ফ্ল্যাপে লিখা কিছু কথা প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে এই বাংলাদেশ অঞ্চলের বিজয় সিংহাসন নামক এক রাজপুত্র ভারত সাগর পাড়ে দিয়ে সিংহল দ্বীপের রাজা হয়েছিলেন। রামায়ন ও মহাভারতের অনেকগুলো উপ্যাখ্যানের পটভুমি হিসেবে এই দ্বীপটির ভূমিকা অনেক। বৌদ্ধ ধমাবলম্বীর দেশ হিসেবেও শ্রীলঙ্কা প্রতিষ্ঠিত । খ্রীস্টান ও মুসলমানদের কাছেও এই দ্বীপের কিছু অংশ তীর্থ স্থান হিসেবে চিহিৃত। ষোঁড়শ শতাব্দী তে ইউরোপীয় বনিককূল আগ্রাসন ঘটান এই দ্বীপে এবং ৫শ বছর ধরে তারা শাসন করে। প্রায় অর্ধ-শতাব্দী থেকেই এই দ্বীপটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু তারপরও দেশটি মধ্যে অভ্যন্তরীন কোন্দর লেগেই আছে। আড়াই হাজার বছর ধরে বয়ে চলা সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অবশেষ নিয়ে একবিংশ শতাব্দীতে আজকের শ্রীরঙ্কা কোথায় কিভাবে আছে ,একজন স্থপতি, আলোকচিত্রী ও লেখকের দৃষ্টিতে শাকুর মজিদ তুলে এনেছেন তার সর্বশেষ ভ্রমন কাহিণী ‘সিংহল সমুদ্র থেকে’তে। ভূমিকা কমনওয়েলথ এসোসিয়েশন অব আর্কিটেকস এর স্থাপত্য সম্মেলনে যোগ দিতে বাংলাদেশি স্থপতি প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে শ্রীলঙ্কা যাওয়া হয়েছিল ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। যেহেতু এটা ছিল স্থাপতিক সম্মেলনের সফর , তাই সাধারণ পর্যটন এলাকা গুলোর বাইরে শ্রীলংকার স্থাপত্য এবং কনভেশনের থীম Architecture: Re-thinking sustainability বিষয়েই আমাদের মনোযোগ বেশী ছিল। ঘোরাঘুরির ক্ষেত্রে আমোদের পঞ্চপর্যকটদের দলটি ২০০১ সাল থেকে যে নিয়ম নীতির ভেতর দিয়ে বিদেশ ভ্রমণ করে, এটাও তার একটা অংশ হিসেবে চলে আসে। এই ভ্রমণ কাহিনীতে স্থাপত্য বিষয়টি অনেক কম লেখার চেষ্টা করেছি, তারপরও দেখি অনেক বেশি জায়গা জুড়ে স্থাপত্যের কথা এসে গেছে।সাধারণ পাঠকদের কাছে বিষয়টি গ্রহণ যোগ্য নাও হতে পারে। ‘সিংহল সমুদ্র থেকে’ শিরোনামে ধারাবাহিক এই ভ্রমণ কাহিনী টি পাক্ষিক ‘অন্যদিনে’ -এ ছাপা হয়েছে।বন্ধুবর সম্পাদক মাজহারুল ইসলামের কাছে এ জন্যে কৃতজ্ঞতা। ‘অন্যদিন’ এর নির্বাহী সম্পাদক আবদুল্লাহ নাসের কড়া তাগিদ দিয়ে এই লেখাগুলোকে আমার কাছ থেকে নিয়ে গেছেন। এই তাড়নাটুকু না দিলে হইতো এ বছর এ বইটি প্রকাশের জন্য তৈরি হতো না।ধন্যবাদ তাঁদের প্রতি। অনন্যার মনিরুল হকের কাছে কৃতজ্ঞতা, দ্রুততম সময়ের মধ্যে বইটি তৈরি করে পাঠকের কাছে পৌঁছানোর জন্য । আর আমার পঞ্চপর্যটক বাহিনীর ভালোবাসার কথা তো মনেই আছে। এ বইতে ব্যবহৃত প্রায় সবগুলো ছবিই আমার তোলা, কিন্তু বেশ কিছু দুঃসাধ্য ছবি আমি ইন্টানেট থেকে নিয়েছি। ধন্যবাদ ইন্টারনেটকেও।
শাকুর মজিদ পেশায় স্থপতি, নেশায় লেখক-নাট্যকার-আলোকচিত্রী-চলচ্চিত্র নির্মাতা। শৈশবে কবিতা দিয়ে লেখালেখি শুরু। পরে গল্প, নাটক, ভ্রমণ-কাহিনি লিখেছেন অনেক। নাটকের সকল শাখায় তার বিচরণ। কুড়ি বছর বয়সে সিলেট বেতারে তাঁর লেখা নাটক ‘যে যাহা করোরে বান্দা আপনার লাগিয়া’ প্রথম (১৯৮৫) প্রচার হয় । লন্ডনী কইন্যা, নাইওরী, বৈরাতী, করিমুন নেছা, চেরাগসহ বেশ কয়েকটি টেলিভিশন-নাটক ও টেলিফিল্মের রচয়িতা তিনি। দেশ-বিদেশের ভ্রমণচিত্র নিয়ে তিনশতাধিক প্রামাণ্যচিত্র বানিয়েছেন। দেশ ভ্রমণ তার একটি বড় নেশা। ত্রিশটি দেশ ভ্রমণ করেছেন।তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ৩২, বেশীরভাগই ভ্রমণকাহিনি, স্মৃতিচারণ ও আত্মজৈবনিক গ্রন্থ।