প্রতীকী ভাষা ব্যবহারের মাধ্যমে প্রতীকী ন্যায়শাস্ত্র বর্তমানে এরিস্টটলীয় ন্যায়শাস্ত্রের তুলনায় বাচনিক গঠন বিশ্লেষণ এবং যুক্তি বা ন্যায়ের কাঠামো আবিষ্কারে অনেক বেশি শক্তিশালী হাতিয়ারে পরিণতি লাভ করেছে। বলা বাহুল্য যে, প্রতীকী ন্যায়শাস্ত্রের ইতিহাস খুব পুরনো না হলেও এর পরিধি খুব ব্যাপক এবং নানা শাখা-প্রশাখায় বিভক্ত। সে হিসেবে বর্তমান গ্রন্থেও আলোচনার পরিসর সীমিত। প্রতীকী ন্যায়শাস্ত্রের একটি মৌল এবং গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গরাজ্য হিসেবে স্বীকৃত বাচনিক কলনকে লেখক তার বর্তমান গ্রন্থে বেছে নিয়েছেন এবং বাচনিক কলনের অবরোহী যুক্তি-প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত সমুদয় বিকল্প নির্ণয় ও প্রমাণ পদ্ধতি নিয়ে পর্যাপ্ত উদাহরণের আলোকে তিনি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছেন। নির্ণয় পদ্ধতি হিসেবে বর্তমান গ্রন্থে লেখক আলোচনা করেছেন সাধারণ সত্য-সারণী পদ্ধতি ও এর বিভিন্ন রূপ, এর বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে সংক্ষিপ্ত সত্যসারণী কৌশল বা বিশুদ্ধ অসিদ্ধি পদ্ধতি এবং সত্যমূল্য আরোপের বিধি। স্বাভাবিক অবরোহণ প্রক্রিয়ায় আকারগত প্রমাণবিধি, প্রাকল্পিক প্রমাণবিধি এবং পরোক্ষ প্রমাণবিধির আলোচনার প্রারম্ভিক স্তরে লেখক মৌল যুক্তিবিধিসমূহের যাথার্থ্য দেখাবারও সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন। প্রতীকী ন্যায়শাস্ত্রের অনেক প্রচলিত গ্রন্থে বিস্তারিত ব্যাখ্যা বা বিধিগুলোর যাথার্থ্য সম্পর্কিত সম্ভাব্য সংশয় অপনয়ন না করেই কতিপয় বিধিবদ্ধ সূত্রের উল্লেখ করা হয়। কিন্তু বর্তমান গ্রন্থের লেখক প্রস্তাবিত বিষয়ের বিশদ ব্যাখ্যা না করে, সহজবোধ্য ও সাধারণ বুদ্ধিগম্য করার চেষ্টা না করে, কিংবা পর্যাপ্ত উদাহরণের আলোকে বক্তব্য বিষয়কে সুস্পষ্ট না করে কোনো কাটছাঁট পদ্ধতিতে কোনো বিষয়কে উপস্থাপন করেননি। এভাবেই লেখক বাচনিক কলনের ওপর উপস্থাপন করেছেন তাঁর শ্রমসাধ্য গ্রন্থ প্রতীকী যুক্তিবিদ্যা : বাচনিক কলন। পূর্ববর্তী সংস্করণগুলোর মতো বর্তমান সংস্করণেও গ্রন্থটি পাঠকনন্দিত হবে বলে আমাদের ঐকান্তিক আশা ও বিশ্বাস।