শহুরে সাহেবি জীবনের মতোন আরোপিত কেতাদুরস্তির ঠাঁই সেখানে নেই। এমন একটি জনপদ নিয়ে গল্প ফাঁদার সময়, সেখানকার সমাজ চরিত্র বিষয়ে যে জুতসই দৃষ্টি ও এলেম লাগে, তাই যেন প্রসারিত হয়েছে ‘আপনভাটি’ শিরোনামের এই গ্রন্থে। রোদেপোড়া, মেঘেভেজা ছোট ছোট সুখ ও কষ্টের জীবন সংগ্রামের খতিয়ান এই গল্পগ্রন্থ। ভাটিবাংলার সোঁদামাটির ঘ্রাণে বেড়ে ওঠা লেখক তাঁর বাস্তব অভিজ্ঞতায় চিত্রিত করেছেন গল্পের একেকটি কাহিনি ও চরিত্র। হাওরের ভূমিপুত্র হিসেবে লেখক মজিবুর রহমান চেষ্টা করেছেন হাওরের অকৃত্রিম রূপটিই ফুটিয়ে তোলার। শব্দের অলংকারে ওই প্রান্তিক দূরগামী জীবনের গল্পের ঘ্রাণ মৌ মৌ করেছে পৃষ্ঠাজুড়ে। গল্প এগিয়েছে, আর ঘটনার টানটান উত্তেজনায় হাওড়ের হেঁসেলের ভাতের মতোন যা কখনো ফেনিয়ে, উথলে উঠেছে। সাবঅল্টার্ন গল্প মানেই যে নিরাসক্ত ও হতাশাবাদিতা নয়, লেখক মজিবুর রহমান তা দেখিয়েছেন নিজস্ব বয়ানে। যার প্রশিক্ষণ জ্ঞানটি তিনি আহরণ করেছেন নিজের বেড়ে ওঠা থেকে। একথা বললে মোটেও বাড়িয়ে বলা হবে না যে, সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ, আবু ইসহাক ও সৈয়দ মুস্তফা সিরাজের গ্রামীণ ঘ্রাণ-নিহিত গল্পের যোগ্য উত্তরাধিকার হয়েছে মজিবুর রহমানের গল্পের লেখনশৈলী। -হাসনাত কালাম সোহান