"এগারোটি সেক্টরের বিজয় কাহিনী" বইয়ের ভূমিকার অংশ থেকে নেয়া: একাত্তরে রক্তাক্ত স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে পৃথিবীর মানচিত্রে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটেছিল। শ্বাপদের বুকে আঘাত হানার কাহিনী, শক্ৰহননের বীরােচিত লড়াই আমাদের ভবিষ্যত বংশধরদের জানা প্রয়ােজন। সহস্র বছরের সবচেয়ে গৌরবােজ্জ্বল ইতিহাস বিস্মৃত হতে চলেছে, অথচ স্বাধীন জাতি হিসেবে আমাদের টিকে থাকার স্বার্থে এই ইতিহাস রচনা ও সংরক্ষণ হওয়া অত্যাবশ্যক। একাত্তরে রণকৌশলের অংশ হিসেবে সুষ্ঠু যুদ্ধ পরিচালনার লক্ষে সমগ্র ভূখণ্ডকে মােট এগারােটি সেক্টরে বিভক্ত করা হয়েছিল। প্রতিটি সেক্টরকে ভাগ করা হয়েছিল কতিপয় সাব-সেক্টরে। এই সব সেক্টর ও সাব-সেক্টরের সীমানা কী ছিল এবং কারা অধিনায়কত্ব করেছিলেন তা ইতিহাসের অংশ হয়ে আছে, তবু সেই সব এলাকায় সংঘটিত অসংখ্য রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের কথা অনেকেরই অজানা। এই গ্রন্থে প্রতিটি সেক্টরকে এক একটি অধ্যায়ে বিভক্ত করে সেই সব যুদ্ধের বর্ণনা দেয়া হয়েছে। আধুনিক মারণাস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অবস্থান, আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণ, অতর্কিত হামলা ও সুদৃঢ় প্রতিরক্ষা অবস্থানকে দুর্ভেদ্য করে তােলার কাজে মুক্তিবাহিনী দুঃসাহসী অভিযান পরিচালনা করেছে। এই সব সংঘর্ষে অসীম বীরত্ব, সাহসিকতা, জীবন বিসর্জন ও পরিশেষে বিজয়ের বীরগাথা রচিত হয়েছিল।
মেজর রফিকুল ইসলাম ১৯৪৬ সালে কুষ্টিয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৯ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নশাস্ত্রে অনার্স ও এম এস সি পাশ করে কিছুদিনের জন্য তিনি অধ্যাপনা করেন। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা যুদ্ধ আরম্ভ হলে তিনি মুক্তিযুদ্ধে যােগ দেন এবযুদ্ধ চলাকালে ইষ্টবেঙ্গল রেজিমেন্ট কমিশন লাভ করেন। ১৯৮১ সালের নভেম্বর মাসে লেখ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে অবসর প্রাপ্ত হন।