সমাজে প্রতিনিয়ত ছড়িয়ে পড়ছে নানা সংশয়। হাজার বছরের পুরনো নানা মতবাদ হাজির হচ্ছে নতুন মোড়কে। সেক্যুলারধারায় গড়ে-ওঠা প্রজন্ম এ সব সংশয় লুফে নিচ্ছে খুব দ্রুত। কেউ পা বাড়াচ্ছে নাস্তিকতার দিকে, কেউ অস্বীকার করছে হাদিসের প্রামাণ্যতা, কেউ শরিয়ার ব্যাখ্যা করছে হাজার বছরের ইসলামি জ্ঞানশাস্ত্রকে পাশ কাটিয়ে—সব মিলিয়ে এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি! সব সংশয় ও বিভ্রান্তির গতি-প্রকৃতিও এক নয়; কোনোটা আসছে শরিয়ার বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ঘোষণা দিয়ে, কোনোটা আবার শরিয়া পালনের নামে! এ সব বিভ্রান্তি ও সংশয়ের উৎস চেনা না গেলে প্রতিকার নির্ণয় করার কাজটি হয়ে উঠবে দুরূহ! মডার্নিজম ও পোস্ট মডার্নিজমের হাত ধরে গত দেড় শতাব্দী যাবৎ মুসলিমবিশ্বে ছড়ানো হচ্ছে নানা বিভ্রান্তি। কখনও ধর্মকে সরাসরি অস্বীকার করা হচ্ছে, কখনও এর সীমা প্রভাবকে সংকুচিত করা হচ্ছে, কখনও হাজির করা হচ্ছে শরিয়ার বিকৃত ব্যাখ্যা। নসকে উপস্থাপন করা হচ্ছে ভুলভাবে, কিছু ক্ষেত্রে করা হচ্ছে আড়াল। ফলে শরিয়ার যে চিত্র দাঁড়াচ্ছে, তা সালাফে সালেহিনের যুগে ছিল না; এমনকি হয়তো তারা এই চিত্র দেখলেও আঁতকে উঠতেন! ‘আধুনিক কালের বিচ্যুতি ও বিভ্রান্তি’—বইটিতে লেখক ইমরান রাইহান মূলত বর্তমান সময়ের এই সকল ফেতনা ও বিপর্যয়ের উৎস ও ইতিহাস বিবরণ করেছেন। কারণ, যে কোনো ফেতনার প্রকৃত পরিচয় উদ্ধার হয় না এর উৎসে না গেলে, গোড়ায় হাত না দিলে! এর পাশপাশি বইটিতে বিভ্রান্তিগুলোর ব্যবচ্ছেদ ও প্রতিকারও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে সালাফের মানহাজ ও তরিকা মেনে। সব মিলিয়ে এই বিষয়ে বইটি হয়ে উঠেছে চমৎকার ও অতি জরুরি একটি গ্রন্থ।