চন্দ্রশেখর

চন্দ্রশেখর (হার্ডকভার)

TK. 300 TK. 258 You Save TK. 42 (14%)
চন্দ্রশেখর eBook image

Get eBook Version

US $1.99

বর্তমানে প্রকাশনীতে এই বইটির মুদ্রিত কপি নেই। বইটি প্রকাশনীতে এভেইলেবল হলে এসএমএস/ইমেইলের মাধ্যমে নোটিফিকেশন পেতে রিকুয়েস্ট ফর রিপ্রিন্ট এ ক্লিক করুন।

book-icon

Cash On Delivery

mponey-icon

7 Days Happy Return

Similar Category eBooks

Customers Also Bought

Product Specification & Summary

উপক্রমণিকা
প্রথম পরিচ্ছেদ ঃ বালক বালিকা
ভাগীরথীতীরে, আম্রকানেন বসিয়া একটি বাল ভাগীরথীর সান্ধ্য জলকল্লোল শ্রবণ করিতেছিল। তাহার পদতলে, নবদুর্ব্বাশর্য্যায় শয়ন করিয়া, একটি ক্ষুদ্র বালিকা, নীরবে তাহার মুখপানে চাহিয়াছিলÑচাহিয়া, চাহিয়া, চাহিয়া, আকাশ নদী বৃক্ষ দেখিয়া, আবার সেই মুখপানে চাহিয়া রহিল। বালকের নাম প্রতাপÑবালিকার শৈবলিনী। শৈবলিনী তখন সাত আট বৎসরের বালিকাÑপ্রতাপ কিশোরবয়স্ক।
মাথার উপরে, শব্দতরঙ্গে আকাশম-ল ভাসাইয়া, পাপিয়া ডাকিয়া গেল। শৈবলিনী, তাহার অনুকরণ করিয়া, গঙ্গাকূলবিরাজী আম্রকানন কম্পিত করিতে লাগিল। গঙ্গার তর তর রব সে ব্যঙ্গ সঙ্গীত সঙ্গে মিলাইয়া গেল।
বালিকা, ক্ষুদ্র করপল্লবে, তদ্বাৎ কুমার বন্যা কুসুম চয়ন করিয়া মালা গাঁথিয়া, বালকের গলায় পরাইল; আবার খুলিয়া লইয়া আপন কবরীতে পরাইল, আবার খুলিয়া বালকের গলায় পরাইল। স্থির হইল নাÑকে মালা পরিবে; নিকটে হৃষ্টা পুষ্টা একটি গাই চরিতেছে দেখিয়া শৈবলিনী বিবাদের মালা তাহা শৃঙ্গে পরাইয়া আসিল; তখন বিবাদ মিটিল। এইরূপ ইহাদের সর্ব্বদা হইত। তখন বা মালার বিনিময়ে, বালক নীড় হইতে পক্ষিশাবক পাড়িয়া দিত, আম্রের সময়ে সুপক্ক আম্র পাড়িয়া দিত।
সন্ধ্যার কোমল আকাশে তারা উঠিলে, উভয়ে তারা গণিতে বলিল। কে আগে দেখিয়াছে? কোনটি আগে উঠিয়াছে? তুমি কয়টা দেখিতে পাইতেছ? চারিটা? আমি পাঁচটা দেখিতেছি। ঐ একটা, ঐ একটা, ঐ একটা, ঐ একটা, ঐ একটা। মিথ্যা কথা। শৈবলিনী তিনটা বৈ দেখিতেছে না।
নৌকা গণ। কয়খান নৌকা যাইতেছে বল দেখি? ষোলখানা? বাজি রাখ, আঠারখানা। শৈবলিনী গণিতে জানিত না, একবার গণিয়া নয়খানা হইল, আর একবার গণিয়া একুশখানা হইল। তার পর গণনা ছাড়িয়া উভয়ে একগ্রচিত্তে একখানি নৌকার প্রতি দৃষ্টি স্থির করিয়া রাখিল। নৌকায় কে আছেÑকোথা যাইবেÑকোথা হইতে আসিল। দাঁড়ের জলে কেমন সোণা জ্বলিতেছে।
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদঃ ডুবিল বা কে, উঠিল বা কে
এইরূপে ভালবাসা জন্মিল। প্রণয় বলিতে হয় বল, না বলিতে হয়, না বল। ষোল বৎসরের নায়কÑআট বৎসরের নায়িকা। বালকের ন্যায় কেহ ভালবাসিতে জানে না।
বাল্যকালের ভালাবাসায় বুঝি কিছু অভিসম্পাত আছে। যাহাদের বাল্যকালে ভালবাসিয়াছ, তাহাদের কয় জনের সঙ্গে যৌবনে দেখা সাক্ষাৎ হয়? কয় জন বাঁচিয়া থাকে? কয় জন ভালবাসার যোগ্য থাকে? বার্দ্দক্যে বাল্যপ্রণয়ের স্মৃতিমাত্র থাকে, আর সকল বিলুপ্ত হয়। কিন্তু সেই স্মৃতি কত মধুর!
বালকমাত্রেই কোন সমযে না কোন সময়ে অনুভূত করিয়াছে যে, ঐ বালিকার মুখম-ল অতি মধুর। উহার চক্ষে কোন বোধাতীত গুণ আছে। খেলা ছাড়িয়া কতবার তাহার মুখপানে চাহিয়অ দেখিয়াছেÑতাহার পথের ধারে অন্তরালে দাঁড়াইয়া কত বার তাহাতে দেখিয়াছে। কখন বুঝিতে পারে নাই, অথচ ভালবাসিয়াছে। তাহার পর সেই মধুর মুখÑসেই সরল কটাক্ষÑকোথায় কালপ্রভাবে ভাসিয়া গিয়াছে। তাহার জন্য পৃথিবী খুঁজিয়া দেখিÑকেবল স্মৃতিমাত্র আছে। বাল্যপ্রণয়ে কোন অভিসম্পাত আছে।
শৈবলিনী মনে মনে জানিত, প্রতাপের সঙ্গে আমার বিবাহ হইবে। প্রতাপ জানিত, বিবাহ হইবে না। শৈবলিনী প্রতাপের জ্ঞাতিকন্যা। সম্বন্ধ দূর বটে, কিন্তু জ্ঞাতি। শৈবলিনীর এই প্রথম হিসাবে ভুল।
শৈবলিনী দরিদ্রের কন্যা। কেহ ছিল না, কেবল মাতা। তাহাদের কিছু ছিল না, কেবল একখানি কুটীরÑআর শৈবলিনীর রূপরাশি। প্রতাপও দরিদ্র।
শৈবলিনী বাড়িতে লাগিলÑসৌন্দর্য্যরে ষোল কালা পুরিতে লাগিলÑকিন্তু বিবাহ হয় না। বিবাহের ব্যয় আছে-কে ব্যয় করে? সে অরণ্যমধ্যে সন্ধান করিয়া কে সে রূপরাশি অমূল্য বলিয়া তুলিয়া লইয়া আসিবে?
পরে শৈবলিনীর জ্ঞাত জন্মিতে লাগিল। বুঝিল যে, প্রতাপ ভিন্ন পৃথিবীতে সুখ নাই। বুঝিল, এ জন্মে প্রতাপকে পাইবার সম্ভাবনা নাই।
দুই জনে পরামর্শ করিতে লাগিল। অনেক দিন ধরিয়া পরামর্শ করিল। গোপনে গোপনে পরামর্শ করে, কেহ জানিতে পারে না। পরামর্শ ঠিক হইল, দুই জনে গঙ্গাøানে গেল। গঙ্গায় অনেকে সাঁতার দিতেছিল। প্রতাপ বলিল, “আয় শৈবলিনী! সাঁতার দিই।” দুই জনে সাঁতার দিতে আরম্ভ করিল। সন্তরণে দুই জনেই পটু, তেমন সাঁতদার দিতে গ্রামের কোন ছেলে পারিত না। বর্ষাকালেÑকুদেল কুলে গঙ্গার জলÑজল দুলিয়া দুলিয়া নাচিয়া নাচিয়া, ছুটিয়া ছুটিয়া যাইতেছে। দুইজনে সেই জলরাশি ভিন্ন করিয়া, মথিত করিয়া, উৎক্ষিপ্ত করিয়া, সাঁতার দিয়া চলিল। ফেনচক্রমধ্যে সুন্দর নবীন বপুর্দ্বয়, রজতাঙ্গুরীয়মধ্যে রতœযুগলের ন্যায় শোভিতে লাগিল।
সাঁতার দিতে দিতে ইহারা অনেক দূর গেল দেখিয়া ঘাটে যাহারা ছিল, তাহারা ডাকিয়া ফিরিতে লাগিল। তাহার শুনিল নাÑচলিল। আবার সকলে ডাকিলÑতিরস্কার করিলÑগালি দিলÑদুই জনের কেহ শুনিল নাÑচলিল। অনেক দুরে গিয়া প্রতাপ বলিল, “শৈবলিনী, এই আমাদের বিয়ে।”
শৈবলিনী বলিল, “আর কেনÑএইখানেই।”
প্রাতপ ডুবিল।
শৈবালিনী ডুবিল না। সেই সমযে শৈবলিনীর ভয় হইল। মনে ভাবিলÑকেন মরিব? প্রতাপ আমার কে? আমার ভয় করে, আমি মরিতে পারিব না। শৈবলিনী ডুবিল নাÑফিরিল। সন্তরণ করিয়া কুলে ফিরিয়া আসিল।
তৃতীয় পরিচ্ছেদ ঃ বর মিলিল
যেখানে প্রতাপ ডুবিয়াছিল, তাহার অনতিদূরে একখানি পানসি বাহিয়া যাইতেছিল, নৌকারোহী এক জন দেখিলÑপ্রতাপ ডুবিল। সে লাফ দিয়া জলে পড়িল। নৌকারোহীÑচন্দ্রশেখর শর্ম্মা।
চন্দ্রশেখর সন্তরণ করিয়া, প্রতাপকে ধরিয়া নৌকায় উঠাইলেন। তাহাকে নৌকায় লইয়া তীরে নৌকা লাগাইলেন। সঙ্গে করিয়া প্রতাপকে তার গৃহে রাখিতে গেলেন।
প্রতাপের মাতা ছাড়িল ন। চন্দ্রশেখরের পদপ্রান্তে পতিত হইয়া, সে দিন তাঁহাকে অতিথ্য স্বকিার করাইল। চন্দ্রশেখর ভিতরের কথা কিছু জানিলেন না।
শৈবলিনী আর প্রতাপকে মুখ দেখাইল না। কিন্তু চন্দ্রশেখর তাহাকে দেখিলেনÑদেখিয়া বিমুগ্ধ হইলেন।
চন্দ্রশেখর তখন নিজে একটু বিপদগ্রস্ত। তিনি বত্রিশ বৎসর অতিক্রম করিয়াছিলেন। তিনি গৃহস্থ, অথচ সংসারী নহেন। এ পর্য্যন্ত দারপরিগ্রহ করেন নাই, দারপরিগ্রহে জ্ঞানোপার্জ্জনের বিঘœ ঘটে বলিয়া তাহাতে নিতান্ত নিরুৎসাহী ছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি বৎসরাধিক কাল গত হইল, তাহার মাতৃবিয়োগ হইয়াছিল। তাহাতে দারপরিগ্রহ না করাই জ্ঞানার্জনের বিঘœ বলিয়া বোধ হইতে লাগিল। প্রথমতঃ স্বহস্তে পাক করিতে হয়, তাহাতে অনেক সময় যায়; অধ্যায়ন অধ্যাপনার বিঘœ ঘটে। দ্বিতীয়তঃ দেবসেবা আছে, ঘরে শালগ্রাম আছেন। তৎসম্বন্ধীয় কার্য্য স্বহস্থে করিহে হয়, তাহাতে কালাপহৃত হয়Ñদেবতার সেবার সৃশ´খলা ঘটে নাÑগৃহধর্ম্মের বিশৃংখলা ঘটে। এমন কি, সকল দিন আহারের ব্যবস্থা হইয়া উঠে না। পুস্কাকাদি হারাইয়া যায়, খুঁজিয়া পান না। প্রাপ্ত অর্থ কোথায় রাখেন, কাহাকে দেন, মনে থাকে না। খরচ নাই, অথচ অর্থে কুলায় না। চন্দ্রশেখর ভাবিলেন, বিবাহ করিলে কোন কোন দিকে সুবিধা হইহে পারে।
কিন্তু চন্দ্রশেখর স্থির করিলেন, যদি বিবাহ করি, তবে সুন্দরী বিবাহ করা হইবে না। কেন না, সুন্দরীর দ্বারা মন মুগ্ধ হইবার সম্ভাবনা। সংসার-বন্ধনে মুগ্ধ হওয়া হইবে না।
মনের যখন এইরূপ অবস্থা, তখন শৈবলিনীর সঙ্গে চন্দ্রশেখরের সক্ষাৎ হইল। শৈবলিনীকে দেখিয়া সংযমীর ব্রত ভঙ্গ হইল। ভাবিয়া চিন্তিয়া কিছু ইতস্ততঃ করিয়া অবশেষে চন্দ্রশেখর আপনি ঘটক হইয়া শৈবলিনীকে বিবাহ করিলেন। সৌন্দর্য্যরে মোহে কে না মুগ্ধ হয়?
এই বিবাহের আট বৎসর পরে এই আখ্যায়িকা আরম্ভ হইতেছে।
Title চন্দ্রশেখর
Author
Publisher
ISBN 9789849122311
Edition 1st Edition, 2023
Number of Pages 116
Country বাংলাদেশ
Language বাংলা

Sponsored Products Related To This Item

Reviews and Ratings

sort icon

Product Q/A

Have a question regarding the product? Ask Us

Show more Question(s)
loading

Similar Category Best Selling Books

prize book-reading point
Superstore
Up To 65% Off
Recently Viewed
cash

Cash on delivery

Pay cash at your doorstep

service

Delivery

All over Bangladesh

return

Happy return

7 days return facility

0 Item(s)

Subtotal:

Customers Also Bought

Are you sure to remove this from bookshelf?

Write a Review

Please rate this product