রুমকি আনোয়ার জাতস্বভাব কবি। তার প্রতিটি কবিতায় নিজস্ব ব্যক্তিসত্তা শৈল্পিকভাবে ফুটে উঠেছে অত্যন্ত স্পষ্টভাবে। বিষয় নির্বাচনে খামখেয়ালিপনা আছে কবির, কখনো স্বপ্নচূড়ায় পৌঁছার ইচ্ছা, কখনো চাঁদ-জোছনার আক্ষেপ, কখনো বিদ্রোহ-এমন কি ঈশ্বরের বিরুদ্ধেও দ্রোহ তার! ইশ্বরকে তিনি বলেন, ‘ঈশ্বর তুই সবচাইতে বড় পাপী!’ তার কবিতায় মানুষ এসেছে দেবতার মানুষ নয়Ñমাটির মানুষের অবয়ব নিয়ে। তাই তো তিনি নন মুসলিম, নন হিন্দু বা বুদ্দিস্ট। একজন প্রকৃত কবির ধর্মের কোনো লেবাস থাকা ‘পাপ’। সেই পাপকেই তিনি মেনে নিয়েছেন, নিজেকে গড়েছেন তার প্রতিভূ হিসেবে। বাংলা কবিতায় প্রেম একটি বিশেষ জায়গা দখল করে থাকে। রুমকি আনোয়ারের কবিতায় প্রেম এসেছে বর্ণে, ছন্দে, অলঙ্কারেÑজৈবিক চাওয়া-পাওয়া থেকে মুক্ত থেকে কবি সূ² কলমে এঁকেছেন ভালোবাসার কিছু পংক্তিমালা। ‘বকুল ঝরানো পথে শ্বেত-কপোতের মতো ভালোবাসাকে উড়িয়ে দিয়ে আজ প্রদীপের নিচে অন্ধকারে বাস!’-এই আক্ষেপ কবিতাকে ঋজু করেছে। কবিকে করেছে মহিমান্বিত। রুমকি আনোয়ার কেন কোথায় যেন হারিয়ে যেতে চান। এই মাটির এই পৃথিবীর টান তাকে যেন আর আটকে রাখতে পারছে না। তিনি বলেনÑ “আমাকে যেতে দাও বহুদূর অচেনা নক্ষত্রের মাঝে কিংবা রাখালিয়া বাঁশির সুরে- সাতপাঁকে বাঁধা কোনো এক রাজহংসীর পাখা ‘হোয়ার হ্যাজ অল দ্য ফ্লাওয়ারস গন’ গাইতে-গাইতে একসময় মিলিয়ে যাব হাওয়ার মতো।” শব্দচয়ন, রূপক, উপমা-উৎপ্রেক্ষার অলংকারে রুমকি আনোয়ারের এই গ্রন্থের কবিতাগুলো পাঠকের জন্য সত্যিই এক অদ্ভ‚ত সংযোজন। নাসির আহমেদ কাবুল কবি ও গীতিকার