খুলনা,বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলার দক্ষিনাংশের প্রান্তসীমা জুড়ে বিস্তৃত সুন্দরবনের কোল ঘেঁষে বসবাসরত জনগোষ্ঠী নানা প্রতিকূলতা ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যে আজও তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য টিকিয়ে রেখেছে। বাওয়ালী, মৌয়ালী,চুনারু ,মৎস্যজীবী প্রভৃতি পেশাজীবী সম্প্রদায়ের রয়েছে সুন্দরবন কেন্দ্রিক নিজস্ব লোকাচার, সংস্কার ও বিশ্বাস। জীবিকাসূত্রে সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল প্রায় ছয় লক্ষ মানুষ নানান শোষণ নির্যাতনের শিকার হলেও যুগ যুগ ধরে তাদের সাংস্কৃতিক ধারা অটুট রেখেছে। এছাড়া সুন্দরবনের মানুষের রয়েছে নৃতাত্ত্বিক ও সমাজতাত্ত্বিক পরিচিতি। সাংস্কৃতিক অনেক ধারা পরিবেশ পরিচিতি ও বিশ্বায়নের প্রভাবে ক্রম বিলীয়মান। এসব ধারা দ্রুত সংরক্ষণের ব্যবস্থা না করা হলে চিরতরে লুপ্ত হয়ে যাবে। লোক সংগ্রহশালা স্থাপনের মাধ্যমে আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে এগুলো সংরক্ষণ করা যেতে পারে। বাদা কাটা বা আবাদের শুরু থেকে লোক উপাদানগত অনেক স্মারকচিহ্ন আজ লুপ্ত বা লুপ্ত প্রায়। শেকড়ের সন্ধান করতে হলে সেই লোক উপাদান,লোকগান,লোক খেলাধুলা, লোকখাদ্য আবার খুঁজতে হবে। বাদা কাটার সময়ের সেই প্রবীণ প্রবীণা মানুষ আজ আর কেউ জীবিত নেই। গ্রন্থে এতদঞ্চলের মানুষের পারস্পরিক আত্মিক বন্ধন, লোক সাহিত্য, লোক শিল্পকলা, লোকস্থাপত্য, লোক চিকিৎসা,নান্দনিকতা,শিল্প চেতনা,ভূমি প্রথা,জনবসতি,যোগাযোগ ব্যবসা, পুরাকীর্তি, প্রাকৃতিক বিপর্যয়, নদী-খাল এবং অস্তিত্ব রক্ষাকল্পে জীবন সংগ্রামের নিরন্তর বিবরণী বিবৃত হয়েছে।