ভূমিকা : বীমাপেশাজীবীদের জন্য এক অনন্য উপহার জীবনকে সুসংগঠিত ও সুপরিকল্পিতভাবে আগামীর পথে এগিয়ে নিতে ইন্স্যুরেন্স ক্যারিয়ারে আপনাকে স্বাগতম! প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই জন্মগতভাবে নেতৃত্বের গুণাবলি বিদ্যমান আছে। কারও কারও মধ্যে সেই গুণাবলি ও যোগ্যতা সুপ্ত অবস্থায় থাকে। এ জন্য নেতৃত্বের গুণাবলি বিকশিত করে উৎকর্ষ সাধন করা এবং তা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে অনুপ্রাণিত করার জন্য প্রশিক্ষণ ও বই পড়ায় প্রয়োজন রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা একমত পোষণ করেন। মহান আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কুরআন শরিফের সুরা আল-ইসরা (বনি-ইসরাইল) আয়াত ৭০, বর্ণনা করেন, ‘অবশ্যই আমি আদম সন্তানদের সম্মানিত করেছি এবং তাদের পানিতে ও স্থলে প্রতিষ্ঠিত করেছি, তাদের উত্তম জীবনোপকরণ প্রদান করেছি এবং তাদের অনেক সৃষ্টির ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি।’ কর্মীরা সংগঠনের মূল চালিকাশক্তি। একজন সংগঠকের সবচেয়ে বড়ো চ্যালেঞ্জ তার সংগঠনে নিবেদিতপ্রাণ কর্মীবাহিনী গড়ে তোলা। দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মী ছাড়া যোগ্য নেতৃত্ব সৃষ্টি হয় না। যোগ্য নেতৃত্ব ছাড়া সংগঠন গতিশীল হয় না। আর সংগঠন গতিশীল না হলে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না। বর্তমান বিশ্বায়নে চলছে ‘টিম ওর্য়াক’ এর কনসেপ্ট নিয়ে কাজ করা এবং সামনে এগিয়ে চলা; যা ইন্স্যুরেন্স ক্যারিয়ারে বিদ্যমান। দিন শেষে বাহাদুরি দেখানোর মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ পায়না। কেবল জ্ঞানের সঙ্গে বিবেকের জাগ্রত আচরণেই মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের মহিমা প্রকাশ পেতে পারে। উত্তম নেতারা হলেন আগ্রহী পাঠক, আজীবন ছাত্র এবং প্রশিক্ষণ, সম্মেলন ও শিক্ষামূলক কার্যক্রমে থাকে তাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ। এই বইয়ে মোট তিনটি ধাপে আলোচনা করা হয়েছে, প্রথম ধাপে রয়েছে ‘ইন্স্যুরেন্স ক্যারিয়ার’। যারা বীমাপেশায় একেবারে নতুন অথবা এখনও শুরু করেননি ভাবছেন ইন্স্যুরেন্সে ক্যারিয়ার গড়া যায় কিনা তাদের জন্য রয়েছে প্রথম অংশের আলোচনা। এক কথায় বীমাপেশার সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। যারা সিদ্ধান্ত নিয়ে ইন্স্যুরেন্স ক্যারিয়ার শুরু করেছেন তাদের জন্য দ্বিতীয় অংশের আলোচনা। এখানে এমন কিছু কৌশল ও বাস্তব অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরা হয়েছে যা প্রয়োগের মাধ্যমে আপনি আপনার ইন্স্যুরেন্স ক্যারিয়ারে সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হবেন। শুধু তাই নয়, নিরলস প্রচেষ্টা ও সাধনার ফলে আপনিও হবেন একজন শ্রেষ্ঠ বীমা সংগঠক। ইন্স্যুরেন্স ক্যারিয়ারে সংগঠকদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ ‘নেতৃত্ব’ যা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এই বইয়ের তৃতীয় ধাপে। দেশ-বিদেশের বহু লেখকের বই পড়া, প্রশিক্ষণ, সেমিনারে অংশগ্রহণ, দীর্ঘদিন বীমাপেশায় সম্পৃক্ত থাকার ফলে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন ও একান্ত স্ব-উদ্যোগে বীমা বিষয়ে জ্ঞানলাভের উদ্দেশ্যে বীমা খাতের প্রথিতযশা এবং সফল মানুষদের সান্নিধ্যলাভের ফলে ‘শ্রেষ্ঠ বীমা সংগঠক হওয়ার উপায়’ বইটি হবে বলে প্রত্যাশা করছি।
বীমা ব্যক্তিত্ব মো. মাহমুদুল ইসলাম পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন বীমা শিল্পকে। তাঁর মনন, মেধা, শ্রম ও দক্ষতা পুরোপুরি নিয়োগ করেছেন বীমা খাতের উন্নয়নের কাজে। তিনি একাধারে একজন জ্ঞানপিপাসু এবং জ্ঞান বিতরণকারী। তাছাড়াও তিনি একজন পুস্তক রচয়িতা, প্রশিক্ষক এবং অনুষ্ঠান উপস্থাপক। তিনি নিরবচ্ছিন্ন এবং নিরলসভাবে বীমাখাতের উন্নয়ন ও জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির জন্যে কাজ করে যাচ্ছেন। জনাব মাহমুদুল ইসলাম দেশের স্বনামধন্য জীবন বীমা প্রতিষ্ঠানে, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত আছেন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় বিবিএস (অনার্স), এমবিএস (ম্যানেজমেন্ট) বিষয়ে তিনি কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন। এরপর হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ডিপ্লোমা এবং এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। লেখকের জন্ম জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলায়। তিনি এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জনক। ব্যক্তিজীবনে নিরহংকারী, সদা হাস্যজ্জল ও অত্যন্ত সুখী একজন মানুষ।