"দিল্লি সিটি অব জ্বিনস" বইটির সম্পর্কে কিছু কথা: সভ্যতার বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ প্রতিনিধিত্ব করছে দিল্লিকে। বিভিন্ন সহস্রাব্দ সহঅবস্থান করছে। বিভিন্ন যুগকে মনে ধারণ করে মানুষ একই পথ ধরে হাঁটছে, একই পানি পান করছে এবং একই ধূলিতে মিশে যাচ্ছে। কিন্তু পির সদর-উদ-দীনের সাথে সাক্ষাতের পূর্ব পর্যন্ত আমি নগরীর নতুন জীবন অব্যাহত থাকার গােপন রহস্য উপলব্ধি করতে পারি নি। পির সদর-উদ-দীনের মতে দিল্লি ছিল জ্বিনদের নগরী। যদিও হামলাকারীরা বারবার এ নগরী জ্বালিয়ে দিয়েছে, শতাব্দীর পর শতাব্দী নগরী জ্বলেছে, তবু নগরী পুনঃনির্মিত হয়েছে। যেন প্রতিবার আগুন থেকে শতবর্ষজীবী মরু পাখির মতাে নগরীর উত্থান হয়েছে। ঠিক হিন্দুরা যেমন বিশ্বাস করে যে পবিত্রতা অর্জন না করা পর্যন্ত বারবার দেহের পুনর্জন্ম হবে। সেভাবেই মনে হয় যেন দিল্লি শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে পুনর্জন্ম লাভ করে যাবে। এর কারণ হিসেবে পির সদর-উদদীন বলেছেন যে, জ্বিনরা দিল্লিকে এতাে ভালােবাসে যে, এ নগরীকে তারা শূন্য বা বিক্ষিপ্ত দেখতে চায় না। এখন নগরীর প্রতিটি বাড়ি, রাস্তার প্রতিটি মােড়ে জ্বিনরা আছে। তাদেরকে কেউ দেখতে পায় না। কিন্তু কেউ নিবিষ্টচিত্ত হলে তাদের অনুভব করতে পারবে। তাদের ফিসফিসানি শুনতে পারবে অথবা ভাগ্য প্রসন্ন হলে মুখের উপর তাদের উষ্ণ নিশ্বাস অনুভব করতে পারবে। দিল্লিতে এসে আমার মনে হয়েছে যে, আমি একটি গ্রন্থ রচনার বিষয় খুঁজে পেয়েছি: সময়ের মাঝে অস্পষ্ট এক নগরীর চিত্র, যে নগরীর বিভিন্ন যুগ একটি পাত্রে টুকরা টুকরা হয়ে পড়ে আছে এবং যে নগরী জ্বিনদের নগরী।