চিন্তার জগতে জহিরুল ইসলাম রচিত `মূর্তি ও ভাস্কর্য : বয়ান—প্রতিবয়ান' গ্রন্থটি সাম্প্রতিক সময়ে একটি আলোড়িত নাম। দীর্ঘকাল ধরে ‘মূর্তি ও ভাস্কর্য’ বিষয়টি নিয়ে আমাদের দেশের আলেমসমাজ এবং ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী বুদ্ধিজীবী মহলে বিতর্ক বিদ্যমান। একদল পক্ষে, অন্যদল বিপক্ষে। অথচ নির্মোহভাবে বিচার করলে দেখা যায় যে, বিষয়টি ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক। কুরআন—হাদীসে বিষয়টিকে সম্পূর্ণ হারাম বা নাযায়েজ ঘোষণা করলেও গায়ের জোরে কেউ কেউ হারামকে হালাল প্রমাণের দুঃসাহস দেখাচ্ছে। এমনকি কুরআন—হাদীসে সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও বর্তমান বিশ্বে মূর্তি ও ভাষ্কর্যের ব্যবহার সর্বত্রই লক্ষ্য করা যায়। বিষয়টি নিয়ে বর্তমান সময়ে পাশ্চাত্য ধারার ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী একশ্রেণির বুদ্ধিজীবী ইসলাম বিদ্ধেষী বক্তব্য দিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। তাই বিষয়টির সুরাহা হওয়া জরুরি। এর বিরুদ্ধে ওলামায়ে কেরামের পক্ষ থেকে দলিলভিক্তিক সমৃদ্ধ কোনো রচনা গ্রন্থকারে পাওয়া যায়নি। অথচ পাঠক মহলে এ বিষয়ে তথ্য—উপাত্তনির্ভর গ্রন্থের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ উপলব্ধি থেকে ‘মূর্তি ও ভাস্কর্য’ বিষয়ক পাণ্ডুলিপিটি আমাদের হাতে আসার পর আমরা উক্ত বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে নিয়েছি। পাণ্ডুলিপিটি সম্পাদনার জন্য বহুগ্রন্থ প্রণেতা, বিশিষ্ট আলেম মাওলানা মুহাম্মদ মূসা সাহেবকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে পাণ্ডুলিপিটি মানসম্মত ও গ্রহণযোগ্য করে তুলেছেন। তিনি এ গ্রন্থের প্রারম্ভে যুক্তির আলোকে একটি মুখবন্ধ যুক্ত করেছেন। আশা করা যায়, বইটি পাঠক মহলে ব্যাপক সমাদৃত হবে এবং তা পাঠে ‘মূর্তি ও ভাস্কর্য’ বিষয়ে আমাদের সমাজে বিদ্যমান বিতর্কের অবসান ঘটবে।
Jahirul Islam, জন্ম ৩০ মে ১৯৬৯, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার ঘোষের টিকিকাটা গ্রামে। শৈশব-কৈশোর কেটেছে মঠবাড়িয়ার অপরূপ প্রাকৃতিক নৈসর্গের ধুলোবালি, কাদাজল গায়ে মেখে। বাবা মৃত আনছার উদ্দিন আহমেদ, মা পিয়ারা বেগম। পেশা সাংবাদিকতা। বর্তমানে দৈনিক বাংলাদেশের খবরের সম্পাদনা বিভাগে কর্মরত। এর আগে কাজ করেছেন দৈনিক জনকণ্ঠ, আমার দেশ এবং সকালের খবর পত্রিকায়। শিশু-কিশোর উপযোগী গল্প, উপন্যাস রচনা এবং অনুবাদ ছাড়াও পত্রপত্রিকায় ছোটগল্প, ফিচার ও নিবন্ধ লিখে থাকেন তিনি। তবে তার মূল ভাবনা শিশু-কিশোরদের নিয়েই। ছোট্ট সোনামণিদের জন্য সহজ-সরল গল্প এবং ছোট থেকে বড় সব বয়সের শিশু-কিশোরদের জন্য গল্প-উপন্যাস রচনা, অনুবাদসহ তাদের পাঠোপযোগী সব ধরনের প্রকাশনার আলাদা এক ভুবন গড়ে তোলার উদ্দেশ্য রয়েছে তার। জহিরুল ইসলাম বিশ্বাস করেন, শিশুমনে সুন্দর কিছু গেঁথে দিতে পারলে তার রেশ থেকে যায় আজীবন। সে লক্ষ্যেই তার লেখালেখি। লেখালেখি ছাড়াও ভাসমান শিশুদের মুখে হাসি ফোটানোর উদ্দেশ্যে গড়ে তুলেছেন ‘শিশুদের জন্য সুন্দর পৃথিবী’ নামে একটি সংগঠন। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তিনি।