২০১০ সালের জাতীয় শিক্ষা নীতির আলোকে এনসিটিবি বিভিন্ন শ্রেণির ইতিহাসের পাঠ্যসূচি পুনর্বিন্যাস করেছে। নতুন পাঠ্যসূচিতে মহান মুক্তিদ্ধের চেতনার উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে যেন নতুন প্রজন্ম দেশমাতৃকার সূর্যসন্তানদের সুমহান আত্মত্যাগের মহিমা জানতে পারে এবং দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে পারে। জাতীয় উন্নয়নের পূর্বশর্ত দেশপ্রেম আর দেশপ্রেমের পূর্বশর্ত হলো ইতিহাস। কেননা কেবল ইতিহাস পাঠের মাধ্যমেই একজন ব্যক্তি দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে পারে। বিশ্বায়নের যুগে একজন মানুষ শুধু জাতীয় নয়, একজন আন্তর্জাতিক নাগরিকও বটে। এই বিষয়টি বিবেচনায় রেখে এনসিটিবি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তথা জাতীয় ইতিহাসের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ইতিহাসের কিছু নির্বাচিত বিষয়সমূহ সংযুক্ত করে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস পাঠের দ্বিতীয় পত্রের শিরোনাম নির্ধারণ করেছে 'আধুনিক বিশ্বের ইতিহাস'। 'আধুনিক বিশ্বের ইতিহাস' বলতে এখানে মূলত ইউরোপের ইতিহাসকে বুঝান হয়েছে। কেননা ইউরোপ হলো জ্ঞান জগতের বাতিঘর এবং ইউরোপ থেকেই পৃথিবীতে আধুনিক যুগের সূত্রপাত। এনসিটিবি প্রণীত চমৎকার তথ্যনির্ভর এই পাঠ্যসূচির আলোকে শিক্ষার্থীরা শিল্প বিপ্লব, মহান ফরাসি বিপ্লব, বলশেভিক বিপ্লব, প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধসহ জাতিসংঘ, স্নায়ুযুদ্ধ ও বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলন সম্পর্কে অবহিত হতে পারবে। বিষয়গুলো উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের জন্য একটু জটিল বলে মনে হলেও আন্তর্জাতিক ইতিহাসের খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এগুলো অধ্যয়নের মধ্য দিয়ে নতুন প্রজন্ম বিশ্ব নাগরিক হিসেবে নিজের অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হবে। এদের দ্বারা বহির্বিশ্বে দেশ ও জাতির গৌরব বৃদ্ধি পাবে। আধুনিক বিশ্বের ইতিহাস বা ইতিহাস দ্বিতীয় পত্র বইটি এনসিটিবি-এর পাঠ্যসূচি অনুসারে রচনা করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের দিক-নির্দেশনা মোতাবেক সৃজনশীল বিষয়টি মাথায় রেখেই গ্রন্থটিতে সর্বাধিক তথ্য সংযোজনের প্রচেষ্টা করা হয়েছে। দুর্বোধ্য এবং খুব বেশি প্রচলিত নয়-এমন শব্দগুরো অতি সংক্ষেপে পাদটিকায় ব্যাখ্যা করা হয়েছে। জটিলতর বিষয়গুলো উপস্থাপনের ক্ষেত্রে প্রজ্ঞাবান ব্যক্তিদের পরামর্শ অনুসরণ করা হয়েছে। সচরাচর চোখে পড়ে না-এমন তথ্য উপস্থাপনের ক্ষেত্রে তথ্যসূত্র উল্লেখ করা হয়েছে।