ইতিহাসজ্ঞান ব্যক্তিকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে, আর দেশপ্রেম হলো জাতীয় উন্নয়নের পূর্বশর্ত। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ সচেতন নাগরিক সমাজ গড়ে তোলার জন্য ইতিমধ্যে সরকার মাধ্যমিক থেকে স্নাতক পর্যন্ত অধিকাংশ পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন শিরোনামে ইতিহাসের পাঠ বাধ্যতামূলক করেছে। ২০১০ সালের শিক্ষানীতির আলোকে এনসিটিবি বিভিন্ন শ্রেণির ইতিহাসের পাঠ্যসূচির পুনর্বিন্যাস করেছে। পাঠসূচি বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। বিষয়টি বিবেচনায় রেখে এনসিটিবি একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস পাঠের প্রথম পত্রের শিরোনাম নির্ধারণ করেছে 'বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাস: ১৭৫৭-১৯৭১'। এনসিটিবি প্রণীত চমৎকার তথ্যনির্ভর এ পাঠ্যসূচির আলোকে শিক্ষার্থীরা ইংরেজ ঔপনিবেশিক শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালির সংগ্রামশীল জীবনালেখ্য, ভাষা আন্দোলন, অসাম্প্রদায়িক আদর্শভিত্তিক জাতীয়তাবাদের উদ্ভব, পাকিস্তানি সামরিক শাসন বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রেক্ষাপট ও মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাস তথা দেশের জন্য শহিদদের সুমহান আত্মত্যাগ সম্পর্কে অবগত হয়ে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে এবং দেশ ও জাতির সেবায় আত্মনিয়োগ করতে অনুপ্রেরণা লাভ করবে। 'বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাস: ১৭৫৭-১৯৭১' গ্রন্থটি এনসিটিবির পাঠ্যসূচি অনুসারে রচনা করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনার মধ্যে অবস্থান করে পুস্তকটিতে সর্বাধিক তথ্য সংযোজনের সর্বাত্মক চেষ্টা আমি করেছি। কোথাও কোথাও ব্যবহৃত দুর্বোধ্য ও অপ্রচলিত শব্দগুলো অতি সংক্ষেপে পাদটিকায় ব্যাখ্যা করেছি। যা সচরাচর দেখা যায় না এমন তথ্য সন্নিবেশের ক্ষেত্রে তথ্যসূত্র উল্লেখ করা হয়েছে। যেকোনো তথ্যবিভ্রান্তি এড়াতে প্রজ্ঞাবান ব্যক্তিদের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। বইটির সম্পাদনার দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে আমার কাজকে পরিশীলিত করেছেন আমার শিক্ষক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আতিয়ার রহমান। তাঁর জন্য শুভ কামনা রইল।