একাত্তরের ৯ মাস জুড়ে শ্যামল বাংলা পরিণত হয়েছিল রক্তাক্ত বাংলায়। পাকবাহিনীর নৃশংসতার শিকার হয়েছিল প্রায় প্রতিটি জনপদ, গণহত্যার কৃষ্ণগহ্বরে হারিয়ে গিয়েছিল অযুত মানুষ। মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির বিজয়ের পর আমরা পেরিয়ে এসেছি পাঁচ দশকের দীর্ঘ পথ। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে অতিক্রান্ত পথের দিকে ফিরে তাকিয়ে আমরা আহরণ করতে চাই সামনে এগোবার শক্তি। আর তাই স্মৃতির উদ্ভাসন ও উপস্থাপন অর্জন করেছে বিশেষ গুরুত্ব। এমনই কাজে এক উল্লেখযোগ্য সংযোজন ভবেরচর গণহত্যার গহন গল্প । একাত্তরের ৭ ডিসেম্বর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন এই গ্রামে পাকবাহিনী যে নৃশংস হত্যা অভিযান পরিচালনা করে আজকের প্রজন্মের সদস্য সাহাদাত পারভেজ তার পূর্বাপর তথ্য আহরণে ব্রতী হয়েছেন। ইতিহাস এবং ঘটনার অনুপুঙ্খ বিবরণের মাধ্যমে তিনি হারিয়ে যাওয়া মানুষদের আবার ফিরিয়ে এনেছেন আমাদের সামনে, মৃত্যুগহ্বর থেকে উঠে-আসা ব্যক্তিদের হদিস করেছেন আর সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার লোকভাষ্য তুলে এনেছেন প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান থেকে। এক জনপদের একদিনের বিষাদগাথা একাত্তরের নয় মাসব্যাপী সারা দেশের বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি মেলে ধরে। আজকের ভূমিতে দাঁড়িয়ে ইতিহাসের এমন উন্মোচন তাই সবিশেষ গুরুত্ববহ।
Shahadat Parvez- খ্যাতিমান আলোকচিত্রী, আলোকচিত্রকলার শিক্ষক ও পরামর্শক। জন্ম ১৯৭৭ সালের ৮ অক্টোবর, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ভবেরচরে। কিশোর বয়স থেকেই লেখালেখির শুরু। এই সময় ছবি তোলার নেশাও পেয়ে বসে। একসময় মনে হয়, আলোকচিত্রই উপযুক্ত পেশা। পাঠশালাÑদ্য সাউথ এশিয়ান মিডিয়া একাডেমি থেকে ফটোসাংবাদিকতা বিষয়ে পড়াশোনা। প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ চিত্রসাংবাদিক। পেয়েছেন আশাহি সিম্বুন স্বর্ণপদক, এশিয়া প্রেস ফটো স্বর্ণপদক, এশিয়া প্যাসিফিক কালচারাল সেন্টার ফর ইউনেসকো পদকসহ বেশ কিছু আন্তর্জাতিক পুরস্কার। কবিতার বই যে ছবি দিয়ে আঁকা প্রকাশিত হয় ১৯৯৫ সালে, কলেজে পড়ার সময়। ২০১২ সালে প্রকাশিত হয় ফটো অ্যালবাম শতবর্ষের পথিক। ২০১৫ সালে প্রকাশিত হয় গবেষণধর্মী গ্রন্থ শেকড়ের খোঁজে।