একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিস্তরে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক্রম অনুসারে কয়েকটি উদ্দেশ্যকে বিবেচনায় নিয়ে 'বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিতি' বইটির সামগ্রিক পরিকল্পনা করা হয়েছে। এগুলির মধ্যে রয়েছে: বাংলা ভাষার বৈশিষ্ট্য, গুরুত্ব ও অন্তর্নিহিত শৃঙ্খলা সম্পর্কে শিক্ষার্থীর ধারণা সংহতকরণ, প্রমিত বাংলা ভাষা ব্যবহারে নৈপূণ্য এবং প্রায়োগিক ও কর্মমুখী ভাষাদক্ষতা অর্জন, বিষয়বস্তুর যুক্তিপূর্ণ উপস্থাপনায় কুশলতা সৃষ্টি, কল্পনাশক্তি ও সৃজনশীলতার পালন, সামাজিক মূল্যবোধ ও চারিত্রিক গুণাবলির বিকাশ, ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার জ্বলোকে দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবোধে উদ্বুদ্ধকরণ, অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও মানবিক মূল্যবোধের উজ্জীবন, বাংলার সাংস্কৃতিক ও লোকসাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সম্পর্কে মর্যাদাপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি গঠন, সকল মানুষের প্রতি সমমর্যাদার মনোভাব পোষণ ও তা প্রতিষ্ঠায় ব্রতী হওয়া, পরিবেশ-সচেতন বিজ্ঞানমনস্ক বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গির বিকাশ, আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় বাংলা ভাষা ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ ও সক্রিয় হওয়া ইত্যাদি। নতুন শিক্ষাক্রমের ব্যাকরণ অংশে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে সংস্কৃত ব্যাকরণের প্রভাব কমানো এবং বাংলা ভাষার নিজস্ব ব্যাকরণের সঙ্গে শিক্ষার্থীর পরিচয় ঘটানোর দিকে। এ বইয়ের ব্যাকরণ অংশে তার প্রতিফলন ঘটেছে। নির্মিতি অংশে নতুন শিক্ষাক্রম অনুসারে খুদে গল্প লিখন ও সংলাপ রচনা, দিনলিপি লিখন, অভিজ্ঞতা বর্ণন, বৈদ্যুতিন চিঠি (ই-মেইল) ও খুদে বার্তা লিখন ইত্যাদি বিষয় সংযোজিত হয়েছে। অতি সাম্প্রতিক কয়েকটি প্রবন্ধও নির্মিতি অংশে সংযোজন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীর সৃজনশীলতা ও কল্পনাশক্তির বিকাশে তা সহায়ক হবে। প্রুফ সংশোধন নির্দেশিকা লেখ্য ভাষার শুদ্ধ প্রয়োগ অনুশীলনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর বিশেষ কাজে লাগবে। উচ্চ মাধ্যমিক চূড়ান্ত পরীক্ষার জন্যে শিক্ষার্থীদের ব্যাকরণ ও নির্মিতির কিছু বিষয়ে বিশেষ প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হয়। এক্ষেত্রে তাদের দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্যে বইতে নতুনভাবে কিছু নমুনা প্রশ্নোত্তর সংযোজিত হয়েছে। আশা করি, তা তাদের পরীক্ষা প্রস্তুতিতে বিশেষ সহায়ক হবে।
Title
বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিতি-দ্বিতীয় পত্র (একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি) (আধুনিক, যুগোপযোগী ও প্রায়োগিক বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত)
গবেষক ড. মাহবুবুল হক অধ্যাপনার পাশাপাশি প্রবন্ধ রচনা, ফোকলোর চর্চা, গবেষণা, অনুবাদ, সম্পাদনা ও পাঠ্য বই রচনা করে দেশে-বিদেশে পরিচিতি লাভ করেছেন। এর মধ্যে তাঁর চল্লিশটিরও বেশি বই প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশ, ভারত ও পূর্বতন সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে। ভারতের কলকাতা, যাদবপুর, বিশ্বভারতী, কল্যাণী, পাতিয়ালা, গৌড়বঙ্গ ও আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে, ত্রিপুরায়, কলকাতার বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদে ও বাংলা আকাদেমিতে ভাষা ও সাহিত্য, ইতিহাস ও ফোকলোর বিষয়ে সম্মেলন ও সেমিনারে অংশ নিয়ে গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন তিনি। ২০০৭-এ দিল্লিতে অনুষ্ঠিত প্রথম সার্ক ফোকলোর উৎসবে তিনি যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধি হয়ে। মাহবুবুল হকের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে : বাংলা বানানের নিয়ম, রবীন্দ্র সাহিত্য রবীন্দ্র ভাবনা, নজরুল তারিখ অভিধান, ইতিহাস ও সাহিত্য, লোকসাহিত্য ও লোকসংস্কৃতি, বাংলার লোকসাহিত্য : সমাজ ও সংস্কৃতি, বাংলা ভাষা : কয়েকটি প্রসঙ্গ, রবীন্দ্রনাথ ও জ্যোতিরিন্দ্রনাথ. বাংলা সাহিত্যের দিক-বিদিক, প্রবন্ধ সংগ্রহ ইত্যাদি। এছাড়াও তিনি বহু পাঠ্যবই ও শিশুতোষ গ্রন্থ প্রণয়ন করেছেন। লেখালেখি ও গবেষণার জন্য মাহবুবুল হক লাভ করেছেন বহু পুরস্কার ও সম্মাননা। সেগুলির মধ্যে রয়েছে : ফিলিপস পুরস্কার, মধুসূদন পদক, নজরুল সম্মাননা, মুক্তিযুদ্ধ পদক, চট্টগ্রাম একাডেমি পুরস্কার, রশীদ আল ফারুকী সাহিত্য পুরস্কার ইত্যাদি।