাকা থেকে প্রকাশিত হয়। এ পর্যন্ত তাঁর ২০টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।