সমাজ হচ্ছে পরস্পর সহযোগিতা ও সহানুভূতির সঙ্গে বসবাসকারী মানবজাতি। এই সমাজে আমরা বসবাস করি, যেখানে আমাদের ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত এক দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে হয়। সে সমাজ যদি সুন্দর ও আদর্শের হয়, তাহলে জীবন হবে অনেক সুখ এবং আরাম-আয়েশের। আর যদি অনাদর্শ ও বিশৃঙ্খল হয়, তাহলে দুঃখ-কষ্টের সীমা থাকে না। সুন্দর ও সুশৃংখল সমাজ গঠন করতে হলে আমাদেরকে প্রথমেই একটা ‘আদর্শ’ সামনে রেখে ঐ আদর্শ মোতাবেক জীবনকে পরিচালিত করতে হবে। তা নাহলে সুন্দর, সুশীল সমাজ গঠন সম্ভব নয়। প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা কার আদর্শে আমাদের সমাজকে উন্নত করে গড়তে পারি? তিনি কে হতে পারেন? এসব প্রশ্নের জবাবে বলা যায়, এর জন্য প্রয়োজন একজন মহামানবের আদর্শ। তাঁর আদর্শে আদর্শিত হতে পারলে আমাদের এই সমাজকে সুন্দর, সুশৃংখল ও আদর্শ সমাজ হিসেবে গড়ে তুলতে পারবো ইনশাআল্লাহ্। এই মহামানব হচ্ছেন, আল্লাহর প্রিয় হাবীব হযরত মুহাম¥দ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। যার সম্পর্কে স্বয়ং আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমাদের জন্যে আল্লাহর রাসুলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ’ (সূরা আল আহযাব ঃ ২১)। অন্যত্র মহান আল্লাহ ঘোষণা করেছেন, ‘আমি আপনাকে বিশ্ববাসীর জন্যে রহমত স্বরূপই প্রেরণ করেছি’ (সূরা আল আম্বিয়া ঃ ১০৭)। শুধু মানবজাতির জন্য নয়, বরং স্রষ্টার সকল সৃষ্টির রহমত হিসেবে রাসূল (স.) প্রেরিত। সেই মহামানবের পরিচয়ে যে মহান আল্লাহ আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তিনিই বলেছেন, ‘মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল’ (সূরা আল ফাতহ, আয়াত: ২৯)। মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘আর মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল ব্যতীত কেউ নন’ (সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৪৪)। সংক্ষেপে এটাই সেই মহামানবের পরিচয়। এবার আলোচনায় দেখা যাক রাসূলের (স.) আদর্শসমূহ। তিনি আরবজাহানে, আদিমনগরী মক্কা শহরে ৫৭০খ্রিষ্টাব্দে ১২ই রবিউল আউয়ালে এই ধরাধামে আগমন করেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি সমাজে ‘আল আমীন’ ও ‘সত্যবাদী’ হিসেবে সর্বাধিক পরিচিত ছিলেন। আজ আমাদের সমাজে ‘আল আমীন’ ‘সত্যবাদী’ উপাধী দেয়ার মত মানুষ খুঁজে পাওয়া অত্যন্ত কঠিন। সভায়-মঞ্চে, কথায়-কাজে, ফোনালাপে সর্বত্রই অসত্যের ব্যবহার। অথচ রাসূল (স.) সত্য কথা সম্পর্কে বলেছেন, ‘সত্য মুক্তি দেয়’ (মুসনাদে আহমাদ, তিরমিযী, ইবনে হিব্বান।) মিথ্যার কুফল বর্ণনা করে তিনি বলেছেন, ‘মিথ্যা সকল পাপের মূল’। অন্যত্র মুনাফিকের মুখোশ উন্মোচন করতে গিয়ে বলেছেন, (মুনাফিকের বৈশিষ্ট সমূহের একটি হলো) ‘যখন সে কথা বলবে তখন মিথ্যা বলবে’ (বুখারী ও মুসলিম)। আমরা কি পারিনা মিথ্যার পরিবর্তে সত্য কথা বলতে? সত্যকথা বলতে বাধাঁ কোথায়? আমরা আমাদের সমাজে যদি সত্যকে গ্রহণ আর মিথ্যাকে বর্জন করি তাহলে সমাজ কি ‘আদর্শ’ হয়ে উঠবে না? আমাদের সমাজ এমন একটা পর্যায়ে রয়েছে যেখানে ভাল, সুন্দর, উত্তম আলোচনা এবং কথাবার্তা খুব কমই শোনা যায়। বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অশ্লীলতাকে মুনাফিকদের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে বলেছেন ‘যখন সে ঝগড়া করে তখন অশ্লীল কথা বলে’ (বুখারী, মুসলীম, শরহে সুন্নাহ)। অন্যত্র প্রিয়নবী বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালা ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে সে যেন অবশ্যই উত্তম কথা বলে অথবা (উত্তম কথা বলতে না পারলে) চুপ থাকে’ (বুখারী ও মুসলীম)। তিনি আরো বলেছেন, ‘উত্তম কথা বলা সদকা সরূপ” (বুখারী ও মুসলীম)। কিন্তু আমরা কি বাস্তবজীবনে আমাদের সমাজে এগুলো খুজেঁ পাই? আমরা কি পারিনা অশ্লীল কথাগুলোকে পরিত্যাগ করে উত্তম কথা বলতে? আমাদের সমাজে ইভটিজিং, ধর্ষণ, চুরি, ডাকাতি, সন্ত্রাসী, গুম, খুন, হত্যা, বড়দের সম্মান না করার প্রবণতা ব্যাপক হারে বেড়েছে। এমন কোন অপরাধ নেই যেগুলো আমাদের সমাজে ঘটছে না। আমাদের ছেলে-মেয়েরা যদি মা-বাবার কথা মান্য করে চলত, আর পারিবারিক শিক্ষা গ্রহণ করত, তাহলে সমাজে এত জঘণ্য ঘটনা আমাদের চোখে পড়ত না। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমার মা-বাবা তোমার জন্য জান্নাত অথবা জাহান্নাম’ (ইবনে মাজাহ, মিশকাতুল মাসাবীহ)। অর্থ্যাৎ তোমরা তোমাদের মা-বাবার কথা-বার্তা মান্য করা ও তাদের সন্তুষ্টির ভিত্তিতে পরকালে নিজের স্থান জান্নাতে করে নিবে, অথবা তাদের অবাধ্য হলে তোমার স্থান হবে জাহান্নাম। আমরা যদি এর বাস্তবতা সমাজে বিরাজমান রাখতে পারতাম, তাহলে আমাদেরকে সন্তানের হাতে পিতা-মাতার খুন হওয়ার মতো ঘটন দেখতে হতো না। আর আমাদের মা-বাবাও যদি সন্তানদেরকে ভাল কাজের আদেশ আর খারাপ কাজের নিষেধ করতেন তাহলে সমাজ এত অধঃপতনের দিকে ধাবিত হত না। বিশ্বনবী বলেছেন, ‘সৎ কাজের আদেশ আর খারাপ কাজের নিষেধ সদকা সরূপ’ (মুসলীম, ইবনে হিব্বান, মুসনাদে সিরাজ)। আমাদের সমাজে এও দেখি অনেক সময় বড়রা ছোটদেরকে স্নেহ, আদর, ভালবাসা দেখায় না। যার ফলে ছোটরাও বড়দেরকে শ্রদ্ধা বা সম্মান দেখায় না। যদি এমন না হত, তাহলে ভাই ভাইকে হত্যা বা বন্ধু বন্ধুকে হত্যার মতো ঘটনা ঘটত না। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ছোটদের স্নেহ করেনা আর বড়দের সম্মান করেনা সে আমার (উম্মতের) দলভূক্ত নয়’ (মুসনাদে আহমাদ, তিরমিযী)। তিনি আরও বলেছেন, ‘যে দয়া করেনা, সে দয়া পায় না’ (বুখারী, মুসলীম, মুসনাদে আহমাদ, আবু দাউদ, তিরমিযী, ইবনে হিব্বান, ইবনে আবু শাইবা)। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন, ‘তোমরা জগৎবাসীর প্রতি দয়া প্রদর্শন করো, আকাশবাসীগণ তোমাদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করবেন’ (তিরমিযী, বায়হাকী)। আমরা কি পারিনা ছোটদেরকে আদর করে সুপথে পরিচালিত করতে, আর ছোটরা বড়দেরকে সম্মান দেখিয়ে তাদের মন জয় করতে? প্রতিবেশীর প্রতি আমাদের দায়িত্ব অনেক। অথচ আমরা প্রতিবেশীর সাথে কেমন আচরণ করি, তা ভেবে দেখি না। আমাদের সমাজ প্রতিবেশীর প্রতি কতটা সচেতন? কতজন লোক বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন আমরা প্রতিবেশীদের সাথে ভাল আচরণ করি? এ সংখ্যা নিতান্তই কম। অথচ হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফরমান, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকলের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন অবশ্যই প্রতিবেশীদের সম্মান করে’ (বুখারী, মুসলীম, মুসনাদে আহমাদ, বায়হাকী, ইবনে হিব্বান, দারেমী]। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেন, ‘যার অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ নয়, সে বেহেশতে প্রবেশ করবেনা’ (মুসলীম, মুসনাদে আহমাদ, শরহে সুন্নাহ)। আসুন, আমরা আমাদের প্রতিবেশীদের সাথে ভাল ব্যবহার করে নিজেরাও ভাল থাকি। আমরা এখন এমন এক সমাজে বসবাস করছি যেখানে হিংসা-বিদ্বেষ, স্বার্থপরতা, লুটপাট, দূর্নীতি, আমানতের খেয়ানত, নেশা করা, গুম, খুন, হত্যা, ঘুষ দেয়া-নেয়া, সুদ খাওয়াসহ সব কিছুই নিত্যকার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার কারণে আমাদের সমাজে বিশৃঙ্খল সৃষ্টি হচ্ছে। এ পরিস্থিতি থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় বিশ্বনবীর আদর্শের মাধ্যমে সমাজকে আদর্শ ও বসবাসের উপযোগী করে তোলা। হিংসা-বিদ্বেষ আমাদের সমাজকে তিলে তিলে ধ্বংসের দিকে ধাবিত করছে। হিংসা-বিদ্বেষের কারণে সর্বত্রই কলহ, বিবাদ-বিসম্বাদ। হিংসাত্মক রাজনীতির কারণে আমাদের দেশ স্বাধীনতার পর থেকে তেমন কোন সুফল বয়ে আনতে পারেনি। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা পরস্পর হিংসা-বিদ্বেষ করোনা’ (মুসলীম, মুসনাদে আহমাদ, বায়হাকী, ইবনে আবু শাইবা)। অন্যত্র তিনি ফরমান, ‘হিংসা ভাল কাজগুলোকে এমনভাবে ভক্ষণ করে, যেভাবে আগুন কাঠকে ভক্ষণ করে’ (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, বায়হাকী, ইবনে আবু শাইবা)। শুধু তাই নয়, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন, ‘তোমরা মানুষের সাথে সর্বোত্তম আচরণ কর’ (মুসনাদে আহমাদ, তিরমিযী)। সর্বোত্তম আচরণ দেখাতে হলে অবশ্যই হিংসা-বিদ্বেষ সর্বাগ্রে পরিত্যাগ করতে হবে। লুটপাটের কথা তো আর বলে শেষ করার মত নয়। সমাজ লুটপাট, চুরি, ডাকাতি, সন্ত্রাসী আর স্বার্থপরতায় নিমজ্জিত। পত্রিকা খুললেই শেয়ার বাজার লুট, ব্যাংক লুট, হত্যা করে লাখ লাখ টাকা লুট, দুর্নীতির খবর দেখা যায়। আর কত? আর কতদূর গেলে আমরা এসব থেকে মুক্তি পাব? এর শেষ সীমা কোথায়? রাসূল পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফরমান, ‘প্রত্যেক মুসলমানের জন্য অন্য মুসলমানের রক্ত (হত্যা করা), সম্পদ ও সম্মান নষ্ট করা হারাম (নিষিদ্ধ)’ (মুসলীম, মুসনাদে আহমাদ, আবু দাউদ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, বায়হাকী)। আমরা আজ সম্পদের লোভে যা ইচ্ছা তাই করছি। এ থেকে পরিত্রাণের উপায় বর্ণনা করে বিশ্বনবী (স.) বলেন, ‘তুমি তোমার অত্যাচারী ও অত্যাচারিত ভাইকে সাহায্য কর। সাহাবায়ে কেরাম বললেন ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমরা তো অত্যাচারিত ব্যাক্তিকে সাহায্য করতে পারব, তবে অত্যাচারীকে কিভাবে সাহায্য করব? তিনি বললেন, তাকে অত্যাচার থেকে বিরত রাখাই হল তার সাহায্য করা’ (বুখারী, মুসনাদে আহমাদ, তিরমিযী, বায়হাকী, ইবনে হিব্বান, দারেমী)। আমরা কি কোন মাজলুমের সাহায্যে এগিয়ে আসছি বা কোন জালিমকে জুলুমী থেকে বিরত রেখেছি বা রাখতে পারছি? অথচ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফরমান, ‘আল্লাহ ততক্ষণ পর্যন্ত কোন বান্দার সাহায্য করতে থাকেন, যতক্ষণ সে তার অন্য ভাইয়ের সাহায্য করতে থাকে’ (মুসলীম, মুসনাদে আহমাদ, আবু দাউদ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, ইবনে হিব্বান, বায়হাকী, ইবনে আবু শাইবা)। আমানতদারীতা আমাদের সমাজে খুঁজে পাওয়া বড় কঠিন। শিক্ষিত সমাজেও পাওয়া বড় দুস্কর। যদি আমানত রক্ষা করা হত তাহলে, পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের মত অসংখ্য ঘটনা আমাদের চোখের সামনে ঘটত না। প্রাথমিক থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সর্বত্রই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে। কেন? আমরা কি আমানত রক্ষা করতে পারিনা? আমাদের পক্ষে আমানত রক্ষা করা কি বড় কঠিন বা দুঃসহসী কাজ? বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমানতের খেয়ানতকে মুনাফিকের নিদর্শন হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘মুনাফিকের বৈশিষ্ট্য হলো, যখন তার কাছে আমানত রাখা হয়, তখন সে তার খেয়ানত করে’ (বুখারী, মুসনাদে আহমাদ, তিরমিযী, নাসায়ী, বায়হাকী, ইবনে হিব্বান, দারে ক্বুতনী, ইবনে আবু শাইবা, শরহে সুন্নাহ)। যদি এই যৎসামান্য কাজটুকু আমরা না করতে পারি, তাহলে কিভাবে আমাদের সমাজকে আদর্শিত করে তুলব? এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়, আমরা যদি প্রত্যেক কাজে বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অনুসরণ-অনুকরণ করতে পারি, তাহলে আমাদের সমাজকে আদর্শরূপে রূপান্তরিত করা সহজ হয়ে যাবে। আমরা মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করি তিনি যেন, আমাদের সমাজ থেকে সকল অনাকাক্সিক্ষত কার্যকলাপ দূর করে আদর্শ ও শান্তির সমাজ বানিয়ে দেন।
ভারত-উপমহাদেশে সিরাতচর্চা, ইতিহাস ও আরবিভাষার সাহিত্য নিয়ে যারা গবেষণামূলক কাজ করেছেন, কর্মগুণে হয়েছেন বিশ্ববরেণ্য—সাইয়েদ সুলাইমান নদবি রহ. তাদের সবচেয়ে অগ্রসারির। ১৮৮৪ সালে ব্রিটিশ-ভারতের বিহারের দিসনাতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বিশ্ববিখ্যাত নদওয়াতে পড়াশোনা করে সেখানেই দীর্ঘ দিন আরবিভাষার পাঠদান করেন এই প্রাজ্ঞ প্রতিভাধর; পাশাপাশি ছিলেন আন-নদওয়া আরবি পত্রিকার সহযোগী সম্পাদক। কর্মজীবনে শিক্ষকতা ও সম্পাদনার পাশাপাশি লিখেছেন অসংখ্য কালজয়ী গ্রন্থ, প্রদান করেছেন পৃথিবীখ্যাত সিরাত-বিষয়ক ভাষণ—খুতুবাতে মাদরাজ নামে যা বিশ্ববিখ্যাত। সিরাতুন নবি (যুগ্ম), সিরাতে আয়েশা, আরদুল কুরআন, খৈয়ামসহ যা-ই তিনি লিখেছেন, সেটিকেই করে তুলেছেন পাঠ-অনিবার্য। এসব আকরগ্রন্থ তাকে এনে দিয়েছে অমরত্বের মর্যাদা। তার লেখা ইতিহাসের পাণ্ডুলিপিগুলো শাস্ত্রীয় সংজ্ঞা পার হয়ে হৃদয়কেও স্পর্শ করে প্রবলভাবে।