লা নুই বেঙগলী । লেখক: মির্চা এলিয়াদ কালচারাল এনথ্রোপলজিতে একটা তত্ত্ব আছে যখন দুটি সংস্কৃতি মুখামুখি দাড়ায় তখন উভয় সংস্কৃতি তাদের সাংস্কৃতিক উপাদান আদান প্রদানের মাধ্যমে আপোষ করার প্রয়াস চালায় এবং নতুন একটি কালচার তৈরী হয়ে থাক।একে বলা হয় acculturation তত্ত্ব।মাঝে মাঝে উভয় সংস্কৃতির আপোষ ত হয়না বরং সেখানে দুটি সংস্কৃতির দ্বন্দ্বের বিবাদরেখা স্পস্টভাবে ফুটে ওঠে।লেখক এ বইয়ে এক ভারতীয় তরুণীরর সাথে ভারতীয় উপমহাদেশে চাকরি করতে আসা এ ফিরিঙ্গি যুবকের প্রেমের উপখ্যানের মাধ্যমে এই সাংস্কৃতিক দ্বন্দ্বের ব্যাপারটি ফুটিয়ে তুলেন।গল্পে এলিচ নামক যুবক সে তার ইউরোপিয়ান আভিজাত্য ভূলে গিয়ে বাঙ্গালি-হিন্দু মেয়ে মৈত্রীয়ি এর প্রেমে পড়ে যায়।এমন কি একপর্যায়ে খ্রিষ্টান ধর্ম ত্যাগ করার জন্য ও সংকল্পবদ্ধ হয়।অপরদিকে মৈত্রীয়ি তার ইউরোপিয়ান কালচারের প্রতি অনুরক্ত হয়ে পড়ে।তারা একে অপরকে পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে ।পরিনতিতে তারা ইন্দ্রিয় সুখ লাভ করতে থাকে।এক পর্যায়ে তাদের সম্পর্ক পরিবারে জানা জানি হয়ে যায়।এবং এলিচকে মৈত্রীয়িদের বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়।সম্পর্কটি অমিমাংসিত পরিনতিতে গড়িয়ে যায় যেখানে কেউ অপরকে আর পরবর্তী জীবনের জন্য লাভ করতে পারে নাই।অথচ মেয়ের বাবা-মা উভয়েই ছিলেন প্রগতিশীল এবং পাশ্চাত্য প্রেমী।কিন্ত তারা অন্তত এটা মানতে পারছিলনা সমাজ তাদের বিয়ে কে কিভাবে নিবে? মোটকথা জন্ম,বিয়ে আর মৃত্যু জীবনের এই তিনটি ক্ষেত্রে মানুষ এর চাওয়া পাওয়াগুলো সমাজকর্তৃক অনেক খানি নির্ধারিত হয়ে থাকে এবং ব্যক্তি অনেক ক্ষেত্রেই কিছু করার থাকেনা।ফলে এসব ক্ষেত্রে সংস্কৃতির দ্বান্ধিকতার রুপটা অনেকখানি প্রতীয়মান হয়ে ওঠে।