”মুকুল ফুটেছিল লাল সবুজে”। হ্যাঁ, এম আর আখতার মুকুল ফুটেছিল লাল সবুজের সেই পতাকাটার জন্য ১৯৭১ সালে, যখন সাড়ে সাত কোটি মানুষ (রাজাকার গুলো ছাড়া) বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধে লিপ্ত। ব্রিটিশ বিরোধী সংগ্রাম, ভাষা সংগ্রাম, পাকি-স্বৈরাচার হঠাও সংগ্রাম সেরে মুকুল যেন ফুটলো স্বাধীনতার সংগ্রামে ’চরমপত্র’ দিয়ে। আর সে চরমপত্র ছিলো সেই পাকি-স্বৈরাচার, হানাদার বাহিনী এবং তাদের সহযোগী কুলাঙ্গারদের জন্য। লাল সবুজের মধ্যে দিয়ে মুকুল যখন ফুটতো, রণাঙ্গনে মুক্তিযোদ্ধার হাতের পেশী আরো দৃঢ় হতো, বুকের পরিধি বেড়ে যেতো - আর রাইফেলের ট্রিগার প্রচন্ড শক্তিতে কেঁপে উঠতো তখন। গগনবিদারী জয় বাংলা ধ্বনিতে ’বিচ্ছু’রা ঝাঁপিয়ে পড়তো। অবরুদ্ধ দেশে আর শরণার্থী শিবিরে আশ্রিত মানুষ পেতো স্বাধীনতা অর্জনের সাহস এবং ধৈর্য ধরার ক্ষমতা। সাড়ে সাত কোটি মানুষ যে যেখানেই থাকুক প্রতিদিন রাতে কান পাততো ট্রানজিস্টারে - মুকুল কখন ফুটবে! সেই তো মুকুল ফুটলো - তারপর ঝরে গেলো ২৬ জুন ২০০৪-এ। এখন মুকুল কেবল ইতিহাস আর স্মৃতি। সেই স্মৃতিটুকু ধরে রাখার প্রয়াস ’মুকুল ফুটেছিল লাল সবুজে’। তাঁর প্রয়াণে তাঁর অনেক বন্ধু, সহকর্মী, স্বজন, শুভানুধ্যায়ী এবং ভক্তকূল পৃথিবীজুড়ে নানান পত্রপত্রিকায় তাঁদের ভালোবাসা শ্রদ্ধা এবং অনুভবের কথা জানিয়েছেন বিভিন্ন সময়ে। তাঁদের মাঝে কয়েকজন ইতোমধ্যে এ পৃথিবী থেকে চলেও গেছেন। তাঁদের বিগত আত্মার প্রতি সন্মান জানিয়ে মাগফেরাত কামনা করছি। সে লেখা গুলোর সন্নিবেশে এ গ্রন্থ থেকে জানা যায় তিনি কোন কাননের মুকুল এবং কোন আলোতে প্রাণের প্রদীপ জ্বালিয়ে ধরায় এসেছিলেন। ফুটেছিলেনই বা কেমন করে।